customer rights policy: সারাংশ কেনাকাটার সময় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার সিদ্ধান্ত আপনার নিজের, এবং কোনো প্রতিষ্ঠান জোর করে তা নিতে পারে না। যদি এমনটি হয়, সচেতন হন, আপনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেন।

customer rights policy: আজকাল প্রায় সব দোকানে বা অনলাইন কেনাকাটার সময় মোবাইল নম্বর চাওয়া হয়। অনেক সময় শুধু বিল কাটার পরেও দোকানদার নম্বর চেয়ে বসেন। প্রশ্ন হলো—এই নম্বর চাওয়া কি বাধ্যতামূলক? না কি এটি একটি অপশনাল পদ্ধতি? একজন সচেতন গ্রাহক হিসেবে আপনার জানা উচিত আপনার গোপনীয়তা (privacy) এবং ডেটা সুরক্ষা নিয়ে কী বলছে আইন।

দোকানদাররা কেন চান আপনার নম্বর?

কোন দোকান শপিংমল বা অনলাইনে শপিং করার পর বিল বানানোর আগে আপনার নম্বর যাওয়া হয় রেজিস্ট্রেশন এর জন্য। সাধারণ একটা প্রক্রিয়া মনে হলেও মনের মধ্যে খুব খুঁত খুঁত থেকেই যায় যে আপনার নম্বর নিয়ে খারাপ কোন কারসাজি হবে না তো? বিক্রেতা সংস্থা বা দোকানগুলির বক্তব্য, গ্রাহকদের নাম্বার নিয়ে রাখতে ভবিষ্যতে কোন অফার ডিসকাউন্ট প্রচারমূলক সংবাদ বা সুযোগ-সুবিধার বিষয় তাদেরকে জানানো সহজ হয়ে যায়। তবে এই প্রক্রিয়ায় গোপন বা জরুরি তথ্য ভুল হাতে পড়ে যাওয়া, টাকা পয়সা চোট হয়ে যাওয়া, এমনকি ফোনে প্যান্ট ও প্রচারমূলক কলের সংখ্যা বেড়ে যায়। এত সমস্ত ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও দোকানদাররা ব্যক্তিগত নম্বর চাইলে আমাদের তা দিতেই হয়। কিন্তু এইভাবে নম্বর চাওয়া কি আদৌ সঠিক?

আইন কী বলে?

ভারতে ভোক্তা অধিকার রক্ষার বেশ কিছু আইন ও নিয়ম চালু রয়েছে, সাধারণত বেশিরভাগ জনগণই এ বিষয়ে জানেন না। ২০২৩ সালের মে মাসে ভারতের ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয় নতুন গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা জারি করে, যাতে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করা আছে, যে বিক্রেতা সংস্থা বা দোকানদাররা গ্রাহকদের নম্বর শেয়ার করার জন্যই চাপ দিতে পারেন না। অর্থাৎ বিক্রেতা আপনার কাছ থেকে নম্বর চাইলে, আপনি যদি না চাণ তাহলে নিজের ব্যক্তিগত নম্বর তাদেরকে দিতে বাধ্য নন আপনি।

চন্ডিগড় রাজ্য ভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনও এই প্রসঙ্গে মতামত প্রকাশ করেছেন যে, বিল তৈরির জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নেওয়া বাধ্যতামূলক নয়। যদি কোন বিক্রেতা বা দোকানদার গ্রাহকের কাছ থেকে নম্বর নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, তবে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা লাগু হতে পারে ওই দোকানদারের ওপর।

বিক্রেতা নম্বর দেওয়ার জন্য চাপ দিলে কী করবেন?

কেনাকাটা করার সময় কোন দোকানদার আপনার উপর অযাচিত চাপ সৃষ্টি করলে আপনি তা বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। ওই মুহূর্তে ঘাবড়ে গিয়ে উত্তেজিত হওয়ার দরকার নেই। শান্ত, স্বাভাবিকভাবেই বিল নম্বর ছাড়াই বানানোর জন্য আবেদন করতে পারেন। এরপরেও দোকানদার জেদ করে আপনার উপর চাপ সৃষ্টি করলে আপনি উপভোক্তা অভিযোগ নম্বর ১৯১৫ বা ৮৮০০০০১৯১৫ নম্বরে কল করে আপনার অভিযোগ নথিভুক্ত করাতে পারেন। এই হেল্পলাইন নম্বর আপনার অভিযোগ শুনে গ্রাহকের অধিকার রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়।

নিজের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা নিজেই রাখুন

আজকের ডিজিটাল যুগে ব্যক্তিগত অস্তিত্বের প্রমাণ পত্রগুলো ডিজিটাল হতে শুরু করেছে। একটা ব্যক্তিগত নম্বর আপনার আধার, প্যান এমনকি ব্যাংক ডিটেলস এর সাথেও জড়িত। সুতরাং আপনার ফোন নম্বর ভুল হাতে পড়ে যাওয়া মানে গোপনীয় জরুরী তথ্য ফাঁস এবং আপনার অস্তিত্বে সংকট হতে পারে। তাই যেকোনো জায়গায় আপনার জরুরী ডেটা শেয়ার করার আগে সতর্ক হন। যদি আপনার মনে হয় আপনার নম্বর দেওয়া জরুরী নয় বা আপনি দিতে চাইছেন না তবে তৎক্ষণাৎ প্রত্যাখ্যান করুন। আপনার ফোন নম্বর আপনার একান্তই ব্যক্তিগত। তা আপনি শেয়ার করবেন কিনা তা সম্পূর্ণই আপনার বিবেচিত সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত।

ভোক্তা সচেতনতা জরুরি

বর্তমানে ভোক্তা সচেতনতার মতো জরুরী বিষয়ে সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা অবিরাম সচেতন মূলক প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা এবং ভোক্তা কমিশনের নিয়ম গুলো প্রমাণ করে যে গ্রাহকের ব্যক্তিগত অধিকার রক্ষায় সরকারও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তার জন্য এগিয়ে আসতে হবে আপনাকেও। নিজের অধিকার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে গ্রাহকদের নিজেদেরকেও।

আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।