স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, গৌড়দা এলাকাটি এমনকিতেই বেশ গণ্ডগোলপ্রবণ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই গোলাগুলি শুরু হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
অন্ধকার রাত্রে গোলাগুলি, দক্ষিণ ২৪ পরগণার বারুইপুরে প্রবল আতঙ্ক। গুলি করে এক যুবককে খুন করে দিল দুষ্কৃতীরা। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বুধবার সকাল থেকে উত্তপ্ত গোটা বারুইপুর এলাকা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত প্রায় দুটো নাগাদ এলাকায় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বারুইপুর পূর্ব বিধানসভার অন্তর্গত নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার গৌড়দা গ্রামে। জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির নাম সাজ্জাত মণ্ডল, তাঁর বয়স ৪৮-এর কাছাকাছি এবং তিনি নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌড়দা এলাকারই বাসিন্দা। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও এক যুবক। তাঁর নাম শারফুদ্দিন লস্কর। তিনি নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের হিমচি এলাকার বাসিন্দা। ঘটনায় মূল অভিযুক্ত কে, তা জানতে পেরে সেই ব্যক্তির বাড়িতে বুধবার সকালে আগুন লাগিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে এলাকায় উপস্থিত হন স্থানীয় থানার পুলিশ কর্তারা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে উত্তপ্ত পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
আঞ্চলিক বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সাজ্জাত মণ্ডল নামের ওই ব্যক্তি তাঁর বন্ধু শারফুদ্দিনের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্য়াবেলা এলাকায় আয়োজিত একটি মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফিরে আসতে তাঁর বেশ দেরি হচ্ছিল। ফলে, পরিবারের সদস্যরা রাতেই তাঁকে ফোন করেন। ফোনে তিনি জানিয়েছিলেন যে, তাঁর বাড়ি ফিরতে দেরি হবে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাত দুটো নাগাদ তাঁদের কাছে একটি ফোন কল আসে, তাতে জানানো হয় যে সাজ্জাত গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে, তিনি একা নন, তাঁর সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও একজন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তৎক্ষণাৎ কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সাজ্জাতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে, শারফুদ্দিনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বারুইপুর থেকে কলকাতার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঘটনা জানাজানি হতেই বুধবার সকাল থেকে গ্রাম জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্ত হিসাবে বলাই নামের একজন ব্যক্তির নাম জানতে পারেন গ্রামবাসিরা। এই বলাইয়ের বাড়িতে বুধবার সকালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় উত্তেজিত জনতা, তাঁর বাড়িতে আগুনও লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার পর থেকেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গা ঢাকা দেয় মূল অভিযুক্ত। তবে, ঘটনার নেপথ্যে আসলে কোন কারণ রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। রাজনৈতিক রেষারেষি, নাকি ব্যক্তিগত কোনও শত্রুতার জেরে গুলি চালানো হল, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে তদন্তকারীদের। এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। এলাকা থেকে বেশ কয়েকটি গুলির খোলও উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, গৌড়দা এলাকাটি এমনকিতেই বেশ গণ্ডগোলপ্রবণ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই গোলাগুলি শুরু হয়ে যাওয়ার ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষিপ্ত হয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
আরও পড়ুন-
গণনা চলছে দিল্লি পুর কর্পোরেশনের ভোট, বিজেপিকে জোরদার টক্কর দিচ্ছে কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি
‘মাছ রান্না করে বাঙালিদের খাওয়াবেন?’ মন্তব্য করেই বিপাকে পরেশ রাওয়াল, মহম্মদ সেলিমের অভিযোগে তালতলা থানায় তলব
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গে ফের উত্তুরে হাওয়ার আমেজ, মেঘমুক্ত আকাশে সব জেলাতেই পারদ নিম্নমুখী