সংক্ষিপ্ত
ভারতে কর্পোরেট জগতের কর্মীদের কাজের সময় নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। নারায়ণ মূর্তি যে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন, তা ক্রমশঃ বাড়ছে।
কিছুদিন আগে ইনফোসিস সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নারায়ণ মূর্তি বলেছিলেন, কর্মীদের প্রতি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত। এবার একধাপ এগিয়ে কর্মীদের প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করার নিদান দিচ্ছেন অপর এক বিখ্যাত সংস্থা লার্সেন অ্যান্ড টুবরোর চেয়ারম্যান এস এন সুব্রহ্মণ্যম। তাঁর সংস্থার কর্মীদের সপ্তাহে ৬ দিন কাজ করার নিয়ম রয়েছে। রবিবারও কর্মীদের অফিসে ডাকতে পারছেন না বলে আফশোস করছেন সুব্রহ্মণ্যম। তিনি চিনের উদাহরণ দিয়ে কাজের সময় বৃদ্ধির কথা বলেছেন। তাঁর এই বক্তব্য নিয়ে যথারীতি বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে কর্পোরেট জগতের কর্মীদের উপর শারীরিক ও মানসিক চাপ বাড়ছে।
কতক্ষণ কাজ করতে হবে কর্পোরেট জগতের কর্মীদের?
কর্মীদের সঙ্গে কথোপকথনের সময় লার্সেন অ্যান্ড টুবরো সংস্থায় ৬ দিন কাজের নীতি প্রসঙ্গে সুব্রহ্মণ্যম বলেছেন, ‘আমার আফশোস হয় যে আপনাদের রবিবার অফিসে এসে কাজ করতে বলতে পারি না। আমি যদি আপনাদের দিয়ে রবিবারও কাজ করাতে পারতাম, তাহলে আরও খুশি হতাম। কারণ, আমি রবিবারও কাজ করি। বাড়িতে বসে আপনারা কী করেন? আপনারা কতক্ষণ স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে পারেন? অফিসে চলে এসে কাজ শুরু করে দিন।’ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে সুব্রহ্মণ্যমের এই বক্তব্য ভাইরাল। তিনি কর্মীদের উদ্দেশে যে মন্তব্য করেছেন, তাতে অনেকেই অপমানিত বোধ করছেন। কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে সমতা বজায় রাখার যে কথা বলা হয়, লার্সেন অ্যান্ড টুবরো চেয়ারম্যানের বক্তব্য তার বিরোধী। ফলে কর্পোরেট জগতে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
চিনের উদাহরণ লার্সেন অ্যান্ড টুবরো কর্তার
চিনের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথোপকথনের কথা উল্লেখ করে সুব্রহ্মণ্যম বলেছেন, ‘চিনের এক ব্যক্তির সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে যেতে পারে চিন। কারণ, প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করেন। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মীরা প্রতি সপ্তাহে ৫০ ঘণ্টা করে কাজ করেন। তাহলে আপনাদের উত্তর কী? আপনাদের যদি বিশ্বসেরা হতে হয়, তাহলে প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা করে কাজ করতে হবে। আপনারা কাজে লেগে পড়ুন।’
কর্পোরেট জগতে বিতর্ক
লার্সেন অ্যান্ড টুবরো সংস্থার চেয়ারম্যান কবে তাঁর সংস্থার কর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রতি সপ্তাহে ৯০ ঘণ্টা কাজ করার বার্ত দিয়েছেন, সেটা স্পষ্ট নয়। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনেকেই দাবি করছেন, কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবন এবং কাজ সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছেন সুব্রহ্মণ্যম, তা ঠিক নয়। গত বছর নারায়ণ মূর্তি বলেছিলেন, দেশ গড়ার জন্য তরুণ ভারতীয়দের প্রতি সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজ করা উচিত। নারায়ণ মূর্তির এই বক্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক হয়। এবার অনেকেই নারায়ণ মূর্তির বক্তব্যের সঙ্গে সুব্রহ্মণ্যমের বক্তব্যের মিল খুঁজে পাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই দাবি করছেন, ব্যক্তিগত জীবন ও কাজের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার কথা বলছেন না লার্সেন অ্যান্ড টুবরো চেয়ারম্যান। অনেকে আবার দাবি করছেন, কর্পোরেট জগতের কর্মীদের অতিরিক্ত কাজ করানোর সংস্কৃতি চালু করা হচ্ছে। স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বসে থাকার কথা বলে কর্মীদের অপমান করেছেন সুব্রহ্মণ্যম। তিনি কর্মীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছেন। রবিবারও কর্মীদের অফিসে এসে কাজ করার বার্তা দেওয়ার মাধ্যমে তাঁদের ব্যক্তিগত জীবন ও কাজের মধ্যে ভারসাম্য না রাখার কথা বলেছেন সুব্রহ্মণ্যম। এমনিতেই কর্পোরেট জগতের কর্মীদের প্রচণ্ড চাপ নিয়ে কাজ করতে হয়। তার উপর ছুটি না পেলে তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।
আরও পড়ুন-
১০ হাজার টাকায় ব্যবসা শুরু, তারপরটা ইতিহাস,রূপকথার নায়ক নারায়ণ মূর্তি
১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়করে ছাড় দেওয়া হবে! বাজেটের আগে দেশজুড়ে জল্পনা
যে কোনওদিন হ্যাকারদের কবলে চলে যেতে পারে আপনার পিএফ অ্যাকাউন্ট, কীভাবে সতর্ক থাকবেন?