সংক্ষিপ্ত
ভারতকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়ে সেরার সেরা তকমা যাঁরা ছিঁনিয় এনেছেন বারে বারে, গর্বিত করেছেন ভারতকে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কান্ডারি হলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর। যাঁর কণ্ঠে স্বয়ং সবস্বতীর বাস বললে খুব একটাস ভুল বলা হবে না।
লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar), এক কথায় বলতে গেলে এই নাম সিনে দুনিয়া তথা ভারতের শিল্প ও সংস্কৃতির এক স্বর্ণযুগ অধ্যায়, যেখানে পরতে-পরতে জড়িয়ে রয়েছে সুরেলা ইতিহাস (Indian History)। ভারতকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিয়ে সেরার সেরা তকমা যাঁরা ছিঁনিয়ে এনেছেন বারে বারে, গর্বিত করেছেন ভারতকে, তাঁদের মধ্যে অন্যতম কান্ডারি হলেন সুর সম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকর (Lata Mangeshkar)। যাঁর কণ্ঠে স্বয়ং সবস্বতীর বাস বললে খুব একটুও ভুল বলা হবে না। ভারতের সেই নাইটেঙ্গেল এক সময় কাজ শুরু করেছিলেন মাত্র ২৫ টাকার বিনিময়। তাঁর কণ্ঠ যা দেশের অমূল্য সম্পদে পরিণত হয়, গুণীজনদের চোখে পড়তে খুব একটা সময় নেয়নি।
মান-অভিমান ভুলে কেবল কাজ ভালোবেসে যে সব কিছুকে পেছনে ঠেলে সরিয়ে দেওয়া যায়, তেমনই শিষ্টাচার কাজের প্রতি অগাধ ভালবাসা ও শ্রদ্ধা না থাকলে খুব একটা চোখে পড়ে না। নানান কারণ বশত ফিল্মিস্থানের সঙ্গে মনোমালিন্য, যার ফলে সেখানে গান গাইতে পারবেন না লতা (Lata Mangeshkar), এমনটাই ধারনা ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের (Hemanta Mukherjee), এদিকে আনন্দমঠ তখন তৈরি হচ্ছে, বন্দে মাতরম গানটির জন্য একমাত্র পছন্দ লতা মঙ্গেশকরকে, কিন্তু তাঁর উত্তর জানা ছিল সকলের। কিন্তু সকলকে অবাক করে দিয়ে তিনি রাজি হয়ে গিয়েছিলেন, টানা তিন দিনের রিহার্সল দিয়ে অবশেষে ২০ থেকে ২১ টেকে গানটি রেকর্ড করা হয়, ছিল না কোনও রাগ, ছিল না ক্লান্তি, গানকে ঠিক একটাই শ্রদ্ধা ভক্তি করেন এই শিল্পী, যা বারে বারে বিভিন্ন সুরকার থেকে গায়ক গায়িকার আত্মকথায় উঠে আসে।
আরও পড়ুন- Deepika Padukone On COVID 19: মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে একাধিকবার সরব দীপিকা
লতা মঙ্গেশকরের প্রথম নাম হেমা। ১৯২৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মারাঠি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লতা। একটি পত্রিকার খবর অনুযায়ী তার বাবার নাম দীননাথ মঙ্গেশকর, যিনি একজন নাট্য অভিনেতা ও গায়ক ছিলেন। আগের নাম হেমা থাকলেও বাবার "ভাব বন্ধন" নাটকে "লতিকার" চরিত্রে প্রভাবিত হয়ে হেমার নাম বদল করে রাখা হয় লতা। লতা ১৯৪৪ সালে মারাঠি ছবি 'কিটি হাসাল' এর জন্য প্রথম গান গেয়েছিলেন। তার আগে মঞ্চে উপস্থিতি দেখা যেত লতা মঙ্গেশকরের। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম ভারতীয় হিসেবে রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারে ভূষিত করে। লতা মঙ্গেশকরের অবদানের জন্য ২০০১ সালে তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয় ভারতের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন, এম. এস. সুব্বুলক্ষ্মীর পর এই পদক পাওয়া তিনিই দ্বিতীয় সঙ্গীতশিল্পী। ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার লতা মঙ্গেশকরের গুণমুগ্ধ হয়ে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাবে ভূষিত করে। মোট ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৫টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার, ৪টি শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ২টি বিশেষ ফিল্মফেয়ার পুরস্কার, ফিল্মফেয়ার আজীবন সম্মানা পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। আর সঙ্গীত জগতে তাঁর অবদান, এক কথায় একটি অধ্যায়, যা আজীবন শিল্পজগত ও মানুষের মমনে অতোপ্রতভাবে জড়িয়ে থাকবে।