কেন বারবার দুর্নীতিকাণ্ডে উঠে আসছে কামারহাটি-কানেকশন? প্রশ্নের জবাবে নিজের স্বভাবসিদ্ধ কায়দায় মুখ খুলেছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়, হৈমন্তী গঙ্গোপাধ্য়ায়, সোমা চক্রবর্তীর পর এবার নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে উঠে আসছে শ্বেতা চক্রবর্তীর নাম। এবার অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে মিল সামনে আসছে শ্বেতা চক্রবর্তীর। এই প্রসঙ্গে উঠে এসেছে দু'জনের কামারহাটি-কানেকশনও । বারবার উঠে আসা রহস্যময়ীদের ঠিকানা মদন মিত্রের একালা কামারহাটিই। কেন বার বার বেলঘরিয়া এলাকার নাম জড়াচ্ছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে। নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রথম গ্রেফতার হওয়া পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায় ছিলেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা। তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল টাকার পাহাড় ও গয়নাগাটি। এই মুহূর্তে জেলে রয়েছেন অর্পিতা। অন্যদিকে নিয়োগ দুর্নীতিতে সদ্য নাম জড়ানো শ্বেতা চক্রবর্তীর ঠিকানাও বেলঘরিয়া। কামারহাটি পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার তিনি। তাঁর বিরুদ্ধেও উঠেছে ধৃত অয়ন শীলের সঙ্গে যোগের অভিযোগ। তবে তাঁর সঙ্গে এখনও কোনও তদন্তকারী সংস্থা যোগাযোগ করেনি বলেই জানাচ্ছেন শ্বেতা। কেন বারবার দুর্নীতিকাণ্ডে উঠে আসছে কামারহাটি-কানেকশন? প্রশ্নের জবাবে নিজের স্বভাবসিদ্ধ কায়দায় মুখ খুলেছেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র।
নিজস্ব ভঙ্গিতে অর্পিতার সঙ্গে শ্বেতার তুলনা টানলেন মদন মিত্র। কামারহাটি-কানেকশনের বিষয় তাঁর স্পষ্ট জবাব,'সব সুন্দরী, লাস্যময়ীদের যদি বেলঘরিয়া ভালো লাগে তো ম্যায় কিয়া করু?' তিনি আরও বলেন,'বাগান তো অনেক হয় বৃন্দাবন কটা হয়?' পাশাপাশি মদন মিত্র বলেছেন,'ওঁ কি অপরাধ করেছে তা আমি জানিনা তবে সে সুন্দরি, অর্পিতাও সুন্দরী।' কিন্তু দুর্নীতির আবহে কেন বারবার উঠে আসছে মহিলা যোগ? উত্তরে কামারহাটির বিধায়ক সাহিত্যের উদাহরণ দিয়ে বললেন,'সুন্দরী, লাস্যময়ী না হলে শাঁখ ও বাজবে না, সৌন্দর্যও হবে না, পাপও সংগঠিত হবে না।'
অন্যদিকে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি সাহায্য করবেন শ্বেতা। এমনটাই জানালেন শ্বেতা চক্রবর্তীর বাবা অরুণ চক্রবর্তী। বুধবার তরুণীর নৈহাটির বাড়িতে তাঁর খোঁজ না মেলেনি। মেয়ের প্রসঙ্গে শ্বেতার বাবা জানালেন, শ্বেতা চক্রবর্তী বাড়িতে নেই। তবে তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন সে। যোগাযোগ রাখছেন ইডির সঙ্গেও। প্রয়োজনে শ্বেতা ইডিকে সাহায্য করবেন বলেও জানিয়েছেন শ্বেতা চক্রবর্তীর বাবা অরুণ চক্রবর্তী।
জানা যাচ্ছে অয়ন শীলের হাত ধরেই টলিউডে পা রাখেন শ্বেতা। অয়নের প্রোডাকশন হাউসের প্রোযোজনায় নির্মিত ছবি 'কবাডি কবাডি'তেই ডেবিউ করেছিলেন তিনি। ওই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন ঋত্বিক চক্রবর্তী, সোহিনী সরকার, অর্জুন চক্রবর্তীর মতো অভিনেতারা। ছবির পরিচালনায় ছিলেন কৌশিক গাঙ্গুলী। যদিও ছবির কাজ শুরু হলেও শেষ হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। বড় পর্দায় দেখা না গেলেও বহু শর্ট ফিল্ম ও মডেলিং প্রজেক্টে দেখা গিয়েছে শ্বেতাকে। অয়ন শীলের সল্ট লেকের ফ্ল্যাট থেকে মিলেছে 'কাবাড্ডি কাবাড্ডি' ছবি-সংক্রান্ত কাগজপত্রও। এই সিনেমায় কে কত টাকা পারিশ্রমিক পেত সেই সংক্রান্ত নথিও মিলেছে। প্রসঙ্গত আগেই জানা গিয়েছে অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে শ্বেতার অ্যাকাউন্টে ২৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। অয়নের ৩২টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মধ্যে একটি রয়েছে শ্বেতারও। শুধু তাই নয় শ্বেতার নামে রয়েছে একটি হন্ডা সিটি গাড়িও। ইডির সন্দেহ এই বিলাসবহুল গাড়ির টাকা আসে অয়নের অ্যাকাউন্ট থেকে শ্বেতার অ্যাকাউন্টে ট্রেনসফার হওয়া ২৫ লাখ টাকা থেকেই।
আরও পড়ুন -
তিহার-বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের সামনে আশার আলো দিল্লি হাইকোর্ট, আজ সেখানেই জামিন মামলার শুনানি
প্রয়োজনে ইডিকে সাহায্য করবেন শ্বেতা! মন্তব্য অয়ন শীল ঘনিষ্ঠ শ্বেতা চক্রবর্তীর বাবার
টলিউডেও টাকা ঢেলেছিলেন অয়ন শীল, তাঁর প্রোডাকশন হাউসের সিনেমাতেই ডেবিউ শ্বেতার