সংক্ষিপ্ত

যদি রাশিফলের সপ্তম ঘরে সূর্য থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং তিনি নিজের বাড়িতে সুখী হন না। গ্রহ অবস্থানের প্রভাবে স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরের প্রতি বিরূপ আচরণ শুরু করেন। 

বৈবাহিক বন্ধন প্রত্যেক মানুষের জীবনে এক দারুণ আনন্দের মুহূর্ত, ঠিক একই রকমভাবে বিবাহ-বিচ্ছেদ অতি দুঃখজনক ঘটনা। কোনও মানুষই নিজের সম্পর্কের অন্দরে বিচ্ছেদ চান না, কিন্তু গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাবে ভাগ্যের ফেরে বিচ্ছেদ বাধ্য হয়েই আসে। স্বামী অথবা স্ত্রীয়ের মধ্যে একজন জ্যোতিষশাস্ত্রের অধীনে রাশিফলের মিলের উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখেন এবং অন্য পক্ষ অনেক সময়ই তা করেন না, তাই দ্বিতীয় পক্ষ শুধুমাত্র প্রথম পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে এবং যে কোনও উপায়ে বিবাহ সম্পর্কটি বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকেন। জন্মের তারিখ এবং সময়কালের ওপর রাশিফলের প্রভাব নির্ভর করে। জ্যোতিষীদের মতে, রাশিফল ​​না মিলিয়ে বিয়ে করলে ভবিষ্যতে সমস্যা দেখা দেয়, যার কারণে বিবাহের পরে বিচ্ছেদের সমস্যা আসতে পারে।

কারণ

ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রে বিবাহবিচ্ছেদের অনেক সম্ভাবনা এবং কারণ বর্ণনা করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ ও বিবাহবিচ্ছেদ এড়াতে রাশিফল ​​মেলানোর প্রথা বহু প্রাচীন। সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য বিয়ের আগে গ্রহের অবস্থান বিশ্লেষণ অপরিহার্য। অশুভ গ্রহগুলি বিঘ্নিত বা বিচ্ছেদ-সৃষ্টিকারী পরিস্থিতি তৈরি করে, তাই বিবাহের সময় মঙ্গল গ্রহের মিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, মঙ্গল গ্রহের মিলনে সামান্য ভুল অশুভ ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। রাশির সপ্তম ঘরে শনি, সূর্য ও রাহু জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কিত। মঙ্গলের মতো নিষ্ঠুর গ্রহ পারিবারিক জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। সপ্তম ঘরে নিষ্ঠুর ঘর বা নিষ্ঠুর গ্রহের দৃষ্টি স্বামী এবং স্ত্রীয়ের মধ্যে বৈষম্য এনে দেয় এবং বিচ্ছেদের পরিস্থিতি তৈরি করে।

যদি রাশিফলের সপ্তম ঘরে সূর্য থাকে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এবং তিনি নিজের বাড়িতে সুখী হন না। বৃহস্পতি যদি কোনও মেয়ের কুণ্ডলীতে দুর্বল হয়, তাহলে তার বিবাহিত জীবন সমস্যায় পূর্ণ থাকে। তাই, বিবাহযোগ্য মেয়েদের প্রায়ই বৃহস্পতির পূজা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। যখন গ্রহ অশুভ হয় বা কুণ্ডলীতে অশুভ গ্রহের অবস্থা চলতে থাকে, তখন তৃতীয় ব্যক্তির প্রভাবে স্বামী এবং স্ত্রীয়ের মধ্যে দূরত্ব বাড়তে থাকে, যা ভবিষ্যতে ধ্বংসাত্মক রূপ নেয়। গ্রহ অবস্থানের প্রভাবে স্বামী এবং স্ত্রী একে অপরের প্রতি বিরূপ আচরণ শুরু করেন। তাঁরা যে কোনও পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তির সমালোচনা করে এবং একে অপরকে অপমানিত ও বিব্রত করার চেষ্টা করে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে দাম্পত্য জীবন খারাপ হতে থাকে। কিন্তু গ্রহের অবস্থান অনুযায়ী যদি এই সমস্যার প্রতিকার করা হয়, তাহলে বিচ্ছেদ ও ঝগড়াঝাঁটি প্রেম ও পারস্পরিক সহযোগিতায় রূপান্তরিত হয়। রাশিফলের সপ্তম ঘরটি জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্কিত, সপ্তম ঘরের অধিপতিকে বলা হয় সপ্তমেশ। দাম্পত্য জীবনে যখনই কোনও সমস্যা দেখা দেয়, তখনই সপ্তমেশ সংক্রান্ত প্রতিকার করা উচিত।

প্রতিকার

দান এবং পূজার মতো জ্যোতিষশাস্ত্রীয় প্রতিকার সঠিক সময়ে করা হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া ও বিচ্ছেদ বন্ধ হয়, প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার দিন কোনও গরীব মানুষকে সামান্য কিছু দান করুন। ভিখারিকে অর্থ দিন। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ থাকলে প্রতি বৃহস্পতিবার একত্রে লক্ষ্মী-নারায়ণের মন্দিরে গিয়ে ফল, ফুল ও প্রসাদ অর্পণ করে প্রার্থনা করা উচিত। লক্ষ্মী-নারায়ণের অটুট প্রেমের প্রতি সম্মান থাকা বাঞ্ছনীয়। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসাও অটুট হওয়া উচিত। সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য ঘরে কালো কাপড়ে এক টুকরো ফিতে বেঁধে রাখতে হবে। এছাড়াও শোবার ঘরে বিছানার উলটোদিকে ময়ূরের পালক রাখুন। ময়ূরের পালকটি এমনভাবে রাখুন, যাতে বিছানায় শোয়ার সময় ময়ূরের পালকটি চোখে পড়ে।