তিন দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের। অনুব্রত মুখোমুখি বসিয়ে দিল্লিতে জেরা করা হতে পারে সুকন্যাকে।
তিন দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে। দিল্লির রাউন অ্যাভিনিউ আদালতের রায় অনুযায়ী আগামী শনিবার পর্যন্ত সুকন্যা মণ্ডলকে থাকতে হবে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের হেফাজতেই। তবে এই তিন দিন নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সুকন্যা আইনজীবীর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন, এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে দিল্লির রাউস কোর্ট আদালত। গরুপাচারকাণ্ড বুধবার দিল্লিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল সুকন্যাকে।
ইডি সূত্রের খবর, গরু পাচারকাণ্ডে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে সুকন্যাকে তাঁর বাবা অনুব্রতর মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে। কারণ সুনক্যার নামেও রয়েছে হিসেব বহির্ভূত সম্পত্তি। যার কোনমও সঠিক ব্যাখ্যা এখনও বাবা ও মেয়ে দিতে পারেননি তদন্তকারী সংস্থাকে। বুধবারই দিল্লিতে দীর্ঘ সময় জেরার পরে অনুব্রতর কন্যা সুকন্যাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে তদন্তকারীরা।
বুধবারই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এদিন আদালতে পেশ করা হয় সুকন্যাকে। তিন দিনের হেফাজত চেয়েছিল ইডি। ইডির আবেদন মঞ্জুর করে দিল্লির আদালত। তবে এর আগেও একাধিকবার সুকন্যাকে এই মামলায় জেরা করেছে ইডি। একাধিকবার হাজিরা এড়িয়েছেন সুকন্যাও।
গরু পাচার-কাণ্ডে এর আগে গ্রেফতার করা হয়েছে বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। গত সাড়ে আট মাস ধরে জেলে রয়েছেন তিনি। বর্তমানে তিহার জেলে রয়েছেন অনুব্রত। কারণ তদন্তকারীরা তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে জেরা করতে চেয়েছিল। সেইমতই দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কড়া নিরাপত্তায়। তারপর থেকেই তিহারজেলে বন্দি তিনি।
সুকন্যার নামে বিশাল সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে তদন্তকারীরা। বোলপুরে তাঁর নামে প্রচুর জমি রয়েছে। ব্যাঙ্কে রয়েছে ১৬ কোটি টাকার ফিক্সডিপোজিট। এই সম্পত্তির কোনও হিসেব নেই বলেও দাবি করছে তদন্তকারীরা। এই টাকা কোথা থেকে এল তা খতিয়ে দেখতেই কেন্দ্রীয় সংস্থা বাবা ও মেয়েকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে পারে বলে সূত্রের খবর।
অনুব্রত মণ্ডলে তৃণমূলের দাপুটে নেতা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যান্ত ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত। গরুপাচারকাণ্ড ও আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ইডি আর সিবিআই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে । দুটে কেন্দ্রীয় সংস্থাই তাঁকে গ্রেফতার করেছে। এই অবস্থায় তৃণমূলের নেত্রীর আস্থা অটুট রয়েছে কেষ্টর ওপর। সেই কারণে তাঁর অনুপস্থিতিতেও তাঁকে বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়নি। যদিও তৃণমূলের এই আচরণ তাঁকে প্রভাবশালী তকমা দিয়েছে।
গরুপাচার-কাণ্ডে দিল্লির রাউস অ্যাভেনেউ কোর্ট অনুব্রতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তারপর থেকেই তিহার জেলে ঠাঁই হয়েছে তৃণমূল নেতার। সূত্রের খবর সেখানে তাঁর জন্য বিশেষ কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি। বাকি কয়েদিদের মতই রাখা হয়েছে। তবে আদালতের নির্দেশে চিকিৎসা আর ওষুধের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্রের খবর তিহার জেলে অনুব্রতর সঙ্গে থাকা কোনও ওষুধ নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি। সেখানেই চিকিৎসকদের মাধ্যমে প্রেসকিপশন দেখে তাঁর জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা করেছে জেল কর্তৃপক্ষ। জেল সূত্রের খবর অনুব্রতকে রাখা হয়েছে জেলের ৭ নম্বর সেলে। কারণ এখানেই রাখা হয় টাকা পাচার-কাণ্ডে ধৃতদের। এই সেলেই রয়েছে গরুপাচার-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত ও অনুব্রত মণ্ডলের সহযোগী সেহগল হোসেন। তবে প্রথম দিন অর্থাৎ মঙ্গলবার রাতে মশার উৎপাতে ঘুম হয়নি বলেও জেল কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেছেন দাপুটে তৃণমূল নেতা।