সংক্ষিপ্ত

  • বিতর্কে জড়ানোটা যেন অভ্যাস করে ফেলেছেন
  • মাত্র ২ বছর আগে তারকাদের জগতে আবির্ভাব
  • কিন্তু আলটপকা মন্তব্য করে বারবার ডাকছেন বিপদ
  • এবার নোবেল ম্যানের বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর

হয়ে গেল! নোবেল ম্যান-এর আপাতত ভারতে পা রাখাটা আপাতত অনিশ্চিত। কারণ, গায়ক মইনুল হাসান মানে যাঁকে দুই বাংলা নোবেল ম্যান বলে জানে, তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০০, ৫০৪, ৫০৫ এবং ১৫৩ নম্বর ধারাগুলি এই এফআইআর-এ সংযুক্ত করা হয়েছে। তবে, এপার বাংলায় নয় এই এফআইআর দায়ের হয়েছে ত্রিপুরায়। ফলে ত্রিপুরা পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে ভারতে পা রাখলেই হয়তো গ্রেফতার করা হতে পারে নোবেল-কে। 

আরও পড়ুন- ভেঙে গেল লাখো-লাখো তরুণীর হৃদয়, গোপন বিয়ের কথা ফাঁস করলেন নোবেল

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে নিজের ফেসবুক পেজে তীব্র কটাক্ষ করেন নোবেল ম্যান। এতে এপার বাংলায় বিপুল প্রতিক্রিয়া হয়। বহু ভারতীয় নোবেলের ফেসবুক পেজে তাঁকে ট্রোল করেন। অনেকে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুক ও টুইটারে পোস্ট করে তীব্র ভাষায় নোবেলকে গালিগালাজ করে। রাতারাতি নোবেলের সেই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। নোবেল লিখেছিলেন ' প্রধানমন্ত্রী মোদীর কী স্ক্যান্ডাল হবে, স্ক্যান্ডাল তো হবে তাঁর মতো জনপ্রিয় তারকার'। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এভাবে তুলনা কোনও ভারতীয় মেনে নিতে পারেননি। স্বভাবতই তীব্র বিদ্বেষাগারের শিকার হন নোবেল। বাংলা বিনোদন চ্যানেলের রিয়্যালিটি শো থেকে দুই বাংলার জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছনা নোবেলকে অনেক প্রশ্ন করেন যে তিনি কত বড় বিশ্বাসঘাতক? কারণ যে দেশ তাঁকে আজ এই জনপ্রিয়তার শিখরে নিয়ে গেল, সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে তিনি ছোট করছেন। বহু ভারতীয় এই পোস্টের পর নোবেলকে বয়কট করার ডাক দেন। যাতে তাঁকে কোনওদিন আর ভারতে ঢুকতে না দেওয়া হয় তার জন্য সওয়াল করেন বহু মানুষ। 

আরও পড়ুন জানেন পৃথিবীর কোন দেশে ভারতীয় ক্রিকেট দল কোনও সমর্থন পায় না,জানালেন রোহিত শর্মা

নোবেল অবশ্য পরে নিজের ফেসবুক পেজে দুঃখিত শব্দ লিখে দায় সারার চেষ্টা করেন। সেই সঙ্গে তিনি জানান, 'ভুলে গিয়েছিলাম ভারত আমার দেশ নয়, তাই তোমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে একটু তামাশা করে ফেলেছিলাম।' নোবেলের এই 'তামাশা' শব্দ নিয়েও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে নেটদুনিয়ায়। 'তামাশা' বলে একটি গান নিয়ে ইউটিউব চ্যানেলে হাজির হচ্ছেন নোবেল। এর জন্য তিনি এমন আক্রমণাত্মক মার্কেটিং কৌশল নিয়েছেন যে কাউকে ছাড়ছেন না। ১৯ মে তিনি ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন। সেখানে আবার তাঁর সাম্প্রতিক ফ্লপ গানের তালিকায় শান্তনু মৈত্র এবং অনুপম রায়ের দুটি গানের নাম উল্লেখ করেন এবং সেই সঙ্গে বাংলাদেশের তাবড় তাবড় লেজেন্ড গায়কদের চ্যালেঞ্জ করেন। ফেসবুক পেজে অত্যন্ত ঔদ্ধত্ব্য নিয়ে তিনি ঘোষণা করেন, গত ২০ বছরে লেজেন্ডরা কোনও গান-ই তৈরি করতে পারেনি, কীভাবে হিট গান বানাতে হয় তা তিনি সবাইকে শিখিয়ে দেবেন। এতে এবার বাংলাদেশেও বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে। 

আরও পড়ুন- সিঙ্গাপুরে আটকে থাকা বাংলার শ্রমিকদের করলেন উদ্ভুদ্ধ, 'আমার তোমার সবার কথা'-য় মন খুললেন ঋতুপর্ণা

বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ নোবেলকে তুলোধনা করেন। ফেসবুক পেজে নেগেটিভ ফিডব্যাক এবং কমেন্ট পড়তে থাকে। এদিকে শান্তুনু মৈত্র ও অনুপম রায়ের নাম এতে টেনে আনায় নোবেলকে তুলোধনা করেন ভারতীয় সঙ্গীতপ্রেমীরাও। তাহসিন এন রাকিব নামে বাংলাদেশের এক ইউটিউবারের সঙ্গেও ফেসবুক লাইভে বিতর্কে জডান নোবেল। একটানা ঔদ্ধত্ব্য পূর্ণ আচরণ, কমেন্ট, অন্যদেশের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য স্বাভাবিকভাবে নোবেলকে ঘিরে এক অশান্তকর পরিবেশ তৈরি করে। বাংলাদেশের নিরাপত্তা এজেন্সি রাব-এর এক কর্মীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন নোবেল। সমস্ত বিতর্ক নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে রাব নোবেলকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। কেন এমন আপত্তিকর এবং উসকানিমূলক মন্তব্য তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় করে চলেছেন তা নিয়েও তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। রাব মূলত জঙ্গি কার্যকলাপ এবং হিংসাত্মক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কাজ করে। নোবেলের আচরণও তাদের মধ্যে এক নতুন বিপদের ইঙ্গিত তৈরি করেছিল। যার জন্য নোবেলকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে, রাব-এর কাছে নিতের যাবতীয় বিতর্কের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন নোবেল এবং তাঁর যাবতীয় পোস্ট শুধুমাত্র নতুন গান তামাশা-কে প্রোমোট করার জন্য একটা মার্কেটিং কৌশল বলেও জানান। বাংলাদেশের নামি দৈনিক প্রথম আলো-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও নোবেল জানিয়েছিলেন তামাশা নামে নতুন গানের প্রোমোশনের জন্য তিনি ফেসবুকে বিতর্ক তৈরি করেছেন। ইদের আগেরও দিনও একটি ভিডিও পোস্ট করে যাবতীয় বিতর্কের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন নোবেল। কিন্তু, যে নোবেল বছর দুয়েক আগে মানুষের নয়নের মণি হয়ে উঠেছিলেন তাঁর গানের জন্য, আজ সেই নোবেল সকলের কাছে ঘৃণার পাত্রে পরিণত হচ্ছেন। আক্রণাত্মক বাজারি কৌশল নিতে গিয়ে নিজেকে অতিরিক্ত বাজারি করে ফেললেন কি নোবেল? এখন এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।