সংক্ষিপ্ত

ভারতে কর্মরত বিদেশী ব্যাঙ্কগুলির শাখা , স্থানীয় এলাকা ব্যাঙ্ক এবং আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি সহ সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন বা DICGC দ্বারা বিমাকৃত করা হয় । বর্তমানে সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্ক DICGC-এর আওতাভুক্ত করা হয়ছে । DICGC ব্যাঙ্কগুলিকে বিমাকৃত ব্যাঙ্ক হিসাবে রেজিস্ট্রেশন করার সময় তাদের বিমাকৃত ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য প্রদর্শনের জন্য  লিফলেট সরবরাহ করা হয়। 
 


নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত প্রতিটি মানুষেরই সঞ্চয়ের জন্য অন্যতম সেরা ভরসা ব্যাঙ্ক। চাকুরীজীবী হোক বা ব্যাবসায়ী প্রতি মানুষই ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করার জন্য অর্থ সঞ্চয়কে সুরক্ষা কবচ হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন ব্যাঙ্কে যখন অর্থ সঞ্চয়ের জন্য কোন স্কিম সবচেয়ে কার্যকরী হতে পারে সেই বিষয়টির দিকে প্রথমে আলোকপাত করা হয়। যে স্কিমে সুবিধা বেশী পাওয়া যায় সেটাই হয়ে ওঠে গ্রাহকের সেরা পছন্দ। বলা বাহুল্য, প্রতিটি আমানতকারীর(Dipositer)যেমন বিমার প্রয়োজন, ঠিক সেই রকমভাবে যদি ব্যাঙ্ককেও বিমার আওতায় আসার সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে মন্দ কি...সেই প্রসঙ্গে বলতে হয়, ডিপোজিট ইন্সুরেন্স(Diposit Insurance) অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশনের ( DICGC)-এর বিষয়টি কিন্তু অনেকেরই জানা। তবে যারা এই বিষয়টি সম্বন্ধে অবগত নন, তাঁদের জন্য বলে রাখা ভাল যে, ভারতে কর্মরত বিদেশী ব্যাঙ্কগুলির শাখা , স্থানীয় এলাকা ব্যাঙ্ক এবং আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্কগুলি সহ সমস্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন বা DICGC দ্বারা বিমাকৃত করা হয় । বর্তমানে সমস্ত সমবায় ব্যাঙ্ক DICGC-এর আওতাভুক্ত করা হয়ছে । উল্লেখিত,প্রাথমিক সমবায় সমিতিগুলিকে ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন বা DICGC-এর দ্বারা বিমা করা হয় না ।

এবার জেনে নেওয়া যাক ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন বা DICGC- র বিমার কাজটা ঠিক কী রকম। সেভিংস বা ফিক্সড , কারেন্ট  বা রেকারিং ইত্যাদি আমানত বিমা করে থাকে। বিদেশী সরকারের আমানত, কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারের আমানত, আন্তঃব্যাংক আমানত, রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্কে রাজ্য ভূমি উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলির আমানত, ভারতের বাইরে প্রাপ্ত অ্যাকাউন্ট এবং ডিপোজিটের উপর যে কোনো পরিমাণ বকেয়া যা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পূর্ববর্তী অনুমোদনের সঙ্গে কর্পোরেশন দ্বারা বিশেষভাবে ছাড় দেওয়া হয়েছে। একটি ব্যাঙ্কে প্রত্যেক আমানতকারীকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিমা করা হয়। সেক্ষেত্রে মূলধন এবং সুদের পরিমাণ উভয়ের জন্যই একই হয়।  ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন বা DICGC ব্যাঙ্কগুলিকে বিমাকৃত ব্যাঙ্ক হিসাবে রেজিস্ট্রেশন করার সময় তাদের বিমাকৃত ব্যাঙ্কের আমানতকারীদের কর্পোরেশন কর্তৃক প্রদত্ত সুরক্ষা সম্পর্কিত তথ্য প্রদর্শনের জন্য  লিফলেট সরবরাহ করা হয়। যদি কোনও সন্দেহ থাকে, তাহলে আমানতকারীকে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট শাখার আধিকারিকদের কাছ থেকে নির্দিষ্ট তথ্য অনুসন্ধান করে নেওয়া উচিত। 

আরও পড়ুন-Premium Increase-আগামী বছর থেকে ভারি হবে জীবন বিমা পলিসি,প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ছে প্রিমিয়াম

আরও পড়ুন-SBI Card Holders Get Free Insurance- সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দুর্ঘটনা বিমা, মহাসুযোগ SBI ডেবিট কার্ড হোল্ডারদের

আরও পড়ুন-অবাককাণ্ড, পাকিস্তান থেকে ৩ লক্ষ টাকার জীবন বিমা করেছিল তালিবান জঙ্গি

ডিপোজিট ইন্সুরেন্স অ্যান্ড ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন বা DICGC আসল এবং সুদ মিলে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত বিমা করে। উদাহরণস্বরূপ , যদি একজন ব্যক্তির একটি অ্যাকাউন্ট থাকে যার মূলধনের পরিমাণ  ৪,৯৫,০০০ টাকা এবং ৪ হাজার টাকার অর্জিত সুদ থাকে তাহলে DICGC দ্বারা বিমাকৃত মোট অর্থের পরিমাণ হবে ৪,৯৯,০০০ টাকা। আমানত বিমা নির্ধারণের আগে একই ব্যাঙ্কে একই ধরণের মালিকানায় থাকা সমস্ত তহবিল একসঙ্গে যুক্ত করা হয় । যদি তহবিলগুলি বিভিন্ন ধরণের মালিকানায় থাকে বা আলাদা ব্যাঙ্কে জমা করা হয় তবে সেগুলি আলাদাভাবে বিমা করা হবে ৷ আপনার যদি একাধিক ব্যাঙ্কে আমানত থাকে, তবে আমানত বিমা কভারেজ সীমা প্রতিটি ব্যাঙ্কে আমানতের জন্য আলাদাভাবে প্রয়োগ করা হয় ।

ব্যাঙ্ক বন্ধের তারিখ নির্বিশেষে প্রতিটি ব্যাঙ্ক থেকে আপনার তহবিলের জন্য আলাদাভাবে বিমা করা হবে। ব্যাঙ্কগুলির কাট অফ ডেট অনুসারে আমানতের পরিমাণ থেকে তাদের বকেয়া সেট অফ করার অধিকার রয়েছে৷ এই ধরনের বকেয়া বাদ দেওয়ার পরে আমানত বিমা পাওয়া যায়। ডিপোজিট ইন্সুরেন্স বা আমানত বিমার প্রিমিয়াম সম্পূর্ণরূপে বিমাকৃত ব্যাঙ্কই বহন করে । যদি কোনও ব্যাঙ্ক লিকুইডেশনে চলে যায় , DICGC লিকুইডেটর থেকে দাবি তালিকা প্রাপ্তির তারিখ থেকে দুই মাসের মধ্যে প্রতিটি আমানতকারীর দাবির পরিমাণ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করতে দায়বদ্ধ । ব্যাঙ্ক লিকুইডেশনে গেলে , তখন লিকুইডেটর আমানতকারীর ভিত্তিতে দাবির তালিকা তৈরি করে এবং পর্যবেক্ষণ করে অর্থপ্রদানের জন্য DICGC-তে পাঠায় । DICGC সেই লিকুইডেটরকে টাকা দেয় যে আমানতকারীদের তা দিতে দায়বদ্ধ । ব্যাঙ্কগুলির একত্রীকরণ/সংযুক্তিকরণের ক্ষেত্রে , প্রতিটি আমানতকারীর বকেয়া পরিমাণ হস্তান্তরকারী ব্যাঙ্ককে প্রদান করা হয় ।

DICGC একটি বিমাকৃত ব্যাঙ্কের রেজিস্ট্রেশন তখনই বাতিল হতে পারে যদি সেটি পরপর তিন মেয়াদে এর প্রিমিয়াম দিতে ব্যর্থ হয় । তবে DICGC প্রিমিয়াম পরিশোধে ব্যার্থ হলে যেকোনো ব্যাঙ্ক থেকে তার কভারেজ প্রত্যাহার করার ক্ষেত্রে জনগণকে সংবাদপত্রের মাধ্যমে অবহিত করা বাধ্যতামূলক ।