নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা মমতার। তিনি বলেন নির্বাচনের আগে বিজেপি এনআরসি , সিএএ তাস খেলতে শুরু করেছে। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করার চেষ্টা করেছে।
এনআরসি আর সিএএ বাংলার সরকার অনুমোদন দেবে না। নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে বসে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে হেনস্থা করার জন্যই উদ্যোগ নিয়েছে বিজেপি। তিনি বলেন, অমিত শাহ বিজেপি নেতাদের নিয়ে বৈঠকেও সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি করতে চাইছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন আসছে। আর সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকার বিএসএফর এলাকা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিএসএফ এলাকা কেন্দ্রীয় সরকার বাড়ালেও বাংলা তা মানবে না। সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার পর থেকে বাংলায় সক্রিয় থাকবে রাজ্যের পুলিশ। মমতা বলেন, শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে সমস্যায় ফেলতেই একাধিক পদক্ষেপ করছে বিজেপি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন নবান্নে বসে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি নির্দিষ্ট সস্প্রদায়কে লক্ষ্য করে চিঠি পাঠিয়েছে। বলা হয়েছে সম্পূর্ণ আধার কার্ড যদি না দেখাতে পারে তাহলে তারে বিদেশি তকমা দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন বিজেপি আবার এনআরসি কার্ড নিয়ে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। ২০১৪ সাল থেকেই এই এনআরসি কার্ড নিয়ে খেলা শুরু করেছে বিজেপি। কিন্তু এনআরসি নিয়ে বিক্ষোভ হওয়ার কারণে কিছুদিনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এই পদক্ষেপ বন্ধ করে রেখেছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কেন্দ্রীয় সরকার এনআরসির বিষয়ে তৎপর হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানান হয়েছে এলাকায় কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা ঘুরে ঘুরে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখতে চাইছে। মমতা বলেন, 'গোটা ঘটনা অসমের ডিকেটশন ক্যাম্প।'
মমতা বলেন অধার কার্ডের মাধ্যমে ঘুরপথে এনআরসি লাগু করতে চাইছে বিজেপি। তিনি বলেন যার অর্থ আধার কার্ড কোনও শিশুরও ।দি না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্টকে বিদেশি তকমা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। যারা আধারকার্ড করেনি বা বেআইনি আধারকার্ড ব্যবহার করছে তাদের বিজেপি তকমা দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে এমন চিঠি এসেছে বলেও এদিন মমতা সাংবাদিকদের বলেন।
মমতা বলেন কোন কোন এলাকায় এই প্রতিনিধি দল ঘুরবে তাও নির্দিষ্ট করা হয়েছে তালিকায় রয়েছে বারাসত, গোবরডাঙা, হাবড়া, দত্তপুকুর, বসিরহাট, স্বরূপ নগকর ন্যাজাট, বনগাঁ , পেট্রাপোল, নৈহাতি, জগদ্দল, রহড়া , খরদা, ঘোলা, সল্টলেক, নিউটাউন, লেকটাউন, জয়ন্তীপুর, বিরাট, বিরাট, বারুইপুর, ক্যানিং, সোনারপুর, সুতিয়াসহ একাধিক জায়গার নাম রয়েছে তালিকায়। মমতা রাও বলেন, একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করলেই এই ইস্যুতে অনেক নাগরিকের নাগরিকত্ব খারিজ হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মমতা বলেন যখনই নির্বাচন আসে তখনই বিজেপি বিভাজনের বল নিয়ে রাস্তায় নেমে যায়। এটি তারই অঙ্গ বলেও দাবি করেন মমতা।
মমতা এদিন বলেন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে কোনও আলোচনা নেই। একের পর এক সরকারি প্রতিষ্ঠান বেচে দিচ্ছে বিজেপি। সংসদ চলুক এটাই চায় বিজেপি। সংসদে আলোচনা হোক এটাই চায় না বিজেপি। আর সেই কারণে যেকোনও অজুহাতে সংসদের অধিবেশন বন্ধ করে দিয়েছে বিজেপি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, গায়ের জোরে গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে বিজেপি।