সংক্ষিপ্ত
বান্ধবী প্রীতি বাড়িতে না থাকাকালীন উপস্থিত হয়েছিল অয়ন। তখনই তাকে জড়িয়ে ধরেন প্রীতির মা রুমা। দুটি সম্পর্ক সমান তালে এগোতে গিয়েই কি প্রাণ খোয়াতে হল হরিদেবপুরের অয়ন মণ্ডলকে?
হরিদেবপুরে অয়ন মণ্ডল খুনে একের পর এক বেরিয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। ততই জোরালো ভাঁজ পড়ছে পুলিশের কপালে। খুনের কাণ্ডটি কি অয়ন মণ্ডলের বান্ধবী প্রীতির মা রুমা জানা-ই করিয়েছিলেন? পুলিশ অন্তত এমনটাই সন্দেহ করছে বলে সূত্রের খবর। খুন করার পর কীভাবে ওই যুবকের দেহটি লোপাট করা হবে, সেই পরিকল্পনা নিখুঁতভাবে সাজিয়ে দিয়েছিলেন বান্ধবীর বাবা দীপক জানা। পুরো পরিবার ও বাকি ধৃতদের দফায় দফায় জেরা করে এই তথ্য উদ্ধার করেছে হরিদেবপুর থানার পুলিশ।
খুনের অপরাধের ভিত্তিতে আগেই অয়নের বান্ধবী প্রীতি, তাঁর মা রুমা জানা এবং ভাইকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাদের জেরা করেই বান্ধবীর বাবা ও অয়নের মৃতদেহ বহনকারী গাড়িচালককে গ্রেফতার করা হয়। ওড়িশার জাজপুর থেকে অয়নের বান্ধবীর ভাইয়ের এক বন্ধুকেও আজ গ্রেফতার করে পুলিশ। ঘটনার দিন সেই বন্ধু ওই মালবহনকারী গাড়িটি ভাড়া করে নিয়ে এসেছিল বলে খবর।
ত্রিকোণ প্রেমের বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিল অয়নের এক বন্ধু। সে জানায়, শুধুমাত্র বান্ধবীই নয়, বান্ধবীর মায়ের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল অয়ন মণ্ডলের। অয়নের বাবা অমর মণ্ডলও দাবি করেছিলেন যে, ওই মা-মেয়ে, দু’জনের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠতার সম্পর্ক ছিল তাঁর ছেলের।
এবার সেই তথ্যে শিলমোহর দিল পুলিশ। তদন্তে স্পষ্ট উঠে এসেছে অদ্ভুত ত্রিকোণ প্রেমের প্রমাণ।
পুলিশ সূত্রে খবর, প্রীতি জানার সঙ্গে আট বছর প্রেমের সম্পর্ক ছিল অয়ন মণ্ডলের। একদিন সে বাড়ি না থাকাকালীন সেখানে গেছিল অয়ন। সেদিন অয়নকে বাড়ির ভেতর ঢুকিয়ে জড়িয়ে ধরেন বান্ধবীর মা রুমা জানা। ‘অয়নকে তিনি বলেন, এক যাত্রায় পৃথক ফল হবে কেন? কেউ জানতে পারবে না। এগিয়ে এসো।’ তারপর থেকেই বান্ধবীর মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর প্রীতি বাড়িতে না থাকলে সেখানে যেত অয়ন। আবার প্রীতির সঙ্গেও সমান তালে সম্পর্ক বজায় রেখে চলত এই যুবক। দশমীর রাতে বান্ধবী প্রীতির সঙ্গে অপ্রীতিকর অবস্থায় দেখে তাকে ফেলেন প্রীতির মা। তাঁর সঙ্গেও অয়নের সম্পর্ক ছিল বলে মেয়ের প্রেমটি তিনি মেনে নিতে পারেননি। তখনই গিয়ে নিজের ছেলেকে ডেকে আনেন রুমা জানা। তৎক্ষণাৎ অয়নকে ইট, বাঁশ, রড দিয়ে মারধর করে খুন করে ফেলা হয়।
খুনের পর অয়নের দেহ লোপাটের বুদ্ধি দেয় বান্ধবীর বাবা দীপক জানা। তারপর প্রীতির ভাইয়ের দুই বন্ধুকে ডেকে এনে বাড়ির সংলগ্ন একটি নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাট থেকে ত্রিপল নিয়ে আসা হয়। সেটা দিয়ে আপাদমস্তক ঢাকা হয় অয়নের দেহ। তারপর কুঁদঘাট থেকে পণ্যবাহী গাড়ি ভাড়া করে এনে হরিদেবপুর থেকে মগরাহাটে অবদি নিয়ে যাওয়া হয় সেই মৃতদেহ। কাটপোলের কাছে করিমাবাদ এলাকায় মৃতদেহ ফেলে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অয়নের মোবাইল সুইচ অফ করে ফেলে দেওয়া হয় জলে। খুনটি করেই ওড়িশায় নিজের আত্মীয়দের বাড়িতে গিয়ে গা ঢাকা দেয় নিহতের বান্ধবীর ভাইয়ের বন্ধু। পুলিশ তাকে আজ গ্রেফতার করে নিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন-
লক্ষ্মী পুজোর সঙ্গে কীভাবে জড়িয়ে রয়েছে জেগে থাকার বার্তা? জানুন 'কোজাগরী'-র প্রকৃত অর্থ
হরিদেবপুরে নিখোঁজ যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বান্ধবী এবং তাঁর মা ও ভাইকে
বান্ধবীর মায়ের সঙ্গেও সম্পর্কে ছিলেন হরিদেবপুরের অয়ন? মত্ত অবস্থায় বান্ধবীকে মারধর করছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ