সংক্ষিপ্ত

ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন বা আইডিসি-র ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সেমি-অ্যানুয়াল সার্ভিস ট্র্যাকার এই সমীক্ষা চালায়। আর তার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণে ভারতের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির ছবিটা সামনে এসেছে।

 

বিশ্বজুড়ে ঘটনার ঘনঘটা। যা গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির মেরুদণ্ডকেই ভেঙে দিয়েছে। কিন্তু, এত সত্ত্বেও ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বৃদ্ধি তৎপর্যপূর্ণভাবে বেড়েছে। এই ধরনের আর্থিক সমীক্ষা চালানোর ক্ষেত্রে এক অগ্রণী সংস্থা আইডিসি অর্থাৎ ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বৃদ্ধিকে ৮.১ শতাংশ দেখানো হয়েছে। আইডিসি জানিয়েছে, এই বৃদ্ধি চলতি বছরের প্রথম সাত মাসের।

২০২১ সাল শেষ হওয়ার সময় ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বৃদ্ধির হার ছিল ৬.৪ শতাংশ। আইডিসি-র রিপোর্টে এমনই উল্লেখ করা হয়েছিল। আইডিসি তাদের সমীক্ষায় জানিয়েছে ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্র শুধু তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি-ই ঘটায়নি, সেই সঙ্গে নিজ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ টানার বিষয়েও যথেষ্ট শক্তিশালী হওয়ার পরিচয় রেখেছে। যার জেরে ২০২২ সালের প্রথম ৭ মাসে ভারতের তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্যের মোট মূল্য ৭.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বলেও তাদের সমীক্ষায় দাবি করেছে আইডিসি। যার জেরে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্র ৭.১ শতাংশের বৃদ্ধি-তে পৌঁছেছে, গত বছরের শেষ সাত মাসের সঙ্গে বৃদ্ধির হারের পার্থক্যে এটা ৮.১-এর গ্রোথ বলে জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন।  


 

কারা কারা মিলে করেছে এই সমীক্ষা 
ইন্টারন্যাশনাল ডেটা কর্পোরেশন বা আইডিসি-র ওয়ার্ল্ড ওয়াইড সেমি-অ্যানুয়াল সার্ভিস ট্র্যাকার এই সমীক্ষা চালায়। আর তার দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণে ভারতের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির ছবিটা সামনে এসেছে। আইডিসি-র রিপোর্টে বলা হয়েছে, লাগাতার ভারতের বাজারে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জেরে এই বৃদ্ধি হারের গ্রাফকে ঊর্ধ্বমূখী হতে দেখা গিয়েছে। অতিমারির সঙ্কটে আর্থনীতির বেহাল দশা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই ইউরোপ এবং বিশ্বকে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের সাক্ষী হতে হয়েছে। এর প্রভাব বিশ্বজুড়েই অর্থনীতিতে পড়েছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইউরোপের। সেখানে লাগাতার বিদ্যুৎ-এর দাম বেড়ে গিয়েছে। জ্বালানীর দাম কয়েক শ গুণ বেড়ে গিয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির হার এখন এতটাই যে ব্রিটেনে এই নিয়ে মাত্র ৫০ দিনের মধ্যে দুই দুবার প্রধানমন্ত্রী বদলে গিয়েছে। জার্মানি কোনওভাবে লড়াই করছে মুদ্রাস্ফীতি-কে বাগে আনতে। কিন্তু, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না থামলে আদৌ পরিস্থিতি কতটা বাগে আসবে তা নিয়ে সন্দেহ আছে। আন্তর্জাতিক দুনিয়ার এই পরিস্থিতির শিকার বিশ্বের অধিকাংশ দেশ। এমন এক পরিস্থিতিতে ভারতের বাজারে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে চাঙ্গা হয়ে শক্তি বাড়ানোটা যথেষ্টই সদর্থক বলে মনে করা হচ্ছে।

কী কারণে ভারতে তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ বেড়েছে, কী বলছে আইডিসি রিপোর্ট 
আইডিসি ইন্ডিয়ার আই সার্ভিসের সিনিয়র মার্কেট অ্যানালিস্ট হরিশ কৃষ্ণকুমার জানিয়েছেন, 'রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিতে যে একটা ধাক্কা লেগেছে, তার প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্রে যে বৃদ্ধির হার প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে এরকম এক পরিস্থিতিতে ভারতীয় তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্র বিশ্বজুড়েই পরিষেবা গ্রহণকারী গ্রাহকদেরকে নিরন্তর নির্ভরতা দিতে পেরেছে। যার এই বূদ্ধির গতিকে আরও ইন্ধন জুগিয়েছে। পাশাপাশি, তথ্য-প্রযুক্তি শিল্পক্ষেত্রে যেভাবে প্রোডাক্ট ডেভলপমেন্ট এবং একটি অত্যাধুনিক-ইন্টারঅ্যাকটিভ পরিষেবা সহজভাবে গ্রহণের বিষয়কে নিশ্চিত করা হয়েছে তা এই বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ নিউক্লিয়াস হিসাবে কাজ করেছে। এর সঙ্গে ভারতের ডিজিটাল ট্রান্সফোরমেশনের যোগ থাকলেও, এর একটি বিষকে খুব বেশি করে বলতে হয়, আর তা হল- অতিমারির জন্য যে বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, এখন তা পুনরায় চালু হওয়ায় তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়েছে। এই বিনিয়োগের একটা বড় অংশ এখন ক্লাইড টেকনোলজির উপরে হচ্ছে যা বিশ্বের তথ্য-প্রযুক্তি পরিষেবায় একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ডেটা অ্যানালিটিক্স যে এই যুগে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে একটা অত্যন্ত আবশ্যিক ক্ষেত্র, তা বুঝে এবং তার প্রয়োগ বৃদ্ধি ঘটেছে। এছাড়াও এআই এবং এমএল-এর মতো প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বেড়েছে। জোর দেওয়া দেওয়া হয়েছে সাইবার সিকিউরিটির উপরে। এর ফলে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তার বিষয়টিতে জোর এসেছে।' 

আইডিসি ট্র্যাকার কি 
আইডিসি ট্র্যাকার একটা বাজারের ক্ষেত্র এবং তার পরিধি নিয়ে কাজ করে। এর তথ্য বিশ্লেষণ করা এবং সঠিক ডেটা অ্যানালিসিসে তার সম্ভাবনাময় দিকগুলোকে উন্মোচিত কা এর কাজ। এমনকী, সংস্থার শেয়ার থেকে শুরু করে প্রযুক্তি ভিত্তিক বাজার ও প্রযুক্তির প্রয়োগ নিয়েও কী কী সম্ভাবনা বাজারে তৈরি হতে পারে তার সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য মেলে ধরার কাজ করে।

আইডিসি-র পরিচয়
বিশ্বের ১১০টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে আইডিসি-র কর্মকাণ্ড। মার্কেট ইনটেলিজেন্স এবং পরামর্শমূলক পরিষেবা প্রদান করা থেকে শুরু করে তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রের প্রয়োগিক এবং সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো নিয়ে কাজ করে থাকে আইডিসি। এর জন্য তারা স্থানীয় প্রযুক্তিবিদ থেকে শুরু করে বিষয় বিশেষজ্ঞ এবং তথ্য-বিশ্লেষণকারী বিশেজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে থাকে।

আরও পড়ুন- 
WPI মুদ্রাস্ফীতি: অক্টোবরে মূল্যস্ফীতি থেকে মুক্তি, ১৮ মাস পর পাইকারি মূল্যস্ফীতি নামল ১০ শতাংশ 
এশিয়ার পাওয়ার বিজনেস ওমেনের শীর্ষে ৩ ভারতীয়র মধ্যে বাঙালি ললনা , একনজরে দেখুন তালিকা 
বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগে বাইজুস-এর ধামাকা, মেসিকে গ্লোবাল ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসাবে ঘোষণা অনলাইন এডুকেশনাল অ্যাপ-এর