আইএসএফ-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বাম কংগ্রেস আর বিজেপি। সুখেন্দু শেখর রায়ের এই অভিযোগের পরই পাল্টা আক্রমণ করেন রাহুল সিনহা।
ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট নেতা নওশাদ সিদ্দিকীর মুক্তির দাবিতে বাম, কংগ্রেসের পাশাপাশি সরব হয়েছে বিজেপিও। তাতেই রীতিমত ক্ষুব্দ তৃণমূল কংগ্রেস। ঘাসফুল শিবিরের অভিযোগ রাজ্যে অশান্তি ছড়ানোর জন্য বাম, ডান, নকশাল গোষ্ঠীগুলির 'রামধনু' জোট ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ-এর মত দলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছে। পাল্টা বিজেপি বলেছে, দুর্নীতির কারণে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে রাজ্যের জন অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাল্টা মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে ধীরে ধীরে হলেও জনপ্রিয়তা বাড়বে আইএসএফ-র। সেই কারণে চিন্তিত হয়ে তৃণমূল কংগ্রেস এজাতীয় মন্তব্য করছে।
তৃণমূলের বক্তব্য
তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দু শেখর রায় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ২৫ জানুয়ারি কলকাতায় নাগরিক মঞ্চের ব্যানারে যে সমাবেশ রয়েছিল তাতে স্পষ্ট হয়েছে বিজেপি-সিপিআই(এম)-কংগ্রেস-নকশালদের রামধনু জোট। তারা প্রত্যেকেই সাম্প্রদায়িক আইএসএফকে সমর্থনা করেছে। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের অন্য জায়গার মতই ভাঙড়েও রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক সংহতি বজায় রাখাই দলের অন্যতম লক্ষ্য। তিনি আরও বলেছেন নওশাদের আইএসএফ সেখানে কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই তৃণমূলের নেতা কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। তিনি আরও বলেন ভাঙড়ের স্থানীয় বাসিন্দাদের অবস্থা আর দুরাবস্থার কথা শোনার জন্য খুব তাড়াতাড়ি সেখানে দিদির দূত পাঠান হবে।
ভাঙড় ও ধর্মতলায় ভাঙচুর ও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার সঙ্গে পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ গত ২১ জানুয়ারি আইএসএফের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীসহ দলের ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যা নিয়ে পরবর্তীকালেও একাধিকবার উত্তাল হয়েছে কলকাতা। নওশাদের মুক্তির দাবিতে বাম কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজিও সরব হয়েছে। যা আদতে পছন্দ নয় তৃণমূলের।
বিজেপির বক্তব্য
প্রবীণ বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা এই বিষয়ে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও ধর্মের অনুগত মানুষরা এখন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে একত্রিত হচ্ছে। তবে এর জন্য গেরুয়া শিবিরকে তাদের উস্কে দিতে হবা। তিনি আরও বলেন- দীর্ঘ দিন ধরেই এই রাজ্যের মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। তাই এবার তারা রুখে দাঁড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন মমতার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিদির দূতরা সেই কারণেই নানা জায়গায় হেনস্থা হচ্ছে, বিক্ষোভের মুখে পড়ছে। রাহুল সিনহা আরও বলেন, বর্তমানে আইএসএফ-এর বাড়বান্তের কারণে তৃণমূল কংগ্রেস তার মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক হারানোর সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছে। তিনি মনে করিয়েদেন এই রাজ্যের বিধায়ক-সহ অনেক তৃণমূল নেতাই একটা সময় ভাঙচুর বিক্ষোভের কারণে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। থানায় হামলা চালানোর ইতিহাসও রয়েছে তাদের।
আইএসএফ-এর বক্তব্য
আইএসএফ-এর এক মুখপাত্র বলেছেন, তৃণমূল কংগ্রেস ভাঙড়ে সাধারণ মানুষের সমর্থন হারিয়েছে। সকলেই জানে দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কীভাবে তাদের ওপর চড়াও হয়েছিলে। তাদের দলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলেছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতেই তারা কলকাতা গিয়েছিলেন। সেখানে পুলিশ তাদের মারধর করে ও জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এইভাবে সাধারণ মানুষের কণ্ঠরোধ করতে পারবে না।