লালন হত্যাকাণ্ডের তদন্তে এবার সিআইডির নজরে রামপুরহাটের পান্থনিবাস। তিন তলা পান্থনিবাস খতিয়ে দেখবেন সিআইডি আধিকারিকরার। এখাবেই ছিল সিবিআই-এর গেস্টহাউট।
বগটুই গণহত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে র পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি। এই ঘটনার তদন্তে সিআইডির নজরে রামপুরহাটের পান্থশ্রী গেস্টহাউস। কারণ এই গেস্টহাসের শৌচাগারেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল লালন শেখকে। সিবিআই সূত্রের খবর লালন শেখ গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পান্থশ্রী গেস্টহাউসেই অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস করেছিল সিবিআই। কারণ হাইকোর্টের নির্দেশ বগটুই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় এসেন্জি। যদিও লালন শেখের মৃত্যুর পর অস্থায়ী ক্যাম্প অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সবকিছু নিয়ে আসা হয়েছে কলতাকায়।
তিন তলা পান্থনিবাস হল পান্থশ্রী। ঝাঁ চকচকে এই গেস্টহাউসে এখনও মোতায়েন রয়েছে প্রচুর পুলিশ। একটা সময় সিবিআই কর্তাদের গাড়ির আওয়াজে সরমগরম ছিল। কিন্তু দিন কয়েক হল কিছুটা নিশ্চুপ। তারণ লালন শেখের মৃত্যুর পরই তাঁর পরিবারের সদস্যরা এখানে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল। তারপর থেকেই সিবিআই-এর দাপট কিছুটা কমেছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
সিআইডি সূত্রের খবর অস্থায়ী ক্যাম্প অফিসে যাবে দফতরের কর্মকর্তারা। পুরো ক্যাম্প অফিসই খতিয়ে দেখবে। যদিও ইতিমধ্যেই গেস্ট হাউসের ছবি তোলা হয়েছে। একটি ফরেন্সিক দল পরীক্ষা করেছে। সিআইডি অধিকারিকরা লালন শেখের স্ত্রী রেশমা বিবি ও পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে কথা বলবে। সোমবার তদন্তের জন্য সিবিআই আধিকারিকরা লালনকে তার বাড়িতে নিয়েগিয়েছিল। সেই সময় সেখানে যারা যারা উপস্থিত ছিল তাদের প্রত্যেকের সঙ্গেই সিআইডি আধিকারিকরাও কথা বলবে বলেও জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিআইডি কর্তা। অন্যদিকে লালন শেখ যে বাড়িতে বোমা ছুঁড়েছিল তা ইতিমধ্যেই সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। সিবিআই বগটুই হত্যাকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে। যারমধ্যে অন্যতম ছিল লালন শেখ। কারণ লালন ছিল ভাদু শেখের ছায়াসঙ্গী। ভাদু শেখকে হত্যার দিনেও সে ছিল ভাদু শেখের সঙ্গে। ভাদু শেখের হত্যার প্রতিশোধ নিতেই রাতের অন্ধকারে বগটুইয়ের একাধিক বাড়িতে দরজা বন্ধ করে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
অন্যদিকে সিবিআই আধিকারিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, 'আমরা তদন্তে জড়িত আমাদের অফিসারদের স্থানান্তরিত করেছি। বিষয়টি সম্পর্কিত সমস্ত নথি ও ফাইল কলকাতা অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।' তিনি আরও জানিয়েছেন, সিবিআই অফিসারদের সুরক্ষা আর নথি সংরক্ষণের জন্যই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন লালন শেখের মৃত্যুর পর স্থানীয়দের বিক্ষোভের কারণে সিবিআই অফিসাররা সেখানে আর নিরাপত্তা বোধ করছিল না। তাই তাদের দ্রুত সরিয়ে আনা হয়েছে।
অন্যদিকে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। জেলা পুলিশের কাথ থেকে মৃত্যু সংক্রান্ত ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। পাশাপাশি লালন শেখের মৃত্যুর জন্য সিআইজি ডিআইজি ও একজন এসপি-সহ সাত জন সিবিআই অফিসারের বিরুদ্ধে মামলাও করেছে বলে সূত্রের খবর। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পাশাপাশি হত্যার অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
সিবিআই হেফাজতে লালন শেখের মৃত্যুর নিন্দা মমতার, কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে তদন্তে সিআইডি
৪০ লক্ষ টাকা হাতাতে PhD ছাত্রকে খুন, দেহ টুকরো করে তিনটি জায়গায় ছড়িয়ে দিল বাড়ির মালিক