
বসিরহাট: মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরু হয়েছে, যুদ্ধের মাঝেই বসিরহাটের ছেলে পড়তে গিয়ে আটকে রয়েছে। দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে বসিরহাটের সাঁকচূড়ার রেজবি পরিবারের। তাঁদের ছেলে সৈয়দ বাকির মাজলেসি রেজবি ২০১৮ সালে ইরানের কোম শহরে ফারসি ভাষায় ডক্টরের পড়তে গিয়েছিল। মাঝেসাঝে বাড়ি আসে, কিন্তু ৮ মাস আগে যাওয়ার পরে আজও ফেরেনি। তার মধ্যেই যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য দেশে। যুদ্ধের কারণে বিপাকে পড়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, দুই দেশের সংঘাতের কারণে পরিবারের সঙ্গে এখন এক প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে তাঁর। ইন্টারনেট থাকলে কখনও কথা হচ্ছে আবার কখনও হচ্ছে না। ফলে সেই ভাবে যোগাযোগ রাখতে পারছেন না পরিবারের মানুষজন। ‘আমরা আতঙ্কে আছি ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেলে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না তার সঙ্গে।’ এখন এই পরিস্থিতির জেরে রীতিমতো উদ্বিগ্ন তাঁর পরিবার। দেশে ফিরতে পারবে কীনা তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সৈয়দ নিজেও। সামাজিক মাধ্যমে বিধায়কের মারফত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
বসিরহাটের সাকচূড়ায় বাড়ি সৈয়েদ বাকির মাজলেসি রেজবি । পড়াশুনায় ছোট থেকেই মেধাবি । পার্সিয়ান ভাষায় ডক্টরেট করতে যান ইরানের আল-মোস্তফা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। যেটি ইরানের কোম শহরে অবস্থিত ।এই মুহূর্তে ইরান এবং ইজরায়েলের যুদ্ধে ভয়াবহ পরিস্থিতি। ইরানে মোবাইলের নেটওয়ার্কের সমস্যা হওয়ায় বাড়ির সঙ্গে ঠিকমতন যোগাযোগ করতে পারছেন না তিনি। বাড়ির থেকে ফোন করেও যোগাযোগ করা যাচ্ছে না বলে জানা গিয়েছে।
সৈয়দের দাদা গোলাম আসকারী বলেন, ‘’ওর টিকিট কাটা ছিল। ২০ জুন বাড়ি আসার কথা। কিন্তু বিমান পরিষেবা বন্ধ। দূতাবাসের লোকজন ওদের সঙ্গে যোগাযোগও করছে, আমার সঙ্গেও যোগাযোগ হয়েছে। ভাইয়ের সঙ্গে দুদিন আগে কথা হয়েছে, আমার পরিবার থেকে দাবি যত তাড়াতাড়ি হোক আমাদের রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় সরকার নরেন্দ্র মোদী তাদেরকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করুক। কারণ, যতদিন যাচ্ছে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। আমরা টেলিভিশনে যেটা দেখছি, তাই একটা ভয় কাজ করছে মনে। যতক্ষণ না সে বাড়ি ফিরছে, একটা আতঙ্কের মধ্যে আমরা রয়েছি।'' এই বিষয়ে সৈয়দের মা বলেন, ‘’ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। আমার ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হোক।''
সামাজিক মাধ্যমে সৈয়দের পোস্ট দেখে বিধায়ক সপ্তর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘’আমি বিষয়টা জানা মাত্রই মুখ্যমন্ত্রীর নজরে এনেছি। ওখান থেকে একজন সাংসদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে আমরা ডিটেইলস পাঠিয়ে দিচ্ছি। স্বরাষ্ট্র দফতরের সঙ্গে কথা বলে সাহায্য করার চেষ্টা করবে।''
প্রসঙ্গত, ইজরায়েল এবং ইরানের মধ্যে চলমান যুদ্ধ বুধবার ছয়দিনে আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। উভয় পক্ষ একে অপরের উপর মিসাইল হামলা চালিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের ইসলামিক রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (IRGC) দাবি করেছে যে তারা ইজরায়েলের উপর ফাত্তাহ-১ হাইপারসনিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।