সংক্ষিপ্ত

সূর্যকে নিয়মিত অর্ঘ্য নিবেদন করলে ভক্তদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শক্তি, তীক্ষ্ণতা, সাহসিকতা, খ্যাতি ও উদ্যম বৃদ্ধি পায়।

শীতকালে ঘন কুয়াশার কারণে সূর্য আড়াল হয়ে গেলে মনের আলোও ম্লান হয়ে যায়। সূর্যের আলো সমৃদ্ধির প্রতীক, রাজা হওয়ার দরুন গ্রহদের মধ্যে সূর্যের রাজকীয় ক্ষমতা রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়। জীবনে রোগ, শোক ও উদাসীনতা দূরে রাখতে সূর্য পূজা অত্যন্ত উপকারী। সূর্য ঈশ্বর সৃষ্টির গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি, সূর্যের রশ্মি শুধু শীতকালে নয় প্রতি মাসে শরীর ও মনকে শক্তি জোগায়। সূর্যকে নিয়মিত অর্ঘ্য নিবেদন করলে ভক্তদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শক্তি, তীক্ষ্ণতা, সাহসিকতা, খ্যাতি ও উদ্যম বৃদ্ধি পায়।

সূর্য উপাসনা শীতকালে বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে

শীতকালে আমাদের জীবনযাত্রা প্রায়শই একটু শিথিল হয়ে আসে, যে কারণে কোনও ব্যক্তি অতি সহজেই বিষণ্ণতার কবলে পড়তে পারেন। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ঘুমানো, শারীরিক পরিশ্রম কম করা, ভারী ও মশলাদার খাবার খাওয়া, ইত্যাদি কারণে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত রোগ, মানসিক চাপ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা লাগার পাশাপাশি জ্বর, দৃষ্টির সমস্যা, জরায়ু রোগ, স্পন্ডাইলাইটিস এবং স্নায়ুতন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যার কারণেও শীতে মানসিক চাপ দেখা দিতে পারে। আপনি যদি শীতকালে এই ধরণের সমস্যাগুলির মুখোমুখি হয়ে থাকেন, তবে তাদের উপেক্ষা করবেন না।



সূর্য উপাসনা এবং সূর্য নমস্কার আপনার জন্য খুব কার্যকর হবে, যা আপনার জীবনধারাকে সুস্থ রাখবে। পুরাণে উল্লেখ করা আছে, প্রতি মাসে সূর্যের একটি নির্দিষ্ট রূপের আরাধনা করা হয়, যা সমস্ত ইচ্ছা পূরণ করে থাকে। শাস্ত্র মতে, পৌষ মাসে ভগ নামের সূর্যের পূজা করা উচিত। বিশ্বাস করা হয় যে, পৌষ মাসে ভগবান ভাস্কর এগারো হাজার রশ্মি দিয়ে নিজেকে উষ্ণ করে ঠান্ডা থেকে মুক্তি দেন, তাঁর রঙ হয় রক্তের মতো লাল। শাস্ত্রে ধন-সম্পদ, ধর্ম, যশ, জ্ঞান ও ত্যাগকে ভগ বলা হয়েছে এবং মানুষের সম্পদকে ভগবান বলে গণ্য করা হয়েছে। এই কারণেই পৌষ মাসে 'ভগ' নামে সূর্যদেবকে পরম ব্রহ্মার রূপ বলে মনে করা হয়। পৌষ মাসে সূর্যকে অর্ঘ্য অর্পণ এবং উপবাসের বিশেষ গুরুত্ব ধর্মীয় শাস্ত্রে বর্ণিত আছে।

-

আদিত্য পুরাণ অনুসারে, পৌষ মাসের প্রতি রবিবার একটি তামার পাত্রে শুদ্ধ জল, লাল চন্দন এবং লাল রঙের ফুল রেখে ‘ওম বিষ্ণুবে নমঃ’ মন্ত্রটি উচ্চারণ করে সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করা উচিত।


ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, রবিবার উপোস করে সূর্যকে তিল-ভাতের খিচুড়ি নিবেদন করলে ব্যক্তি দীপ্তিমান হন। বাল্যকাল থেকেই অবিরাম সূর্য নমস্কার ও সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করলে জীবনে চোখের সমস্যা বা হৃদরোগ, ইত্যাদির ভয় থাকে না। সূর্যের বিশেষ গুরুত্ব বিবেচনা করে, ভারতীয় জ্যোতিষশাস্ত্রে সূর্যকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছে। মানবদেহে এটি চোখ ও আত্মার রক্ষাকর্তা। পারিবারিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি পিতা এবং সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি রাজকীয় সুখ এবং আত্মসম্মানের প্রতীক। যদি কোনও ব্যক্তির কুণ্ডলীতে সূর্য শক্তিশালী হয়, তাহলে সেই ব্যক্তি নিজের পিতা, অর্থাৎ বাবার সাহায্যে সৌভাগ্য লাভ করেন। সূর্য জগৎকে আলো, জ্ঞান, শক্তি, তাপ ও ​​জীবনীশক্তি প্রদান করে এবং রোগজীবাণু  ধ্বংস করে। 

কেউ যদি প্রতি রবিবার কমপক্ষে ১০৮ বার সূর্য মন্ত্র পাঠ করেন , তাহলে সেই ব্যক্তি জীবনে সফল হন। 

সূর্য পূজার জন্য সূর্যের পবিত্র মন্ত্রটি নিম্নরূপ : 
জপকুসুম সংকাশম কাশ্যপয়ম মহাদ্যুতিম। তামোরিম সর্বপাপাপঘ্নম্ প্রাণতোস্মি দিওয়াকরম্