সংক্ষিপ্ত

হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী কাল ভৈরবের পুজো করলে মনের অজানা ভয় দূর হয়। আর সেই কারণে যদি কোনও ব্যক্তির মধ্যে সাহস আর শক্তি কম থাকে তারা সাধারণ কাল ভৈরবের পুজো করলে ফল পাবেন।

হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে প্রতিমাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথিতে পালন করা হয় কালাষ্টমী। এই দিনে কালভৈরবকে ভগবান বিশের বিশেষ অংশ হিসেবে পুজো করা হয়। কালভৈরব হল ভগবান শিবের উগ্ররূপ। ভৈরব সাধারণত কাল ভৈরব, রুদ্র ভৈরব, চন্দ্র ভৈরব, ক্রোধ ভৈরব, উগ্র ভৈরব রূপে পুজিত হন। তবে আমরা সাধারণ ভৈরবকে বটুক ভৈরব রূপে পুজো করি। কারণ এটি তাঁর সহজ রূপ। এই মাসে কালাষ্টমী পড়েছে আগামী ১৬ ডিসেম্বর।

হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী কাল ভৈরবের পুজো করলে মনের অজানা ভয় দূর হয়। আর সেই কারণে যদি কোনও ব্যক্তির মধ্যে সাহস আর শক্তি কম থাকে তারা সাধারণ কাল ভৈরবের পুজো করলে ফল পাবেন। ভৈরব প্রধাণত তন্ত্র সাধনার জন্য পুজিত হন। যদি শত্রুরা আপনাকে অস্বস্তিতে ফেলে বা বিপদে ফেলে এমনটা মনে হয় তাহলে অবশ্যই কাল ভৈরবের পুজো করলে বিশেষ ফল পাওয়া যায়। কাল ভৈরবের পুজো করলে অজনা ভয় দূর হয়। নতুন কোনও কাজে যোগ দিতে গেলে যদি ভয় লাগে তাহলে কাল ভৈরবের পুজো করা যেতে পারে।

শিবপুরাণ অনুসারে, কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমীতে, ভগবান শঙ্করের অংশ থেকে ভৈরব জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাই এই তারিখটি কাল ভৈরবষ্টমী নামে পরিচিত। মূলত অষ্টমী তিথি ভৈরবনাথের নামে, তাই প্রতি মাসের অষ্টমী তিথিতে কাল ভৈরবের পূজা করা হয়। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, অন্ধকাসুর নামে এক রাক্ষস সমস্ত জগতে ত্রাস সৃষ্টি করেছিল। একবার গর্বিত হয়ে তিনি ভগবান শিবকে আক্রমণ করার সাহস করেন। অতঃপর তাকে হত্যা করার জন্য শিবের রক্ত থেকে ভৈরবের জন্ম হয়। কিছু পুরাণ অনুসারে, ভৈরবের উদ্ভব হয়েছিল শিবকে অপমান করার জন্য।

ভৈরবের রূপ অত্যান্ত ভয়ঙ্কর ও ভীতিকর, কিন্তু তার পুজো সকল ভয় থেকে মুক্তি দেয়। কাল ভৈরবের গাঢ়় কালো বর্ণ, মোটা শরীর, অঙ্গারের মত জ্বলন্ত চোখ, কালো ভীতিকর বস্ত্র, রুদ্রাক্ষের কঙ্কন, হাতে লোহার রড থাকে। ভৈরবের বাহন হল কুকুর। পুজোর দিক থেকে ভৈরব হল অন্ধকারের দেবতী। তবে তার পুজো দুটি শাখায় বিভক্ত। একটি বটুক ভৈরব অর্থাৎ সাধারণ রূপের পুজো। অন্য পুজো হয় কাল ভৈরবের। তিনি শাস্তিদাতা হিসেবে বিখ্যাত।

কালাষ্টমীতে ভগবান শিব ও তাঁর উগ্র রূপ ভৈরবের পুজো করা হয়। এই দিন ২১টি বেল পাতায় চন্দনদিয়ে ওম নম শিবায় লিখে কালো পাথরের শিবলিঙ্গের অর্পণ করতে হবে। তাতেই ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। কালাষ্টমীতে যে কোনও কুকুরকে ঘি-মাখানো রুটি, পকোড়া, খাওয়াতে পারেন। তাতে কাল ভৈরব তুষ্ট হন। তবে কুকুরকে খাওয়ার পরে আর সেইদিকে ফিরে তাকাবেন না। সোজা বাড়ি ফিরে আসবেন।

কালাষ্টমীর দিনে দরিদ্র সেবা করতে পারে। রাস্তায় দরিদ্রদের খাবার বিলি করতে পারে। চাইলে তাদের মধ্যে কাপড়ও বিলি করতে পারেন।