সংক্ষিপ্ত

বিলেতে কামাল করলেন শতায়ু বৃদ্ধ

বাগানে হেঁটেই তুললেন ৬০ হাজার পাউন্ড

প্রতিদিন ১০০ পাক হাঁটছেন তিনি

গোটা রমজান মাস এভাবে হেঁটেই যাবেন

নিজের জন্ম শতবর্ষ পালন করার ঠিক আগে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ব্রিটিশ সেনানায়ক ক্যাপ্টেন টম মুর প্রায় কুড়ি মিলিয়ন পাউন্ড বা ২০০ কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের বা এনএইচএস-এর হাতে। সাম্প্রতিককালে কোনও ব্যক্তিবিশেষ এত বিপুল পরিমাণ অর্থ স্বাস্থ্য পরিষেবায় দান করেননি। তাঁর এই দানে অনুপ্রাণিত হয়ে এবার এগিয়ে এসেছেন আরও এক শতায়ু, তিনি আবার বাঙালি। লকডাউন বিধিনিষেধের মধ্যেই পবিত্র রমজান মাসের উপবাসও চলছে, তারমধ্য়েই শুধু মাত্র বাড়ির বাগানে হেঁটেই কোভিড-১৯ ক্ষতিগ্রস্থদের অর্থ সংগ্রহের জন্য তিনি ৬২০০০ পাউন্ড অর্থ সংগ্রহ করে ফেলেছেন।

পূর্ব লন্ডনে তাঁর বাড়ির সঙ্গে লাগোয় এক বিশাল বাগান রয়েছে দবিরুল চৌধুরির। দুই প্রান্তের দূরত্ব ৮০ মিটার। সেই বাগানেই দিনে ১০০বার করে চক্কর কাটছেন শতায়ু দবিরুল। আর তিনি যত হাঁটছেন, তত ব্রিটিশ বাংলাদেশিরা তাঁর 'জাস্ট গিভিং' পেজে অর্থ দান করছে। যা তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশী টেলিভিশন 'চ্যানেল এস'-এর কাছে। গোটা রমজান মাসে পারিবারিক প্রতিশ্রুতি হিসাবে কোভিড-১৯ সংকটের জন্য সংগৃহিত অর্থ তারা পৌঁছে দেবে ব্রিটেন ও বাংলাদেশের অভাবীদের কাছে।

প্রথমে তাঁর লক্ষ্য ছিল মাত্র ১০০০ পাউন্ড সংগ্রহ। যা বলতে গেলে মুহূর্তেই হয়ে গিয়েছিল। তারপর এই সাফল্যে উৎসাহিত হয়ে তিনি এখন ঠিক করেছেন, গোটা রমজান মাস ধরেই এইভাবে হেঁটে টাকা তুলবেন তিনি। জানিয়েছেন, 'আমি হাঁটতেই থাকবো, প্রয়োজনে একশো বারেরও বেশি। আমি নিজে গাড়ি চালিয়ে অন্যান্য নেতাদের নিয়ে ১৯৭১ সালে প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধের প্রচারের জন্য ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছি। আজ করোনাভাইরাসের এই যুদ্ধে আবারও মাঠে নেমেছি, পাশে চাইছি সবাইকে'।

১৯৪০ সালের ১ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের অসমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। ১৯৫৭ সালে ইংরাজি সাহিত্য অধ্যয়নের জন্য লন্ডনে পাড়ি দেন। পরবর্তীকালে কবি হিসাবেও নাম করেছিলেন। তাঁর বেশ কয়েকটি কবিতার বই রয়েছে। চ্যানেল এস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দবিরুল চৌধুরী ব্রিটিশ বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের অন্যতম 'সম্মানিয় ব্যক্তি'। তিনি এই উদ্যোগে যুক্ত হওয়ায় এই সম্প্রদায়ের অনেকেই অনুদানে এগিয়ে এসেছেন। পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে তার বিশাল প্রভাব রয়েছে।

তাঁর পুত্র আতিক চৌধুরী বলেছেন, 'সমস্যা হ'ল এখন আমাদের বাবাকে থামানোর জন্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। কারণ তিনি হাঁটা চালিয়েই যেতে চান। তবে বাংলাদেশের মতো জায়গায় লোকে এক সপ্তাহ বা দুই সপ্তাহ কাজ না করলে তাদের অনাহারে থাকতে হয়। তাই তার বাবার অনুদানটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।