ভারতের চারধাম, চার যুগের প্রতীক, দুই দেবতার আবাসস্থল। বদ্রীনাথে বিষ্ণু, রামেশ্বরমে রামের প্রতিষ্ঠিত শিবলিঙ্গ, দ্বারকায় কৃষ্ণ এবং পুরীতে জগন্নাথ।
দেশের চার প্রান্তে চার মন্দির। চাপ রূপে বিরাজমান দুই দেবতা। যাঁরা চার যুগের প্রতীক। সব মিলিয়ে ভারতে আছে চার ধাম। চারদিকের তিনটি ধামে নারায়ণের অবতার ও একটিতে দেবাদিদেব মহাদেব পুজিত হন। তবে চারটির সঙ্গেই যুক্ত বিষ্ণু।
হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, বদ্রীনাথ পূজিত নায়ারণ। তিনি সেখানে সত্যযুগের প্রতীক। রামেশ্বরমে মহাদেব রামের হাত প্রতিষ্ঠিত ও পূজিত হন। রাম ত্রেতাযুগে বিষ্ণুর অবতার। কৃষ্ণ দ্বারকা স্থাপন করেছিলেন দ্বাপরযুগে। কলিতে বিষ্ণু জগন্নাথ রূপে। আদি শঙ্করাচার্যও দেশের চার কোণায় একটি চারটি মন্দিরকেই চারধাম নামে খ্যাত।
বদ্রীনাথ
রাজা ভগীরথের তপস্যায় মর্ত্যে নামেন মা গঙ্গা। তাঁর শক্তি সহন করতে পারেনি ধরত্রী। দুই ভাগ হয়ে যায় গঙ্গা। একটি গঙ্গা অপরটি অলকানন্দা। উত্তরাখণ্ডের এই অলকানন্দা থেকেই আদি শঙ্করাচার্য শালিগ্রাম পাথরের কালো বদ্রীনারায়ণের একটি মূর্তি পেয়েছিলেন। সেই শালিগ্রাম শিলা একটি গুহায় স্থাপন করেন। ষোড়শ শতাব্দীতে, গাড়োয়ালের রাজা মূর্তিটি বর্তমান মন্দিরে স্থাপন করেন। এটি বিষ্ণুর নর নারাণের দ্বৈত রূপের পবিত্র স্থান মনে করা হয়।
দ্বারকা
গুজরাটে অবস্থিত দ্বারকা। চারধামের একটি। সপ্তপুরী নামেও পরিচিত। ভারতের সাতটি প্রাচীনতম শহরের একটি দ্বারকা। সেখানেই অবস্থিত দ্বারকাধীশ মন্দির। পূজিত স্বয়ং কৃষ্ণ। কৃষ্ণের অপর নাম দ্বারকাধীশ। ভগবত পুরাণে দ্বারকাকে কৃষ্ণের রাজধানী বলা হত। বিশ্বাস এটি গুজরাটের প্রথম রাজধানী।
রামশ্বেরাম
রামশ্বেরাম তামিলনাড়ুর রামনাথপুরমের একটি শহর। যা পামবান দ্বীপে অবস্থিত। এটি ভারতের শেষ অংশ। চারধামের একমাত্র মন্দির যেখানে দেবাদিদেব মহাদেব পূজিত। শাস্ত্র মতে, ত্রেতাযুগের বিষ্ণুর অবতার রাম এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
পুরী
বঙ্গোপসাগরের তীরে চারধামের একটি শ্রীক্ষেত্রে পুরীর জগন্নাথ মন্দির অবস্থিত। এখানে মহাপ্রভু জগন্নাথ পুজিত হন। যাকে নারায়ণের কলি যুগের অবতার বলা হয়। রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন জগন্নাথদেবের স্বপ্নাদেশ পেতে তাঁকে মন্দিরে নিয়ে আসেন। একমাত্র এই কলিযুগেই বিষ্ণু দাদা, বোনের সঙ্গে পুজিত হন।


