গত দু'দিন ধরে ক্রমাগত মোবাইলে অশ্লীল মেসেজ আসছে বলে দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এবার এই বিষয় অভিযোগ জানাতে রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন বিভাগের দ্বারস্থ হন তিনি।
হোয়াটসঅ্যাপে 'কুরুচিকর অশ্লিল মেসেজ, এবার রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন বিভাগে অভিযোগ জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গোটা ঘটনার জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন শুভেন্দু। পুলিশ এই বিষয় ব্যবস্থা না নিলে যে তিনি উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন সেই বিষয় পরোক্ষভাবে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এই নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্টে শুভেন্দু লিখেছেন,'আমার বিশ্বাস পুলিশই এই বিষয় সঠিক ব্যবস্থা নেবে। আমাকে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে না।' পাশাপাশি তিনি আরও লেখেন,'বাংলার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সাংসদ।'
অন্যদিকে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ঘাসফুল শিবির। এই প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা বিজেপির গোষ্ঠীদন্দ্বকে দায়ী করেছে। তিনি স্পষ্টই জানিয়েছেন,'ওঁর মনে হয়েছে তাই করেছেন। উনি যাকে তাকে গালাগালি দিয়ে বেড়ান, সেটাও তো খারাপ কাজ। তবে যদি কেউ ওঁকে খারাপ কথা লিখে থাকে, তবে তা ঠিক নয়।' পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরের গোষ্ঠীকোন্দোলকেই এই ঘটনার জন্য দায়ী করেছেন কুণাল ঘোষ। তাঁর বক্তন্য,'শুভেন্দু খুব সন্তর্পণে ফোন ব্যবহার করেন, যাকে তাঁকে নম্বর দেন না। এই সুযোগে বিজেপিরই কেউ ওঁকে গালাগালি করে দিল কী না সেটাও দেখতে হবে।'
গত দু'দিন ধরে ক্রমাগত মোবাইলে অশ্লীল মেসেজ আসছে বলে দাবি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। এবার এই বিষয় অভিযোগ জানাতে রাজ্য পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন বিভাগের দ্বারস্থ হন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে তিনি লিখেছেন, 'তোলাবাজ ভাইপোর লুম্পেন র্যাকেট সক্রিয় হয়ে আমার ব্যক্তিগত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে কয়েক শত কুরুচিকর অশ্লীল মন্তব্য ও ব্যঙ্গচিত্র পাঠিয়েছিল গত দু’দিন ধরে। ভাইপো শুধু দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, এবার বাংলার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সাংসদ।'
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে চাপে পড়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। বিরসা মুণ্ডার জন্মদিন পালনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ঝাড়গ্রাম সফরে মুখ্যমন্ত্রী। এরই মধ্যে রাজ্য রাজনীতিতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলাদের নিয়ে একের পর এক কুকথার জেরে সরগরম জঙ্গলমহলের রাজনৈতিক আবহও। এবার পদ্ম শিবিরে চাপ বাড়াতে শুভেন্দু অধিকারীকে তুরুপেরতাস করল তৃণমূল। উল্লেখ্য রাষ্ট্রপতি প্রসঙ্গে অখিল গিরির মন্তব্যের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সোচ্চার হয়েছিলেন তিনিই। এবার বিরোধী দলনেতার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে আনল শাসকদল। ভিডিও-এ শুভেন্দু বলছেন, 'এই যে দেবনাথ হাঁসদা ও বিরবাহা হাঁসদা, যারা এখানে বসে আছে, এরা শিশু। এগুলো আমার জুতার তলায় থাকে।'(এই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি এশিয়া নেট নিউজ বাংলা) শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্য ঘিরে শোরগোল শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নাম না করে বললেন ,'বিরবাহা আদিবাসী পরিবারের মেয়ে। সাংস্কৃতিক পরিবারের মেয়ে। তাকে জুতোর তলায় রেখে দেওয়ার মত কথা কুরুচিকর নয়?' পাশাপাশি অখিল গিরি প্রসঙ্গে শুভেন্দুর মন্তব্যের নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কাউকে দাঁড়কাকের মতো দেখতে বলাটা কি রুচিকর নয়?'
শুধু মুখ্যমন্ত্রী নয় শুভেন্দুর সমালোচনায় একাধিক আদিবাসী তৃণমূল নেতা-নেত্রী। খোদ বিরবাহা সরেণ বলেছেন 'বিজেপি সব সময়ই আদিবাসী মানুষকে ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে।' দলের বিধায়ক সুকুমার মাহাতো বলেছেন, 'বিরবাহা সম্পর্কে শুভেন্দুর মন্তব্যের নিন্দা করি।' কটাক্ষ করেছেন বর্ধমানের তৃণমূল নেতা দেবু টুডুও। নিজের সাফাই হিসেবে শুভেন্দু অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি কাউকে কুরুচিকর মন্তব্য করেননি। স্থানীয় ভাষায় কিছু কথা বলেছেন মাত্র। কিন্তু গ্রামের কথা দক্ষিণ কলকাতার ফ্ল্যাটের নেতারা বুঝবেন না বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন -
এবার ইডির হাতে গ্রেফতার অনুব্রত, সায়গল, সুকন্যার পর কি এবার দিল্লির পথে কেষ্ট?
পার্থ-ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে ছিল দিলীপ ঘোষের দলিল, এবার সেই দলিলে পাওয়া গেল আরও জোরালো তথ্য