সংক্ষিপ্ত

এই দিনের ব্রতে ভগবান শ্রী গণেশের পূজা করার প্রথা রয়েছে এবং এই দিনে উপবাসও পালন করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এই উপবাস পালন করলে সংসারে সুখ ও সমৃদ্ধি ভরপুর থাকে।

ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী তিথিকে দ্বিজপ্রিয় সংকষ্টী চতুর্থী বলা হয়। এই দিনের ব্রতে ভগবান শ্রী গণেশের পূজা করার প্রথা রয়েছে এবং এই দিনে উপবাসও পালন করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, এই উপবাস পালন করলে সংসারে সুখ ও সমৃদ্ধি ভরপুর থাকে। তাই মহিলারা প্রধানত এই ব্রত পালন করেন। সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার পরই এই উপবাস সম্পন্ন হয়। 



ভগবান শ্রী গণেশের দ্বিজপ্রিয় রূপ কেমন?

ধর্মীয় গ্রন্থে, ভগবান শ্রী গণেশের একটি নাম দ্বিজপ্রিয় হিসাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। এই নামের একটি বিশেষ অর্থ আছে। দ্বিজপ্রিয়া মানে হল, গণেশের সেই রূপ যেখানে তিনি যজ্ঞোপবীত অর্থাৎ পবিত্র সুতো পরিধান করেছেন। প্রাচীন কাহিনী অনুসারে, একবার মা পার্বতী কোনও বিষয়ে মহাদেবের উপর ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। তখন ভগবান শিব তাঁকে শান্ত করার জন্য এই উপবাস পালন করেছিলেন। এই উপবাসের প্রভাবে দেবী পার্বতী ফিরে এসেছিলেন।

দ্বিজপ্রিয় সংকষ্টী চতুর্থী ২০২৪ উপবাস কখন পালন করবেন?

পঞ্চাং অনুসারে, ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্থী ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার সারা দিন ধরে চলবে। তাই এই দিনে উপবাস পালন করা যাবে। বিশেষ বিষয় হল, এই দিনটি যেহেতু বুধবার, তাই এর গুরুত্ব আরও বাড়বে , কারণ এটিকে ভগবান শ্রী গণেশের প্রিয় দিন বলে মনে করা হয়। বৃদ্ধি নামে একটি শুভ যোগও এই দিনে তৈরি হবে।

দ্বিজপ্রিয় সংকষ্টী চতুর্থী উপবাস ২০২৪ শুভ মুহূর্ত

দ্বিজপ্রিয় সংকষ্টী চতুর্থী উপবাস শুধুমাত্র চাঁদের দর্শন ও পূজার পরে সম্পন্ন হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারী বুধবার রাত ৯ টা বেজে ৪২ মিনিটকে চন্দ্রোদয়ের শুভ সময় বলে গণ্য করা হয়েছে। তবে, অবস্থানের উপর নির্ভর করে, চন্দ্রোদয়ের সময় পরিবর্তিত হতে পারে। চাঁদ ওঠার কিছু সময় আগে ভগবান শ্রী গণেশের পূজা করা উচিত।

দ্বিজপ্রিয়া সংকষ্টী চতুর্থী পূজা বিধি

- ২৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে স্নান করে উপবাস ও পূজার সংকল্প নিন। সারাদিন উপবাস রাখার নিয়ম মেনে চলুন, কম কথা বলুন, এইদিন কারোর উপর রাগ করবেন না। প্রয়োজনে ফল খেতে পারেন।

- সন্ধ্যায় চন্দ্রোদয়ের আগে বাড়ির একটি পরিষ্কার জায়গায় ভগবান শ্রী গণেশ এবং দেবী পার্বতীর মূর্তি বা ছবি স্থাপন করুন। প্রথমে একটি খাঁটি ঘি এর প্রদীপ জ্বালান। দেবতার মূর্তিতে ফুল ও মালা অর্পণ করুন এবং তিলকও লাগান।

-এর পর একে একে আবির, চাল, পবিত্র সুতো, পান, নারকেল ইত্যাদি নিবেদন করুন। দূর্বা ভগবান গণেশের খুব প্রিয়, এটিও নিবেদন করতে হবে। ভগবানকে লাড্ডু ও মৌসুমি ফল নিবেদন করুন।

- এর পরে ভগবান গণেশের ১২টি নাম বলুন - ওম গণ গণপতয়ে নমঃ, ওম গণধিপায় নমঃ, ওম উমাপুত্রায় নমঃ, ওম বিঘ্ননাশনায় নমঃ, ওম বিনায়কায় নমঃ, ওম ইশপুত্রায় নমঃ, ওম সর্বসিদ্ধিপ্রদায়ায় নমঃ, ওম একদন্তায় নমঃ, ওম একদন্তায় নমঃ। মুশকাবাহনয় নমঃ, ওম কুমারগুর্বে নমঃ-

এইভাবে পূজার পর আরতি করুন এবং ভক্তদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করুন। চাঁদ উঠলে জল দিয়ে অর্ঘ নিবেদন করুন এবং ফুল নিবেদন করুন। এভাবে এই উপবাস পালন করলে ঘরে সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে এবং ভক্তের সব ইচ্ছা পূরণ হয়।