সংক্ষিপ্ত
নবরাত্রি উৎসব অথবা বাঙালিদের দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার ১৮ দিন পর দীপাবলি শুরু হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বরের মধ্যে দীপাবলি অনুষ্ঠিত হয়।
"দীপাবলি" নামটির অর্থ "প্রদীপের সমষ্টি"। এই দিন হিন্দুরা ঘরে ঘরে ছোটো মাটির প্রদীপ জ্বালেন। এই প্রদীপ জ্বালানো অমঙ্গল বিতাড়নের প্রতীক। দীপাবলি, বা, দেওয়ালি হল অন্যতম এক হিন্দু ধর্মীয় উৎসব। সারা বিশ্বে জুড়ে কম-বেশি এই আলোর উৎসব পালন করা হয়। আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ধনতেরাস অথবা ধনত্রয়োদশী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দীপাবলি উৎসবের সূচনা হয়। কার্তিক মাসের শুক্লা পক্ষে, দ্বিতীয়া তিথিতে ভাইফোঁটা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উৎসব শেষ হয়। নবরাত্রি উৎসব অথবা বাঙালিদের দুর্গোৎসব শেষ হওয়ার ১৮ দিন পর দীপাবলি শুরু হয়। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, মধ্য-অক্টোবর থেকে মধ্য-নভেম্বরের মধ্যে দীপাবলি অনুষ্ঠিত হয়।
কার্তিক মাসের এই সময় বাড়িঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে সারা রাত প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখলে ঘরে লক্ষ্মী আসেন বলে উত্তর ভারতীয় হিন্দুরা বিশ্বাস করেন। বাংলার দীপান্বিতা কালীপূজা বিশেষ জনপ্রিয়। এই উৎসব সাড়ম্বরে আলোর উৎসব হিসেবে পালিত হয়। ১৭৭৭ খ্রিষ্টাব্দে কাশীনাথ রচিত শ্যামাসপর্যাবিধিগ্রন্থে এই পুজোর সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায়। কথিত আছে, নদিয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় অষ্টাদশ শতকে তার সকল প্রজাকে শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করে কালীপুজো করতে বাধ্য করেন। এই উৎসবের শুরুর দিন পালন করা হয় ধনতেরাস উৎসব। ধন মানে সম্পদ আর তেরাস কথার অর্থ হল ত্রয়োদশী। কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের ১৩তম দিন পালন করা হয় ধনতেরাস।
ধনতেরাসের দিন শুধু সোনা কিনলেই হবে না, এই উৎসবের রয়েছে বেশ কিছু নিয়মও। দীপাবলির আগের দিন ধনত্রয়োদশী বা ধনতেরাস হিসেবে পালন করা হয়। এই দিন অর্থ ভাগ্য উন্নতি করতে লক্ষ্মী ও কুবের-এৎ পুজো করা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই পুজো বিভিন্ন ভাবে পালন করা হয়। এইদিনে সোনা, রূপো বা গয়না কেনার প্রচলন বেশি থাকলেও অনেকেই এই দিনে বাড়ির অন্যান্য জিনিসপত্র কেনেন। এই দিনেই কুবের তাঁর আরাধ্যা দেবী লক্ষ্মী পুজো করে ধনপতি হয়েছিলেন। সেই থেকেই বিশেষ এই তিথিতে ধনসম্পদ বৃদ্ধির আশায় পালন করা হয় ধনতেরাস।
আরও পড়ুন- ভুত চতুর্দশীতে চোদ্দ শাক ও চোদ্দ প্রদীপ, কেন এই নিয়ম, জেনে নিন গুরুত্ব ও তাৎপর্য
আরও পড়ুন- নগ্নরূপেই কেন মা কালী পূজিত হন, জেনে নিন এর আসল কারণ
আরও পড়ুন- ঘরের এই দিকে প্রতিষ্ঠা করুন দেবী লক্ষ্মীর মূর্তি, সম্পদ ঐশ্বর্যে ভরে উঠবে সংসার
এই দিনে সারা বাড়ি ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হয়। বাড়ির মূল প্রবেশদ্বারের সামনে রঙ্গোলী দিতে হয়। এছাড়া লক্ষ্মীর পাঁয়ের চিহ্ন আঁকতে হবে দেবীকে আহ্বাণ জানানোর জন্য। নিজের মনের মত করে লক্ষ্মী পুজো করতে হবে। একটি ছোট ঘটে নতুন কেনা ধাতু বা গয়না নিয়ে তাতে সামান্য চাল, সুপারী, ১৩ টি পদ্মবীজ, গঙ্গাজল, দিয়ে উপর থেকে ফুল, সোনা বা রূপোর কয়েন রাখতে হবে। যদি নতুন গয়না না থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি পুরনো গয়নাও ব্যবহার করতে পারবেন। এই পুজো বা আচার পালন করার শ্রেষ্ঠ সময় হল প্রদোষ কাল।