দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে নয় বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে এলাকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিবারের অভিযোগ, নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার পর পুলিশের ভূমিকা অনুকূল ছিল না।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে, সোমবার ময়নাতদন্তের জন্য নির্যাতিতা শিশুর দেহ কল্যাণী এমসি জয়নগরে নিয়ে যাওয়া হয়। সোমবার সকালে শববাহী ট্রেনটি মমিনপুরের কাটাপুক মর্গ থেকে কল্যাণীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেন ১০:১৫ নাগাদ কল্যাণী পৌঁছায়। সূত্রের খবর, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী নাবালিকাকে ধর্ষণ করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
এরপর শনিবার সকাল থেকেই এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়। পরিবার ও গ্রামবাসীর দাবি, নাবালিকা নিখোঁজ হওয়ার পর তারা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তবে প্রাথমিকভাবে পুলিশের ভূমিকা অনুকূল ছিল না। শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ ওই নাবালিকার মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কলকাতার মমিনপুরের কাটাপুকুর মর্গে পাঠায়। শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের একটি জলাভূমি থেকে উদ্ধার হয় নাবালিকার দেহ। নয় বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় শনিবার দিনভর আগুন জ্বলল দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরে।
সেখানে বিক্ষোভ দেখান সিপিএম নেতা-কর্মীরা। বিজেপির অগ্নিমিত্র পালের নেতৃত্বে বিজেপিও মর্গের সামনে বিক্ষোভ করে। মৃতদেহটি মর্গে নিয়ে যাওয়ার সময় সিপিএমের দীষ্পিতা ধরেরা প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টার অভিযোগ তুলে স্লোগান দেন।
রবিবারের শুনানিতে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় পুলিশ-প্রশাসনকে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন তোলেন কেন জয়নগর মামলায় পকসো আইনে কোনও মামলা নথিভুক্ত করা হয়নি। তাঁর প্রশ্ন, মেয়েটির বয়স ১০ বছরের কম হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ কেন পকসো আইনে মামলা নথিভুক্ত করেনি? সুরথালের পরেও পুলিশ কেন POCSO-তে মামলা নথিভুক্ত করেনি? এর পরে, বিচারক পুলিশকে জয়নগর ঘটনায় পকসো আইনের ধারা যুক্ত করার নির্দেশ দেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশ আগে ব্যবস্থা নিলে নাবালিকার সঙ্গে এমনটা হত না। তবে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেনি। এক যুবককেও আটক করেছে তারা। জয়নগরের ওই এলাকা এখনও আটকে আছে। এলাকায় ভারী পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এদিকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছেন তারা। সোমবার সকালে স্থানীয় বাজারে অনেক দোকানপাট খুলেছে। কেনাকাটাও চলছে ধীর গতিতে। তবে সাধারণ দিনের তুলনায় রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি বেশি থাকে। সময়ে সময়ে পুলিশের গাড়ি টহল দিচ্ছে। এলাকায় পুলিশ পিকেট রয়েছে।