সংক্ষিপ্ত
সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেখা গিয়েছে বিরোধী কমেন্টের ঝড়। এবার আইনগত ভাবে সেই ‘বাঙালি বিরোধীতার’ বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামলেন বামপন্থী নেতা মহম্মদ সেলিম।
‘বাঙালি বলতে বেআইনি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের কথা বোঝাতে চেয়েছি,’ ভাবাবেগে তীব্র আঘাতের পর ছোট্ট ক্ষমায় কাজ হল না। তীব্র নিন্দার পর অবশেষে বলি তারকা পরেশ রাওয়ালকে সমন পাঠাল কলকাতা পুলিশ। গুজরাতে নির্বাচনের প্রচারে গিয়ে বিজেপির প্রচার-মঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে মাছ খাওয়ার সঙ্গে বাঙালিদের জুড়ে দিয়ে যে নিন্দাজনক মন্তব্যটি তিনি করেন, তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন অনেক বাঙালিই, সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেখা গিয়েছে কমেন্টের ঝড়। কিন্তু এবার আরও বহু বাঙালির সাথে সাথে আইনগত ভাবে সেই লড়াইয়ের ব্যাটন তুলে নিলেন বামপন্থী নেতা মহম্মদ সেলিম।
ভোটের প্রচারে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে এ বার কলকাতা পুলিশ সরাসরি তলব করল বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ তথা তারকা প্রচারক পরেশ রাওয়ালকে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাঁকে হাজির হতে বলে সমন পাঠানো হয়েছে কলকাতার তালতলা থানা থেকে। আগামী ১২ ডিসেম্বর তাঁকে স্বয়ং থানায় আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
গুজরাত ভোটের আগে রাজ্য জুড়ে বিজেপির প্রচারে রাখা হয়েছিল একের পর এক চমক। তারকা প্রচারকদের তালিকায় ছিলেন অভিনেতা পরেশ রাওয়ালও। সেই উদ্দেশ্যে তিনি একটি মঞ্চ থেকে বলে বসেন, “মুদ্রাস্ফীতি সহ্য করতে পারবেন গুজরাতের মানুষ। কিন্তু পাশের বাড়িতে যদি রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু কিংবা বাংলাদেশিরা এসে ওঠেন, তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের জন্য মাছ ভাজবেন?” এই মন্তব্যের পরেই বাড়তে শুরু করে ক্ষোভের উত্তাপ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “মোহনবাগানের চিংড়ি আর ইস্টবেঙ্গলের ইলিশ, মাছ নিয়ে বলতে এলে করে দেব পালিশ।”
এছাড়া বহু বাঙালি শিল্পীরাও প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নিন্দা করেন পরেশের এই বক্তব্যের। অবস্থা সামাল দিতে তড়িঘড়ি সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চেয়ে নেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। তিনি লেখেন, “মাছের কথাটি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়। গুজরাতের মানুষও মাছ রান্না করে খান। বাঙালি জাতিকে অপমান করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। ‘বাঙালি’ বলতে বেআইনি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের কথা বোঝাতে চেয়েছি। তবে আমার কথায় কারোওর ভাবাবেগে আঘাত লেগে থাকলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।”
কিন্তু, এই ক্ষমা যে কার্যকরী হয়নি, তা বোঝা যাচ্ছে কলকাতা পুলিশের সমনের পর। পরেশের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় অভিযোগ জমা পড়ে। শুক্রবার, তালতলা থানায় পরেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মহম্মদ সেলিম। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই আগামী ১২ ডিসেম্বর বিজেপি নেতাকে তলব করেছে তালতলা থানা। সে দিন তাঁকে থানায় আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে এখনও অবদি পরেশ রাওয়ালের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বিজেপি দলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে একেবারেই মুখ খোলেননি কোনও নেতা বা মন্ত্রী।
আরও পড়ুন-
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গে ফের উত্তুরে হাওয়ার আমেজ, মেঘমুক্ত আকাশে সব জেলাতেই পারদ নিম্নমুখী
শাসকের স্বৈরাচারিতা কেড়ে নিল স্কুল পড়ুয়াদের প্রাণ, উত্তর কোরিয়ায় বিদেশী নাটক দেখার ‘অপরাধে’ ছাত্রদের প্রকাশ্যে গুলি
‘ভগবান রাম’-এর নীতি মানেই না বিজেপি এবং আরএসএস, কেন্দ্র সরকারের হিন্দুত্ববাদী স্লোগান নিয়ে কটাক্ষ রাহুল গান্ধির