সংক্ষিপ্ত

একটা সময় টলিউডে তাঁরা ছিলেন জোড়ি নাম্বার ওয়ান। টলিউডের হট অ্যান্ড মোস্ট হ্যাপেনিং কাপল ছিলেন প্রসেনজিৎ ও দেবশ্রী। প্রত্যাশিতভাবেই তাঁরা দুজনেই পূর্ণতা দিয়েছিলেন তাঁদের সম্পর্ককে। কিন্তু, যে সম্পর্কের পূর্ণতার তিতিক্ষা সকলে তাঁদের প্রিয় করে তুলেছিল, সেই সম্পর্ক যেন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছিল। সেই সম্পর্ক নিয়ে অনেকদিন পরে আবেগে ভাসলেন টলিউডের এই সময়কার ম্যাটিনি আইডল। 

কাছের মানুষ কেমন? -এই প্রশ্ন নিয়ে এখন আগামী ছবির প্রোমোশনে ব্যস্ত প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায় এবং দেব। কাছের মানুষ নিয়ে অনেক কথাই বলতে শোনা যাচ্ছে এই দুজনকে। একাধিক পাবলিসিটি স্টান্টও তৈরি করেছেন দুজনে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার প্ল্যাটফর্মে বারবার উঠে আসছে এমনই সব প্রচারের কাহিনি। দেবের আব্দারে এবার কাছের মানুষ নিয়ে প্রোমোশনে স্ট্যান্ড-আপ কমেডি করে ফেললেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায়। আর সেখানেই হাসতে-হাসতে মজার ছলে মেলে ধরলেন এমন কাহিনি যা স্মৃতি উসকে দিল অভিনেতার অতিত জীবনের। সেই সঙ্কটময় দিনে তাঁর কাছের মানুষ কে ছিলেন, তাঁর সঙ্গেও পরিচয় করিয়ে দিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। আর কাহিনি সারমর্মে বোঝালেন এভাবে ফিরে আসা যায়। 

বাংলা চলচ্চিত্রে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্য়ায়ের আগমন শিশু শিল্পী হিসাবে। কারণ, তাঁর পরিবারের সঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্র এবং বলিউড যোগের কাহিনি সর্বজন বিদিত। স্বভাবতই ছোট থেকে প্রসেনজিৎ-এর অভিনয় প্রতিভা সকলেরই নজর কেড়েছিল। টলিউডের আগামী দিনের যে স্টার হতে চলেছেন বিশ্বজিৎ-এর পুত্র তা সকলেই সেই সময় থেকে বলতেন। বাস্তবে দেখাও গিয়েছিল যে কৈশোরে যখন সত্যি সত্যি নায়ক হিসাবে টলিউডে অভিষেক ঘটালেন প্রসেনজিৎ তখন তিনি রীতিমত হার্টথ্রব তরুণীদের। এমনই সময় পরিচয় টলিউডের উঠতি নায়িকা দেবশ্রী রায়ের সঙ্গে। বন্ধুত্বের সম্পর্কটা যে কবে একটা পারস্পরিক নির্ভরতায় জায়গায় পৌঁছেছিলো তা দুজনের কেউই আন্দাজ করতে পারেননি। বুঝেছিলেন এই সম্পর্ক সহজে হারিয়ে যাওয়ার নয়। আর সম্পর্কের এক টানকে সাড়া দিয়ে চারহাত এক করেছিলেন দুজনেই- প্রসেনজিৎ ও দেবশ্রী। 

বিয়ের পিড়িতে বসতে দুজনে যতটা সময় নিয়েছিলেন, ঠিক তার থেকে বিপরীত ছিল তাঁদের আলাদা হয়ে যাওয়াটা। মুহূর্তের মধ্যে যেন ভেঙে গিয়েছিল সেই সম্পর্ক। এই ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক তাঁর মনে কতটা প্রভাব ফেলেছিল- সে প্রসঙ্গে হাসির ছলেই কাছের মানুষের প্রোমোশনে তুলে ধরেছেন প্রসেনজিৎ। বাংলা ছবির এই মহাতারকার ব্যক্তিগত জীবনের এই সঙ্কটের সময় নিয়ে সে সময় বহু রসালো গল্প তৈরি হয়েছিল। এমনকী, বর্তমান সময়েও অনেকেও আজ প্রসেনজিৎ-দেবশ্রীর ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক নিয়ে চর্চা করেন। আজও মিডিয়ার পাতায় সেগুলো খবরও হয়। কিন্তু, এরমধ্যে কতটা সত্যি তা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠেছে। প্রসেনজিৎ এবং দেবশ্রী যে তাঁদের ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেননি তা নয়, কিন্তু  সেটা ছিল দুই পাবলিক ফিগারের ভদ্রতার স্বাভাবিক ছন্দ বজায় রেখে যেটুকু কথা বলা যায় সেটুকু। এটাই স্বাভাবিক। কারণ, যে কোনও মানুষ-ই তাঁর ব্যক্তি জীবনের ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক নিয়ে নিশ্চয় ফলাও করে পাবলিক প্লেসে ঢাক পেটান না। 

প্রথম বিবাহ ভেঙে যাওয়ার পরের দিনগুলো কতটা ভয়ানক হয়ে দেখা দিয়েছিল- সেটাই এদিন মেলে ধরেছেন প্রসেনজিৎ। তিনি জানিয়েছেন, দেড় বছর তিনি বাড়ি থেকে বের হননি। তাঁর ফ্ল্যাটের বাইরে পা রাখতেন না। সেই সময় রোজ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যেতেন পরিচালক অভিজিৎ গুহ, যাকে বাংলা চলচ্চিত্র মহল রানাদা নামে চেনে। প্রসেনজিৎকে নানাভাবে মোরালি বুস্ট করার নাকি চেষ্টা করতেন অভিজিৎ। দেড় বছরের মাথায় প্রসেনজিৎ নিজেই নাকি বুঝতে পারেন, এভাবে গৃহববন্দি জীবনের কোনও অর্থ নেই। তাঁকে সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের কাছে ফিরে যেতে হবে। এরপরই প্রসেনজিৎ দেড় বছরের স্বেচ্ছা গৃহবন্দি দশা থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। আর প্রকাশ্যে এসেই ৯টি ছবি সাইন করেছিলেন। এর জন্য অভিজিৎ গুহকে আজও কৃতিত্ব দেন প্রসেনজিৎ। তিনি মনে করেন ওই দিন যেভাবে অভিজিৎ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাতে তিনি এক প্রকৃত কাছের মানুষের ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাই প্রসেনজিৎ-এর কাছে কাছের মানুষ মানে এমন একজন যিনি সব বাধা ঠেলে ফের ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করেন। দেব ও প্রসেনজিৎ-এর আগামী ছবি কাছের মানুষ-ও তো সেই কথাই বলছে।স্ট্যান্ড আপ কমেডি স্টান্টের মাধ্যমে সে কথাও বুঝিয়ে দিলেন প্রসেনজিৎ।