সংক্ষিপ্ত
জলবায়ু পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে বিশ্ব কয়লা সমিতি অনুমোদন করছে দায়িত্বপূর্ণ কয়লা নীতি, যার ভিত্তি হলো প্যারিস চুক্তি আর ইউএন এর পরিবেশবান্ধব উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা। গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিশ্ব কয়লা সমিতিতে যোগদান ভারতের কয়লা শিল্পে নেতৃত্বকে উদ্দীপনা দেবে।
ভারতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে উন্নত মানের কয়লা খননকার্য অগ্রসরের জন্য বিশ্ব কয়লা সমিতির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং। গেনওয়েল কমোসেলস প্রাইভেট লিমিটেড যা পূর্বতন ট্র্যাক্টরস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড উৎপাদনী । গেনওয়েল ভারতে শুধুমাত্র দ্বিতীয় সংস্থা হবে যারা বিশ্ব কয়লা সমিতির সঙ্গে গাটছড়া বাঁধল।
কয়লা এখনো বিশ্বের শক্তির সর্ববৃহৎ উৎস আর উন্নত পরিবেশবান্ধব ভারতের ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। শ্রীমতি মিসেল মানুক, বিশ্ব কয়লা সমিতির সিইও, এই সহযোগ সম্মন্ধে বলেছেন, "এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে ভারতের মত দেশ আর গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো সংস্থা কয়লার প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে ও উন্নত যাত্রাপথের জন্য আলোচনায় অগ্রসর। আমরা গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরিচালন সমিতিকে স্বাগত জানাচ্ছি যারা বিভিন্ন দেশের কয়লার মানশৃঙ্খল সম্মন্ধে অবহিত যেমন অস্ট্রেলিয়া, চীন, রাশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সংযুক্ত অর্থনৈতিক উন্নতি আর পরিবেশ সম্মন্ধিত লক্ষ্যমাত্রাকে পূর্ণ করার শ্রেষ্ঠ উপায়। ভারতের মতো দেশের ক্ষেত্রে এই উচ্চাভিলাষ একচেটিয়া নয়।"
জলবায়ু পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে বিশ্ব কয়লা সমিতি অনুমোদন করছে দায়িত্বপূর্ণ কয়লা নীতি, যার ভিত্তি হলো প্যারিস চুক্তি আর ইউএন এর পরিবেশবান্ধব উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা। গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিশ্ব কয়লা সমিতিতে যোগদান ভারতের কয়লা শিল্পে নেতৃত্বকে উদ্দীপনা দেবে।
এটি ভারতের আমদানি খরচ হ্রাস করা আর দেশের শক্তি সুরক্ষা বৃদ্ধি করতেও সহায়তা করবে। গেনওয়েল কমোসেলস, যার সমৃদ্ধ সুখ্যাতি আছে গত আট দশক ধরে ভারতের সামগ্রিক পরিকাঠামো বৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য, আর তাদের গৌরবময় অংশীদার ক্যাটার্পিলার কনস্ট্রাকশন, মাইনিং এন্ড পাওয়ার সল্যুশন্স এর সঙ্গে গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং কয়লা খননকার্যের সরঞ্জাম উৎপাদনে প্রবেশ করছে আর পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়ে তাদের কারখানা তৈরী করছে। ভারতের সামগ্রিক পরিকাঠামো বৃদ্ধিতে সহায়তার অঙ্গীকার করে গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং লক্ষ্যমাত্রা রেখেছে ভূগর্ভস্থ খননকার্যের জন্য আমদানিকৃত সরঞ্জামের ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা কমানোর, আর পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার করে পরিবেশের ওপর একটা অনুকূল প্রভাব বিস্তার করা।
২০২১-২২ এর একটি অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে কয়লার চাহিদা ২০৩০ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়াবে ১৩০-১৫০ কোটি টন, যা বর্তমান চাহিদার থেকে ৬৩% বেশি। এই অংশীদারিত্বের আরো লক্ষ্যমাত্রা হলো ভূগর্ভস্থ খননকার্যের জন্য আমদানিকৃত সরঞ্জামের ওপর ভারতের নির্ভরশীলতা কমানোর, এবং তার পরিবর্তে স্থানীয় ভাবে উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে খননকার্যের সরঞ্জাম প্রস্তুত করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে ও উন্নতমানের কয়লার দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
কয়লা এখনো ভারতের শক্তি সুরক্ষার প্রধান অবলম্বন, কিন্তু ভারত এখনও পুরোপুরি নির্ভরশীল ভূগর্ভস্থ খননকার্যের জন্য আমদানিকৃত সরঞ্জামের ওপর, বিশেষত কয়লার। পশ্চিমবঙ্গের পানাগড়ে আমাদের উন্নত ও আধুনিক উৎপাদন কারখানা খুব শীঘ্রই গড়ে উঠবে, যার দ্বারা গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং ভারতসহ বিশ্বের আরো অনেক দেশকে সহায়তা করবে শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে তাদের ভূগর্ভস্থ খনিজ পদার্থের উত্তোলন করাতেই নয়, সঙ্গে ভারতের ভূগর্ভস্থ খননকার্যের জন্য আমদানিকৃত সরঞ্জামের ওপর নির্ভরশীলতারও অবসান করবে।"
সম্প্রতি বিভিন্ন কয়লা বিষয়ক সম্মেলন একটি "নতুন বাস্তবতা" উপস্থিত করেছে, যা শক্তি সুরক্ষা আর ক্রয়ক্ষমতাকে আবার সবার অগোচরে নিয়ে এসেছে।
• শক্তি মন্ত্রক থেকে সম্প্রতি একটি তথ্য প্রকাশ হয়েছে, যাতে দেখা যাচ্ছে উৎপাদন ক্ষমতায় কয়লার অবদান হচ্ছে ৫১.৬%, যেখানে জলবিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুৎ, বায়ু চালিত বিদ্যুৎ ইত্যাদি এদের অবদান হচ্ছে ৩৮.৫%।
• এছাড়াও, আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থা (IEA) অনুযায়ী, কয়লা এখনো বিশ্বের বিদ্যুতের সর্ববৃহৎ, একক উৎস, যা শক্তি প্রদান করছে বিশ্বের ৩৯% বিদ্যুৎ সরবরাহে।
• ২০২১ সালে, IEA এর কথা অনুযায়ী, কয়লা উৎপাদন সর্বসময়ের উর্দ্ধমাত্রা নিয়েছিল ১০০০০ টেরাওয়াট প্রতি ঘন্টায় (TWh)। শিল্পক্ষেত্রে কয়লার চাহিদা ৬% বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড স্তরের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে ২০১৩ ও ২০১৪ সালে।
জলবায়ু পরিবর্তন আর বায়ু দূষণ বহু বছর ধরে উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। ভারত সরকার একটি ৫৫০০ কোটি ডলার এর বিনিয়োগ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে, যা আগামী দশকে পরিবেশবান্ধব কয়লা উৎপাদনে ভারতকে কয়লা শিল্পে একটি অগ্রণী ভূমিকায় পরিচালন করবে।
মিস মানুক বলেছেন, " বিশ্ব কয়লা সমিতি ভারতের এই অবস্থানকে প্রশংসা করেছে, যেখানে অখন্ড কয়লাকে পর্যায়ক্রমে সরিয়ে দিয়ে উন্নত মানের কয়লাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কয়লা এখনো বিশ্বের শক্তির প্রধান উৎস। সম্প্রতি বিভিন্ন সম্মেলন এই নিশ্চয়তা দিয়েছে যেখানে কয়লার প্রয়োজনীয়তা এখনো কমে যায়নি। কয়লা এখনই অগোচরে যাচ্ছে না কিন্তু আরো প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রেখে ও পরিবেশবান্ধব মডেলে স্থানান্তরিত হচ্ছে। কয়লা মান শৃঙ্খল এর প্রত্যেকটি দেশের প্রত্যেকটি সদস্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তিতে কয়লার এই বিবর্তনে সহায়তা করতে পারবে। আমরা সবাই এই সমাধানের অংশ।"
গেনওয়েল ইঞ্জিনিয়ারিং আর বিশ্ব কয়লা সমিতি বিশ্বাস করে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের আলোচ্যসূচিতে ভারত ইতিমধ্যে ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে এবং কয়লার ভবিষ্যতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসারও ক্ষমতা রাখে।
কয়লা বিষয়ক পরিজ্ঞান:
ভারতের কয়লার প্রতিবন্ধকতা আর সুযোগ এবং বিশ্ব কয়লা মানশৃঙ্খল সাগ্রহে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সংখ্যা আর বিজ্ঞানের প্রতি পথপ্রদর্শকের ভূমিকা নিয়েছে। এই শিক্ষা কয়লার ওপর অকাট্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে, যার মধ্যে রয়েছে:
• কয়লা এখনো 80 টির বেশি দেশে বৈদ্যুতিক সরবরাহের জন্য অতি আবশ্যক।
• কয়লা দারিদ্র্যের খারাপ প্রভাব কে প্রশমিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে ৮০ কোটি মানুষের জন্য যাদের কাছে কোন বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পরিবহন এই সমস্ত অতি প্রয়োজনীয় মানবাধিকারের অভাব।
• কয়লা নির্মাণ শিল্পের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বিশ্বের ৯০% সিমেন্ট উৎপাদনে, বিশ্বের ৭০% স্টিল উৎপাদনে, আর ৬০% এরও বেশি ব্যবহার হয় অ্যালুমিনিয়াম উৎপাদন করতে।
• স্টিল, সিমেন্ট আর অ্যালুমিনিয়াম পুনর্নবীকরণযোগ্য অবকাঠামোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত অপরিহার্য। প্রত্যেকটি বায়ু ঘূর্ণ যন্ত্র তৈরি করতে ১৭০ টন কোকিং কয়লার প্রয়োজন!
• প্যারিস চুক্তি এই ভেবেই তৈরি হয়েছিল যে বিশ্ব সম্প্রদায় নির্ধারিত পথরেখা থেকে দূরে সরে সার্বভৌম বিকল্পের সময়সীমাকে গুরুত্ব দেবে।
• বিশ্বের কোথাও ১০০% বিশ্বাসযোগ্য পুনর্নবীকরণ বিকল্প নেই (IPCC)।
• প্যারিস চুক্তি সম্পাদন করতে এটি আরও ১৩৮% ব্যয়বহুল CCS/সাকাস (IEA) ব্যতীত।