সংক্ষিপ্ত
লাদাখ কি প্রভাব ফেলবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের রসায়নেও
বাংলাদেশি বিদেশমন্ত্রীর সাম্প্রতিক দাবির পর সেইরকমই আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে
গালওয়ান নিয়ে ঢাকাকে কিছুই জানানো হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে
এই দাবি সঠিক নয় বলেই জানাচ্ছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ
পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ভারত-চিন উত্তেজনা নিয়ে এবার কি খারাপ হবে ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কও? এখনও অবধি ভারত-চিন উত্তেজনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ঢাকা। কেন এই বিষয় নিয়ে তারা নীরব, এই নিয়েই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।
শনিবার এই বিষয়ে বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী আবদুল মোমেন দাবি করেছিলেন, গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের বিষয়ে নয়াদিল্লি তাঁদের মৌখিক বা লিখিত - কোনওভাবেই কিছু জানায়নি। তাই এই নিয়ে তাঁরা মন্তব্যও করেননি। এর একদিন পর, রবিবারই ভারতের বিদেশ দপ্তরের এক শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা এক সর্ববারতীয় সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশি বিদেশমন্ত্রীর এই দাবি ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশকে। এমনকী ওই কর্তা দাবি করেছেন, বাংলাদেশ নাকি এই ইস্যুতে ভারতের পক্ষে থাকারই কথা জানিয়েছিল।
শুক্রবার আব্দুল মোমেন ভারত-চিন উত্তেজনার বিষয়টি লঘু করে বলেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাফ জানিয়েছেন 'ভারতীয় ভূখণ্ডের এক ইঞ্চিও কেউ দখল করেনি', কাজেই এই বিষয়ে তাঁদের কিছু বলার নেই। ১৫ জুন গ্যালওয়ান উপত্যকার রক্তাক্ত সংঘর্ষে ভারতের কতজন সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে, তাই নিয়ে ভারত সরকার ঢাকাকে কিছু জানায়নি বলেই তাঁরা সেই বিষয়ে কোনও সরকারি বিবৃতি দেননি, বলেও দাবি করেছেন তিনি। বাংলাদেশি বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ভারত বা চিন কেউই এই বিষয়ে বাংলাদেশের সমর্থন চায়নি। কোনও পক্ষই তাঁদের কিছু বলেনি, তাই তাঁরা বিষয়টি সম্পর্কে 'কিছুই জানেন না' বলেও জানান তিনি।
গত মে মাসের শুরু থেকেই লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় সীমান্ত নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছিল। তা চরমে পৌঁছায় গত ১৫ জুন গালওয়ানের রক্তাক্ত সংঘর্ষে, যেখানে বারতের ২০ জন সেনা সদস্য শহিদ হয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছিল, আমেরিকা, ব্রিটেন, রাশিয়া, জার্মানি এবং প্রতিবেশি কয়েকটি দেশকে এই বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে।
গত সপ্তাহেই বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-কে ফোন করেছিলেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সেই ফোনালাপে কাশ্মীরের প্রসঙ্গ তোলার দাবি করা হলেও, ঢাকা তা পুরোপুরি অস্বীকার করেছিল। কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের মতে ইসলামাবাদের এই ফোনের পিছনে আসলে ছিল বেজিং-এর চাপ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারত-কে একঘরে করতে চাইছে তারা। ইমরান-হাসিনা'র সেই ফোনালাপ নিয়ে সরকারিভাবে কোনও বিবৃতি না দেওয়া হলেও, বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছিল নয়াদিল্লির। রাম মন্দির নির্মাণের মতো পদক্ষেপ ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে বলেও বিবৃতি দিয়েছিলেন বাংলাদেশি বিদেশমন্ত্রী। একের পর এক এই পদক্ষেপে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগছে, তবে কি বাংলাদেশেও প্রভাব বাড়ছে ড্রাগনদের?