অনুব্রত মণ্ডলের 'অনুগত' জীবনকৃষ্ণ কলেজজীবন থেকেই ছিলেন তৃণমূলে, স্ত্রীও হয়েছিলেন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা

Published : Apr 17, 2023, 12:15 PM IST
tmc mla jiban krishna saha

সংক্ষিপ্ত

মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা দুর্নীতিতে পেছনে ফেলে দিতে পারেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও, এমনই দাবি করেছে সিবিআই। এখনও পর্যন্ত পুকুরের জল ছেঁচে মোবাইল ফোন উদ্ধারের চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা।

নবম ও দশম শ্রেণীর নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে সিবিআই। রবিবার একেবারে মধ্যরাতে বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছে যান গোয়েন্দারা। টানা ৬৫ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি অভিযান। মোট পাঁচটি ব্যাগ থেকে তিন হাজারেরও বেশি চাকরিপ্রার্থীর ছবি দেওয়া অ্যাডমিট কার্ড সহ বিভিন্ন নথিপত্র পাওয়া গেছে। এমনকি বিধায়কের বাড়ির পাশের পুকুর সেচে তাঁর একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর বাড়ি থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভরা পেন ড্রাইভ এবং হার্ডডিস্কও পেয়েছে সিবিআই। তদন্তকারীরা মনে করছেন, তিন হাজারেরও বেশি চাকরিপ্রার্থীর এক এক জনের কাছ থেকে প্রায় ৬ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা করে তুলেছিলেন জীবন কৃষ্ণ। সিবিআই-এর ধারণা, এই বিধায়ক একাই চাকরি দেওয়ার নামে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন। অর্থাৎ, তাঁর দুর্নীতি ছাপিয়ে যেতে পারে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, মানিক ভট্টাচার্যকেও।

এখনও পর্যন্ত জীবন কৃষ্ণ সাহার বাড়ির পাশের পুকুরে ৩০ জন শ্রমিককে কাজে লাগিয়ে জল সেঁচে আরও একটি মোবাইল ফোন এবং আরও একটি পেন ড্রাইভ উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। দুটি মোবাইল এবং দুটি পেনড্রাইভ, সবই পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন জীবনকৃষ্ণ নিজেই। ওই ফোনে থাকতে পারে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের সঙ্গে কথোপকথন, হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটসহ দুর্নীতির অগুন্তি তথ্য। শুক্রবার থেকে তিনি মোটেই সিবিআইয়ের প্রশ্নের উত্তরে সহযোগিতা করছিলেন না বলে অভিযোগ ওঠে। কিন্তু, রবিবার রাতে তিনি সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায়। মোট ২৫ জনের একটি তদন্তকারী দল প্রায় ৪০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ম্যারাথন জেরা করেন তাঁকে। রবিবার ভোর ৫টা ১৭ মিনিট নাগাদ জীবন সাহাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। মুর্শিদাবাদ থেকে তাঁকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার নিজাম প্যালেসে। তাঁকে নিয়ে মোট ৩ জন তৃণমূল বিধায়ককে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য এবং বড়ঞার বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা।

জানা গেছে, কলেজ জীবন থেকেই তৃণমূলের সাথে জড়িত জীবনকৃষ্ণ সাহা। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ছিলেন তিনি, ২০০৪ সাল থেকে পেশায় ছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। বীরভূম জেলার সাঁইথিয়াতে তেল মিল ও আলুর কোল্ড ষ্টোরেজ আছে তাঁর বাবা বিশ্বনাথ সাহার। ২০১৩ সালে বীরভূম জেলার নানুরের দেবগ্রাম হাইস্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। ওই বছরেই বিয়ে করেছিলেন রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দা টগর সাহাকে। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী অমিয় দাসকে ২৭৫৩ ভোটে পরাজিত করে জয়ী হয়ে বিধায়কের পদে বসেন জীবন, তখন স্কুলের চাকরি ছেড়ে দেন তিনি। তবে, তাঁর স্ত্রী টগর ও শ্যালক নিতাই সাহা হয়েছিলেন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। প্রচুর আয় বহির্ভূত সম্পত্তির মালিক জীবনকৃষ্ণ। সিবিআইয়ের জেরার মুখে রবিবার রাতে প্রায় ভেঙে পড়েন তিনি। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নিয়োগ দুর্নীতির ঘোলা জলে আরও অনুসন্ধান চালাতে চাইছে সিবিআই।

আরও পড়ুন-
Amit Shah News: প্রচণ্ড গরমে অমিত শাহের অনুষ্ঠান, রোদ্দুরে দাঁড়িয়ে মারা গেলেন ১১ জন
‘আসসালাম ওয়ালেইকুম মোদীজি, কেমন আছেন আপনি?’ দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভাবনীয় আবদার কাশ্মীরের শিশুকন্যার

কালো গাউনে মখমলে সুন্দরী ‘দুপুর ঠাকুরপো’-র ‘ঝুমা বৌদি’, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করলেন অভিনেত্রী মোনালিসা

PREV
click me!

Recommended Stories

১ বছর পরে ২ দিনের সফরে কোচবিহার যাচ্ছেন মমতা, রইল সোম ও মঙ্গলের ঠাসা কর্মসূচি
Dilip Ghosh: বাংলায় ‘বাবরি মসজিদ’! বিজেপির দিলীপ হুমায়ুনকে দিলেন চরম উপদেশ