সংক্ষিপ্ত
বেতের ছোট চুপড়ি বা ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার ওপর দুটি কাঠের লম্বা সিঁদুর কৌটো লালচেলি দিয়ে মুড়ে দেবীর রূপ দেওয়া হত। একে বলা হত ‘আড়ি লক্ষ্মী’।
বাস্তুশাস্ত্রে, একটি বাড়িতে বস্তু এবং তাদের অবস্থানের একটি বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, একটি বাড়িতে উপস্থিত প্রতিটি বস্তুর একটি শক্তি থাকে যা একজন ব্যক্তির উপর ইতিবাচক বা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি বিশ্বাস করা হয় যে যদি একটি বাস্তু দোষ থাকে তবে সম্পন্ন করা কাজও লাইনচ্যুত হতে শুরু করে। আজ আমরা আপনাকে দেবী লক্ষ্মীকে খুশি রাখতে এবং তাঁর আশীর্বাদ বজায় রাখতে লক্ষ্মী ঠাকুরের আসনে কী রাখা উচিত তা জানাতে যাচ্ছি।
হিন্দু ধর্মে শারদ পূর্ণিমার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে প্রতি বছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে বলা হয় শারদ পূর্ণিমা। এ বছর শারদ পূর্ণিমা ৯ অক্টোবর। বলা হয়, এই দিনে চাঁদ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে থাকে। কথিত আছে এই দিনে আকাশ থেকে অমৃত বর্ষণ হয়।
শারদ পূর্ণিমা ২০২২ শুভ সময়-
হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসারে, আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের পূর্ণিমা তিথি ৯ অক্টোবর সকাল ৩.৪১ মিনিট থেকে শুরু হবে। এই তারিখটি পরের দিন ১০ অক্টোবর, ২০২২ সকাল ২.২৫ এ শেষ হবে। এ বছর শারদ পূর্ণিমা পালিত হবে ০৯ অক্টোবর।
মূর্তি
মাটির দিয়ে তৈরী ছাঁচে বা কাঠামো তৈরি করে তাতে দেবী মূর্তি তৈরি করে পূজা করা হয়।
আড়ি লক্ষ্মী
বেতের ছোট চুপড়ি বা ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার ওপর দুটি কাঠের লম্বা সিঁদুর কৌটো লালচেলি দিয়ে মুড়ে দেবীর রূপ দেওয়া হত। একে বলা হত ‘আড়ি লক্ষ্মী’।
কলার বের
কলার বাকলকে গোল করে নারকেলের নতুন কাঠি দিয়ে আটকানো হয়। তাতে সিঁদুর দিয়ে বাঙালি স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকা হয়। কলার বাকল দিয়ে তৈরী এই চোঙাকৃতি ভিতরে নিচুনি রাখা হয়। কাঠের আসনের উপরে লক্ষ্মীর পা অঙ্কিত আলপনার উপরে ৯টি চোঙা রাখা হয়। এই ৯টি বাকলের মধ্যে পঞ্চশস্য দেওয়া হয় সর্বশেষে শীষযুক্ত নারকেল রেখে লাল চেলি দিয়ে ঢেকে বউ সাজিয়ে লক্ষ্মী কল্পনা করা হয়।
সপ্ততরী
নবপত্রিকা বা কলার পেটোর তৈরি নৌকা এই পূজার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই নৌকা এখনও বহু গৃহস্থেই তৈরি হয়ে থাকে। তবে বাজারেও এখন কিনতে পাওয়া যায় কলার পেটো। একে সপ্ততরী বলা হয়। এই তরীকে বাণিজ্যের নৌকা হিসাবে ধরা হয়। তাতে অনকেই টাকা -পয়সা, চাল, ডাল, হরিতকি, কড়ি, হলুদ সাজিয়ে রাখেন।
লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়া মাটির ঘট
লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়া মাটির ঘটে চাল বা কখনো কখনো জল ভরে সেটিকে লক্ষ্মী কল্পনা করে পূজা করা হয়।
সরায় পটচিত্র
অনেক বাড়িতেই পূর্ববঙ্গীয় রীতি মেনে সরার পটচিত্রে পূজা করা হয়। এই সরাতে লক্ষ্মী, জয়া-বিজয়া সহ কয়েকটি বিশেষ পুতুলকে চিত্রায়িত করা হয়। লক্ষ্মী সরাও হয় নানা রকম, যেমন ঢাকাই সরা, ফরিদপুরি সরা, সুরেশ্বরী সরা এবং শান্তিপুরী সরা। নদিয়া জেলার তাহেরপুর, নবদ্বীপ এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্মীসরা আঁকা হয়। তবে অঞ্চল ভেদে লক্ষ্মী সরায় তিন, পাঁচ, সাত পুতুল আঁকা হয়। এতে থাকে লক্ষ্মী, জয়া বিজয়া সহ লক্ষ্মী, রাধাকৃষ্ণ, সপরিবার দুর্গা ইত্যাদি। ফরিদপুরের সরায় দেবদেবীরা সাধারণত একটি চৌখুপির মধ্যে থাকেন। আবার সুরেশ্বরী সরায় উপরের অংশে মহিষমর্দিনী আঁকা হয় আর নিচের দিকে থাকেন সবাহন লক্ষ্মী।
আরও পড়ুন-
উভয় বঙ্গেই বৃষ্টির পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া দফতর, তাহলে কি দুর্গাপুজোর মতোই মাটি হবে লক্ষ্মীপুজোর আমেজ?
মা-মেয়ের সঙ্গে ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই কি হরিদেবপুরের অয়ন মণ্ডলকে খুন করে দেহ লোপাটের চেষ্টা বান্ধবীর বাবার?
লক্ষ্মী পুজোর সঙ্গে কীভাবে জড়িয়ে রয়েছে জেগে থাকার বার্তা? জানুন 'কোজাগরী'-র প্রকৃত অর্থ