সংক্ষিপ্ত

করোনাতেই কি মৃত্য়ু হবে আপনার

রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো ঠিক কী কী

বয়স, লিঙ্গ আর কী কী গড়ে দেয় পার্থক্য

কী বলছে সমীক্ষার ফল

ভারতে গত কয়েকদিন ধরে একটানা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেরই মনে প্রশ্ন জাগছে, 'করোনাতেই কি আমার মৃত্য়ু' হবে? প্রতি ব্যক্তি অনুসারে করোনভাইরাস সংক্রমণের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি আলাদা আলাদা হলেও, একটি বৃহত আকারের সমীক্ষার মাধ্যমে গবেষকরা চেষ্টা করেছেন বয়স, লিঙ্গ এবং ডায়াবেটিসের মতো অন্যান্য অসুস্থতার মতো বিভিন্ন বিষয় খুঁজে বের করতে, যেগুলির জন্য করোনাভাইরাসে মৃত্য়ুর ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। সেই সমীক্ষার ফল কিন্তু অনেকটাই নিশ্চিতভাবে বলে দিতে পারে করোনাভাইরাসে আপনার মৃত্যুর ঝুঁকি আছে কি নেই।

সমীক্ষাটি অবশ্য ভারতে হয়নি। হয়েছে ব্রিটেনে, করেছেন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। বিশ্বে সবচেয়ে পুরনো মেডিকাল জার্নাল, ব্রিটিশ মেডিকাল জার্নালে তাঁরা সেই সমীক্ষার ফল ও সেই সম্পর্কে তাঁদের মতামত প্রকাশ করেছেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ এপ্রিলের মধ্যে ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ডের ২০৮ টি হাসপাতালে ভর্তি থাকা ২০,১৩৩ জন রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। যা গবেষণাটি প্রকাশের সময় ব্রিটেনের হাসপাতালে ভর্তি মোট কোভিড রোগীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ।

তাঁরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে ভর্তি অর্থাৎ যাদের অবস্থা গুরুতর হয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৭৩ বছরের উপরে এবং বেশিরভাগই পুরুষ।
তবে সবচেয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি যাদের ভেন্টিটর অর্থাৎ যান্ত্রিক ভাবে অক্সিজেন চলাচলের প্রয়োজন হয়। ব্রিটেনের এই রোগীদের মধ্যে ৩৭ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে আর মাত্র ১৭ শতাংশ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আরও ৪৬ শতাংশ সমীক্ষার সময় হাসপাতালে লড়াই করছিলেন।

এই সমীক্ষা অনুসারে অনুসারে মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ এবং তাতে মৃত্যুর সম্ভাবনা বেশি। বিশেষ করে যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি। এছাড়া কোভিড-১৯'এ মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে ওবেসিটি বা অতিরিক্ত স্থূলতা এবং সেইসঙ্গে হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, যকৃত কিংবা কিডনি-র সমস্যা। সেইসঙ্গে প্রদাহ রোগব্যাধি-ও মৃত্যুর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

তবে যেহেতু তাঁদের গবেষণাটি একেবারেই পর্যবেক্ষণমূলক ছিল, তাই এই গবেষকরা সতর্ক করেছেন, এই বিষয়গুলি প্রতিষ্ঠিত নয়। সমাজের কোন কোন অংশের লোকের বাড়তি সাবধান হওয়া প্রয়োজন, তার একটা আভাস দিয়েছে এই সমীক্ষা। এবার এই ফল অনুযায়ী আরও গবেষণার প্রয়োজন। এভাবেও কোভিড-১৯ রোগ ও তার সৃষ্টিকারী নতুন করোনাভাইরাসটি সম্পর্কে আরও অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যেতে পারে।