সংক্ষিপ্ত
আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের জোট এখনও পাকা হয়নি
তারপরেও ব্রিগেডে দুই দলের নেতাদেরই দেখা গিয়েছে
এই নিয়ে ফাচল ধরল কংগ্রেসে জাতীয় স্তরে
অধীরকে কড়া আক্রমণ করলেন আনন্দ শর্মা
সফল ব্রিগেডের পরের দিনই ফের সমস্যায় জড়ালো সংযুক্ত মোর্চা। আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হওয়া নিয়ে উত্তেজনা ছিলই। সোমবার সেই উত্তেজনার আঁচ আরও বাড়িয়ে দিলেন কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ আনন্দ শর্মা। ব্রিগেড ময়দানে আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে একই মঞ্চে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর উপস্থিতি এবং আইএসএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের জোট নিয়ে এদিন তিতিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
সোমবার টুইট করে আনন্দ শর্মা বলেন, 'আইএসএফ এবং এই জাতীয় শক্তিগুলি'র সঙ্গে কংগ্রেসের জোট 'দলের মূল আদর্শের বিরোধী'। গান্ধী এবং নেহেরুর ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শেরও বিরোধী। আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটের মতো বিষয়গুলি কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটিতে অনুমোদিত হওয়া দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সেইসঙ্গে বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তির ক্ষেত্রে বেছে বেছে লড়াই করতে পারে না কংগ্রেস, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকলের ক্ষেত্রে নীতি এক হওয়া উচিত। সরাসরি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে আক্রমণ করে আনন্দ শর্মা বলেন, আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির উপস্থিতি এবং সমর্থন 'বেদনাদায়ক এবং লজ্জাজনক'। অধীর-এর কাছ থেকে এই বিষয়ে স্পষ্টতাও দাবি করেন তিনি।
আনন্দ শর্মার বক্তব্যের জবাব দিতে ছাড়েননি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। বেশি কথায় না গিয়ে অধীররঞ্জন চৌধুরী শুধুমাত্র বলেছেন, জোটের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তই তিনি একতরফাভাবে নিচ্ছেন না। প্রতিটি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সম্মতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বস্তুত, দিন কয়েক আগে আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটের বিষয়ে দ্রুত মীমাংসা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বয়ং সনিয়া গান্ধী। তবে, ব্রিগেডের মাঠেও কংগ্রেসের সঙ্গে আইএসএফ-এর মেলামেশার ক্ষেত্রে আড়ষ্টতা ছিল। অধীর চৌধুরীর বক্তৃতা থামিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে, কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে আব্বাস সিদ্দিকির শুধুমাত্র বাম শরিকদের ভোটে জেতানোর আহ্বান - তাল কেটেছে বারবার।
পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের মুখে দিন ৪০-এক আগে ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা 'ভাইজান' আব্বাস সিদ্দিকি, 'ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট' নামে একটি রাজনৈতিক দল খোলার আনিষ্ঠানিক ঘোষণা করেছিলেন। তবে তারা কতটা সেকুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ - তাই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মোর্চার বিরোধীরা। বরং আব্বাস সিদ্দিকির ইতিহাস তুলে তারা অভিযোগ করছে আইএসএফ একটি মৌলবাদী দল। অভিনেত্রী তথা রাজনীতিবিদ নুসরত জাহান সম্পর্কে কটুক্তি করা থেকে দিল্লির দাঙ্গার পর ভাইরাস নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যে জড়িয়েছে তাঁর নাম। তবে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই ভাইজানের ভক্তরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন। তাই আইএসএফ মোর্চায় এলে ভোটবাক্সে মোর্চার ভালোই লাভ হবে বলে মনে করছেন ভোট বিশ্লেষকরা। তবে, আদর্শগতভাবে এমন এক বিতর্কিত ব্যক্তিত্বের সঙ্গে জোট করাটা বাম-কংগ্রেসের পক্ষে কতটা যুক্তিযুক্ত, সেই প্রশ্ন উঠছে।