বহু মানুষ বর্তমানে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ (Share Market Investment) করে অ্যাসেট বৃদ্ধি করতে চান। কিন্তু অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের একাধিক ঝুঁকি এবং কৌশল সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত।

Share Market: আদতে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ (Share Market Investment) সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সম্পদ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। তাই বিনিয়োগ শুরু করার আগে মৌলিক ধারণা এবং বাজারের গতিশীলতা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে স্টক মার্কেটের মূল বিষয়গুলি এবং এটি কীভাবে কাজ করে, তা সম্পর্কে আলোচনা করা হল।

স্টক মার্কেট হল পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির শেয়ার কেনা-বেচার জন্য একটি আর্থিক প্ল্যাটফর্ম (Share Market News)।

ভারতে স্টক ট্রেডিং প্রধানত দুটি এক্সচেঞ্জে হয়ে থাকে।

বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ (BSE): ১৮৭৫ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের প্রাচীনতম শেয়ার বাজারগুলির মধ্যে একটি (Share Market Investment Tips)।

জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ (NSE): ১৯৯২ সালে শুরু হয় পথচলা। ট্রেডিং ভলিউমের ভিত্তিতে এটি ভারতের বৃহত্তম একটি শেয়ার বাজার। বিনিয়োগকারীরা এই বাজারে শেয়ার লেনদেনের জন্য ব্রোকারদের ব্যবহার করে থাকেন।

কিন্তু শেয়ার বাজার তহি কীভাবে কাজ করে? কোম্পানিগুলি তাদের শেয়ার একটি প্রাথমিক পাবলিক অফারিং তথা IPO-এএর মাধ্যমে স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত করে। এটি মূলধন একত্রিত করতে সাহায্য করে থাকে। তালিকাভুক্ত হয়ে গেলেই শেয়ারগুলি সেকেন্ডারি মার্কেটে অবাধে লেনদেন শুরু হয়। সরবরাহ, চাহিদা, কোম্পানির কর্মক্ষমতা এবং সামগ্রিক বাজার পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে স্টকের দাম ওঠানামা করে।

শেয়ার বাজারের প্রধান অংশীদাররা হলেন খুচরো বিনিয়োগকারী। যারা ব্যক্তিগত আর্থিক দিকটি উন্নতির জন্য বিনিয়োগ করেন। এছাড়াও আছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী। মিউচুয়াল ফান্ড, বীমা কোম্পানি এবং পেনশন তহবিলের মতো বৃহৎ প্রতিষ্ঠানগুলি। অন্যদিকে, SEBI নিবন্ধিত বিশেষজ্ঞ, যারা স্টক লেনদেন আরও সহজতর করে তোলেন।

একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা রয়েছে। সেটি হল সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (SEBI)। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার জন্য শেয়ার বাজারের কার্যক্রম তদারকি করে থাকে তারা।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে গেলে প্রথমেই একটি ডিম্যাট এবং ট্রেডিং অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট শেয়ার কেনা-বেচার ক্ষেত্রে সাহায্য করে। Zerodha, Upstox এবং ICICI Direct এর মতো ব্রোকাররা এই পরিষেবাগুলি অফার করে থাকে।

এরপর আছে KYC পদ্ধতি। অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের জন্য প্যান, আধার, ব্যাঙ্কের বিবরণ এবং ঠিকানার প্রমাণপত্র জমা দিন। ট্রেডিংয়ের জন্য আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা স্থানান্তর করুন। বিনিয়োগের জন্য স্টক নির্বাচন করুন এবং তথ্যবহুল সিদ্ধান্ত নিতে মৌলিক ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ ব্যবহার করুন।

সেইসঙ্গে, আপনার বিনিয়োগকে ট্র্যাক করুন। সেরা সিদ্ধান্ত নিতে স্টক কর্মক্ষমতা এবং বাজারের প্রবণতার দিকেও নজর রাখুন।

এবার আসা যাক ইক্যুইটি শেয়ারের প্রসঙ্গে। দীর্ঘমেয়াদী মূলধন লাভ এবং লভ্যাংশ প্রদানকারী কোম্পানিগুলিতে এক ধরনের সরাসরি মালিকানা। মিউচুয়াল ফান্ড হল বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত তহবিল যারা বিনিয়োগকারীদের পক্ষে স্টক, বন্ড বা অন্যান্য সম্পদে বিনিয়োগ করে থাকে।

এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ড (ETFs) কী? বিনিয়োগ তহবিল, যা নিফটি ৫০ বা সেনসেক্সের মতো সূচকগুলিকে ট্র্যাক করে এবং স্টক মার্কেটে লেনদেন করে থাকে। প্রাথমিক পাবলিক অফারিং (আইপিও) হল নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলি শেয়ার বাজারে লেনদেন শুরু করার আগে বিনিয়োগ।

দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগঃ চক্রবৃদ্ধি থেকে লাভবান হওয়ার জন্য কয়েক বছর ধরে শেয়ার কেনা এবং ধরে রাখা। মূল্য বিনিয়োগ অনুযায়ী, শক্তিশালী মৌলিক ভিত্তিসম্পন্ন অবমূল্যায়িত স্টক চিহ্নিত করা এবং বিনিয়োগ করা। প্রবৃদ্ধি বিনিয়োগ বলতে বোঝায়, বর্তমান মূল্যায়ন নির্বিশেষে উচ্চ প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা সম্পন্ন কোম্পানি নির্বাচন করা। লভ্যাংশ বিনিয়োগ হল স্থির লভ্যাংশ প্রদানকারী স্টকগুলিতে বিনিয়োগ করা।

এরপর আছে স্বল্পমেয়াদী লেনদেন। দ্রুত লাভের জন্য অল্প সময়ের মধ্যে শেয়ার কেনা-বেচা। বিনিয়োগ করার সময় অবশ্যই পোর্টফোলিওতে বৈচিত্র্য আনুন। ঝুঁকি কমাতে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগকে ছড়িয়ে দিন। আর্থিক সংবাদ এবং কোম্পানির আপডেটগুলির উপর নজর করুন। স্টপ-লস অর্ডার ব্যবহার করুন। শেয়ার কেনার জন্য ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণ করে ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন।

অপরদিকে বাজারের ওঠানামা ধৈর্য এবং ধারাবাহিকতার দিকে দৃষ্টি রাখুন। তবে তার জন্য জ্ঞান, শৃঙ্খলা এবং ধৈর্য প্রয়োজন। ক্রমাগত শেখা এবং বাজারের প্রবণতা সম্পর্কে আপডেট থাকা কেবল বিনিয়োগ দক্ষতা উন্নত করে না। বরং, দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক প্রবৃদ্ধির দিকেও সাহায্য করে থাকে।