ভালোবাসা দিবসের দিনেই দ্বিতীয় স্ত্রী সোনার সঙ্গে ছবি পোস্ট করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। তারপরেই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন তাঁর প্রথমা স্ত্রী সুজাতা।
সদ্য ভ্যালেনটাইনস ডে (Valentine's Day) দিনে নিজের দ্বিতীয় বিয়ের কথা প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি (BJP) সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল (Sujata Mondal) তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরেই বৈবাহিক সম্পর্কে ছেদ পড়তে থাকে তাঁর। প্রকাশ্যেই সংবাদ মাধ্যমের সামনে স্ত্রীকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন বিজেপি সাংসদ। সুজাতা ফেরেননি। এরপর সৌমিত্র দ্বিতীয় বিয়ে করেন। কিন্তু, বিয়ের খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন সুজাতা। তাঁর দাবি, বৈবাহিক সম্পর্ক থাকাকালীনই পারমিতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সৌমিত্র খাঁ।
প্রাক্তন স্বামীর (Soumrita Khan) দ্বিতীয় বিয়ের কথা শুনেই মন্তব্য সুজাতা মণ্ডল মন্তব্য করেন, “আমি যে সত্যি কথা বলেছিলাম সেটাই প্রমাণ হল।” তাঁর দাবি, সাংসদ হিসেবে কোনও দায়িত্বই পালন করেন না সৌমিত্র। তিনি সারাক্ষণ মদ্যপান এবং নারীসঙ্গে ডুবে থাকেন।
প্রথমে কলেজ-জীবনের প্রেমিকা সুজাতা মণ্ডলকে বিয়ে করেছিলেন সৌমিত্র খাঁ। ২০১৯-র লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ আইনি বাধার কারণে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বিষ্ণুপুরে ঢুকতে পারতেন না। সেই সময় তাঁর হয়ে প্রচার করেছিলেন তৎকালীন স্ত্রী সুজাতাই। জয়ের পর তার কৃতিত্ব সুজাতাকেই দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। কিন্তু এরপর তাঁর জীবনযাপনের জন্যেই দুজনের সম্পর্ক ক্রমশ তিক্ত হয়। পরে সুজাতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে তাঁদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। সেই সময়ই সুজাতা অভিযোগ করেছিলেন একাধিক নারীসঙ্গ করেন সৌমিত্র। সেই সময়ই শিলিগুড়ির এই মহিলার কথা উল্লেখ করেন সৌমিত্রর তৎকালীন স্ত্রী। অভিযোগ ছিল, দলীয় কাজের নাম করে পারমিতা নামের এই মহিলার সঙ্গে থাকেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ।
সুজাতার (Sujata Mandal) সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদের পরেই পেশায় আইনজীবী পারমিতা রায় চৌধুরীকে বিয়ে করেছেন সৌমিত্র খাঁ। ইনি শিলিগুড়ির বাসিন্দা। কিন্তু এতদিন সেই কথা প্রকাশ্যে আনেননি তিনি। স্ত্রীর সঙ্গে সোশ্যাল সাইটে ছবি প্রকাশ করে লেখেন, ‘শুভ জন্মদিন আমার স্ত্রী সোনা’। এর পরই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। সুজাতার অভিযোগ, পারমিতার প্রথম স্বামী বেঁচে থাকার সময়ই সৌমিত্র সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা। তখন সুজাতা সৌমিত্রর স্ত্রী। এর পরেই বিস্ফোরক অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদের প্রথম স্ত্রী। তাঁর কথায়, সৌমিত্র সাংসদ হওয়ার ৫ মাসের মধ্যেই গাড়ি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পারমিতার প্রথম স্বামীর। এর মধ্যে কী যোগসূত্র রয়েছে? প্রশ্ন তুলে জল্পনা উস্কে দেন সুজাতা।
তবে, সংবাদমাধ্যমকে অবশ্য পারমিতা জানান, তাঁর প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পরে সৌমিত্রর সঙ্গে তাঁর পরিচয়। তখন তাঁর সন্তান ছোটো। দুই পরিবারের সম্মতিতেই তাঁরা বিয়ে করেছেন। তবে, স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট ছাড়া এখনও বিয়ে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি বিষ্ণুপুরের সাংসদ। কিন্তু প্রাক্তন স্বামীর হয়ে বিষ্ণুপুরের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সুজাতা। তাঁর কথায়, সেখান মানুষের পাশে থাকেন না সৌমিত্র। এই বিজেপি সাংসদের হয়েই তিনি মানুষে আশীর্বাদ চেয়েছিলেন। শুধু তৃণমূল নয়, বিজেপি এমনকী নিজের সাংসদ এলাকার মানুষের পিঠে ছুরি মেরেছেন সৌমিত্র। শুধু নারী-সুরা-বিলাসে সময় কাটান বিজেপি সাংসদ। সেই সবের প্রতিবাদ করার জন্যেই তাঁর উপর অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ সুজাতার। তাঁর দাবি, প্রাণ ভয়েই রাত তিনটের সময় বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। সুজাতার কথায়, আমি যে সত্যি কথা বলেছিলাম, সে কথা এখন প্রমাণ হয়ে গেল।