
MamataBala Thakur On BJP: ‘মতুয়া ধর্মের বিভীষণ হচ্ছে ঠাকুর বাড়ির শান্তনু ঠাকুর’। শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তৃণমূল সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর। নেপালের মতো ভারতবর্ষে হবে। ‘মোদী-অমিত শাহ জেনে রাখুক।’ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে তীব্র কটাক্ষ তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদের।
শুক্রবার চুঁচুড়া রবীন্দ্রনগর কালীতলা এলাকায় অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ হুগলীর ডাকে এসআইআর ও সিএএ-এর প্রতিবাদে সভা করেন তিনি। সেই সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য সভার সাংসদ ও মতুয়া সম্প্রদায়ের সদস্য মমতা বালা ঠাকুর। এদিন তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ‘এসআইআর’ ইস্যুতে কেন্দ্র সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন। বলেন, ‘’কেন্দ্র সরকার একটার পর একটা আইন করে কীভাবে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকে গোলামে পরিণত করতে চাইছে। এতে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। মতুয়া সম্প্রদায়ের আইডোলজি বিজেপি আরএসএস-এর সঙ্গে মেলে না। আইনের মাধ্যম দিয়ে এরা ধ্বংস করতে চাইছে, একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি।''
মমতাবালা আরও বলেন, ‘’এর বিরুদ্ধে অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ লড়াই করে এসেছে। ২০০৩ যে কালা কানুন তৈরি করেছিল অটল বিহারী বাজপেয়ী যখন প্রধানমন্ত্রী তখন ঠাকুরবাড়িতে ২০০৪ সালে অনশনে বসেছিলেন। বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের নেতৃত্বে এবং আমার স্বামীর নেতৃত্বে। আমার শ্বশুর মশায় প্রথম থেকে লড়াই ছিল যখন দেশভাগ হয় তখন থেকে তার লড়াই ছিল উদ্বাস্তুদের নিয়ে। তাদেরই কাজকে আমি এগিয়ে নিয়ে যাব। আমার জীবন থাকতে এ লড়াই চলবে। বিভিন্ন বিধানসভায় আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এরপর লোকসভা এবং ১৯ অক্টোবর বড়মার জন্ম উৎসবে রাত বারোটার পর তখন আমরা ঘোষণা করব কলকাতার বুকে আমরা কবে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবো। প্রয়োজনে আমরা দিল্লি যাব।''
‘’ভালো-মন্দ নিয়ে জগৎ। বংশে যদি কুলাঙ্গার জন্ম নেয়, এই জাতিকে ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনে শান্তনু ঠাকুরকে নিয়েছে। মতুয়া ধর্মের বিভীষণ হচ্ছে ঠাকুর বাড়ির শান্তনু ঠাকুর। তাকে নিয়ে ধ্বংসলীলা শুরু করেছে আরএসএস এবং বিজেপি। আর তার জবাব মতুয়ারা দেবে। মতুয়ারা কোনও ফর্ম ফিলাপ করবে না। জোর করে বাগদায় একজনকে করিয়েছে।''
‘’বিজেপি ছলেবলে কৌশলে তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। বিল পাস করার পর তারা ভেবেছিল মানুষ ফর্ম ফিলাপ করবে। কিন্তু করেনি বলে সেটাকে ঘুরিয়ে হিন্দু কার্ড করা শুরু করেছে। মতুয়াদের বলব সিএএ-তে আবেদন করতে গেলে চার পাঁচটা ধর্মের কথা উল্লেখ করেছে। সেখানে মতুয়া ধর্মের কোনও উল্লেখ নেই। মুসলিম নেই, মতুয়া নেই। তাহলে মতুয়ারা কোন পর্যায় পড়ে। মোহন ভাগবত তিনি নিজেই বলছেন, হিন্দু কোনও ধর্ম নয় ।সেখানে হিন্দু কার্ড কি করে দেয়। বিজেপি মিনিস্টাররা নিজের বাড়িতে ক্যাম খুলে কিভাবে ফর্ম দেয়? এবং বিপুল পরিমাণে টাকা তুলছে । সেই টাকা কোথায় যাচ্ছে তার হিসেব কোথায় তারমানে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহ সেই রাস্তা খুলে দিয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্নভাবে ফাঁদ পাচ্ছে আমাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য। এর প্রতিবাদ হচ্ছে হবে।''
‘’এটা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এতদিন কেন করেনি। ২৬ এর বিধানসভা ভোটের আর কয়েক মাস বাকি রয়েছে। তারা ভাবছে এটা করে আমরা ভোটে জিতব। মানুষ এটা বুঝতে পারছে। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে আমি বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। হিন্দু না মুসলিম বোঝাতে জামা প্যান্ট খুলতে হচ্ছে এটা কোন স্বাধীন দেশে আমরা বাস করছি।''
তৃণমূল সাংসদ আরও বলেন, ‘’ইংরেজকে তাড়িয়েছি। কিন্তু তার থেকেও আমরা এখন পরাধীন এ দেশে। তাহলে কি বিজেপি এসে গোলাম তৈরি করবে আমাদের? আমরা কি খাব, কি ভাষা বলব সেটা কি তারা ঠিক করবে। বাংলা ভাষা বললেই গ্রেফতার করা হচ্ছে। এর কোনও প্রতিবাদ হবে না। ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে এর উত্তর মানুষ দেবে। পরিবার থাকলে সমস্যা হবে। সঠিক কোনটা সেটা মতুয়াদের বেছে নিতে হবে। আইন করেছে বিজেপি, তৃণমূল করেনি।''
মমতা বালা ঠাকুরের কথায়, ‘’আমরা চাই কোন শর্ত থাকবে না। আইন পরিবর্তন করে নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দিতে হবে। আগামীতে নেপালে কি হয়েছে দেখেছেন তো? চ্যালেঞ্জ করে বলছি ভারতবর্ষ সেটা হবে। মোদী-অমিত শাহ সেটা যেন জেনে রাখেন। আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করব বাধা দেওয়ার। মানুষকে এইভাবে অস্বস্তিতে ফেলা যাবে না । একজনেরও নাগরিকত্ব বাতিল হয়ে গেলে আমরা তাদের পাশে থাকব।''
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।