বিশ্বভারতী ঘিরে বিতর্ক কিছুতেই থামছে না। বারবার বিতর্কে জড়াচ্ছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি যেন কার্যত প্রাক্তনী ও আবাসিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন।
অমর্ত্য সেনকে নিয়ে বিতর্কের রেশ কাটেনি। এরই মধ্যে ফের বিতর্কে জড়ালেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি এবার আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের 'জঞ্জাল' আখ্যা দিলেন। হঠাৎ কী এমন হল যে এরকম মন্তব্য করে বসলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য? রবিবারই ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে বিশ্বভারতীকে হেরিটেজ ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ইউনেস্কোর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বিশ্বভারতী নিয়ে গর্ব প্রকাশ করেছেন। এই সময় কেন উপাচার্যর বিতর্কিত মন্তব্য? অতীতে বারবার নানা পদক্ষেপ ও মন্তব্যের জন্য সমালোচিত হয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। গর্বের মুহূর্তে তাঁর এই অনাকাঙ্খিত মন্তব্য ঘিরে ফের শুরু হয়েছে সমালোচনা।
সোমবার বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে শ্রীনিকেতনে শিল্প উৎসব আয়োজন করা হয়। সেই উৎসবে যোগ দেন উপাচার্য। উৎসবের মঞ্চেই প্রাক্তনী ও আবাসিকদের বিষোদগার করেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তিনি বলেন, 'আজ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবিত থাকলে প্রথমেই আশ্রমিক ও প্রাক্তনীদের তাড়িয়ে দিতেন। কারণ, তাঁরা হলেন বিশ্বভারতীর জঞ্জাল।' খুশির দিনে উপাচার্যর এই মন্তব্য ঘিরে এখন বিশ্বভারতীতে শোরগোল। প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের অনেকেই এরকম মন্তব্যে আহত হয়েছেন। বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথের আদর্শে অনুপ্রাণিত। বিশ্বকবি কোনওদিন ক্ষুদ্র স্বার্থকে প্রাধান্য দেননি। তিনি বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের কথা বলতেন। তাঁর রচনাতেও সেটা সবসময় ফুটে উঠেছে। কটূ কথা রবীন্দ্রনাথের অপছন্দ ছিল। কিন্তু তাঁর স্বপ্নের বিশ্বভারতীতে স্বয়ং উপাচার্যই নিয়মিত কটূ মন্তব্য করে চলেছেন। এতে আঘাত পাচ্ছেন প্রবীণ আশ্রমিকরা।
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনী ও আশ্রমিকদের একাংশের মতে, ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ার ক্ষেত্রে বর্তমান উপাচার্যর কোনও ভূমিকা নেই। যদিও এই স্বীকৃতি মেলার পর আনন্দ উৎসবে যোগ দেন উপাচার্য। সেই তিনিই সোমবার প্রাক্তনী ও আবাসিকদের আক্রমণ করলেন। ইউনেস্কো হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়া প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেছেন, 'সবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়া গিয়েছে, এরই মধ্যে নেতিবাচক প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। কেউ কেউ সংশয় প্রকাশ করছেন, এই তকমা হয়তো ধরে রাখা যাবে না।'
এদিন ফের নাম না করে অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তিনি বলেন, 'সাড়ে ৬৭ কাঠা জমির জন্য বিশ্বভারতীর এক প্রাক্তনী ও তথাকথিত আশ্রমিক রোজ কুম্ভীরাশ্রু বর্ষণ করছেন।'
বিশ্বভারতীর প্রাক্তনীরা বলছেন, দেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উপাচার্যর মুখে এই ধরনের মন্তব্য শোভা পায় না। তাঁর সংযত আচরণ কাম্য।
আরও পড়ুন-
Santiniketan: বিশ্ব হেরিটেজের তকমা পেল শান্তিনিকেতন, বড় ঘোষণা UNESCO-র
PM Modi : 'রেল স্টেশন থেকে আজ দেশের সংসদ ভবনে, স্বপ্নেও ভাবিনি' ভাবুক হলেন প্রধানমন্ত্রী