সংক্ষিপ্ত
অনেক সময় গৃহঋণ সংক্রান্ত অনেক খুঁটিনাটি তথ্য আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, যা পরে নির্ধারিত খরচকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আসুন তাহলে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, গৃহঋণ নেওয়ার সময় কোন কোন বিষয়ের ওপর ভালোভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
নতুন বছরে নতুন বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করছেন। নাকি পুরনো বাড়িকেই নতুনভাবে সাজাতে চাইছেন। যেটাই পরিকল্পনা করুন না কেন তার জন্য কিন্তু একটা মোটা অঙ্কের টাকার প্রয়োজন। বেশিরভাগ সময়ই একসঙ্গে অতগুলো নগদ টাকার জোগাড় থাকে না। তাই অগত্যা লোনের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বাড়ি সংক্রান্ত কাজের জন্য হোম লোনের দ্বারস্থ হতে হয় গ্রাহককে। উল্লেখ্য, একাধিক ব্যাঙ্ক গৃহঋণের ক্ষেত্রে বেশ আকর্ষণীয় ছাড় দিয়ে থাকে। তবে ঋনণ নেওয়া মানেই তো তার মাসিক কিস্তি বহন করতে হয়। শুধু মাসিক কিস্তিই দিয়েই কিন্তু শান্তি পাওয়া যায় না। বেশ ভাল সুদের হারেই গৃহঋণ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু অনেক সময় গৃহঋণ সংক্রান্ত অনেক খুঁটিনাটি তথ্য আমাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়, যা পরে নির্ধারিত খরচকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। আসুন তাহলে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, গৃহঋণ নেওয়ার সময় কোন কোন বিষয়ের ওপর ভালোভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
প্রথমে আসা যাক প্রসেসিং ফি-র কথায়। যে কোনও ধরনের লোনের আবেদন করতে গেলে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা জমা হিসাবে হয় যাকে বলা হয় প্রসেসিং ফি। এছাড়াও কেওয়াইসি ভেরিফিকেশন, এমপ্লয়িমেন্ট ভেরিফিকেশন, ক্রেডিট হিস্ট্রি অ্যাসেসমেন্ট সহ বেশ কিছু কাজের জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়।
প্রসেসিং ফি ছাড়াও প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন ও আইনি খরচ বাবদ একটা মোটা অঙ্কের টাকা প্রয়োজন হয়। যখনই কোনও ব্যাঙ্কে ঋমের জন্য আবেদন করবেন তখনই ব্যাঙ্কের তরফে একজন প্রযুক্তি বিসেষজ্ঞকে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। তিনি সেই গোটা সম্পত্তির
মূল্যায়ন করেন। জমির মালিকানা থেকে শুরু করে, অন্যান্য যাবতীয় বিষয় তদারকি করে থাকেন। অনেক সময় প্রসেসিং ফি-র মাধ্যে এই খরচ ধার্য করা হয়ে থাকে। তবে যে বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ করা হয় তাঁর জন্য একটা আইনি খরচ সরাসরি তাঁর হাতেই দিতে হয়।
এরপর আসা যাক প্রি-ইএমআই -য়ের কথায়। যদি ঋণ মঞ্জুর হয়ে যাওয়ার পর যদি জমি অধিগ্রহণের অতিরিক্ত সময় লাগে তাহলে ঋণদাতা সুদ লাগু করে থাকেন। এই বিষয়টিকেই প্রি-ইএমআই বলা হয়ে থাকে।
যখনই কোনও ব্যাঙ্ক থেকে আপনি ঋণ নেবেন তখন ঋণ সংক্রান্ত সব কিছু চূড়ান্ত হয়ে গেলে ঋণ গ্রোহিতাকে ঋণ দাতাদের কাছে সম্পত্তির আসল দলিল জমা রাখতে হয়। কারণ এই সম্পত্তির দলিলই গ্যারান্টি হিসাবে রাখা হয়। সুদ সহ ঋণ মেটানের পর এই দলিলি ঋণ গ্রোহিতাকে ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। এর জন্য একটি স্মারকলিপি স্বাক্ষর করা হয়। তার জন্য দরকার স্ট্যাম্প ডিউটি ও রেজিস্ট্রেশন চার্জের দরকার হয়। সেই খরচের ভার বহন করতে হয় ঋণ গ্রোহিতাকে।
এই সাব রেজিস্ট্রারের অধীনে যখন ঋণ চূড়ান্ত হয়, তখন ঋণ গোরহিতার যাহতীয় নথি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অধিকাংশ সময়ই এই নথি তৃতীয় পক্ষের কোনও পক্ষের কাছে জমা রাখা হয়। এই কাজের জন্য সমস্ত খরচ ঋণ গ্রোহিতাকেই বহন করতে হয়। এছাড়াও তো প্রসেসিং ফি,অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ফি সহ অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলাদাভাবে জিএসটি দিতে হয়।
অধিকাংশ ঋণেরই একটি মেয়াদ থাকে। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যদি ঋণ মেটানো না হয় তাহলে ঋণের পুনঃঅনুমোদনের জন্য ফের আবেদন করতে হয়। তার জন্যও অতিরিক্ত খরচ ব্যয় করতে হয়।
ইএমআই দিতে যদি ব্যর্থ হন তাহলেও অতিরিক্ত খরচ লাগবে। নির্দিষ্ট সময়ে ইএমআই দিতে না পরালে বা চেক বাউন্স করলে জরিমান বাবদ বেশ মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হয়। শুধু তাই নয়, ঋণ গ্রোহিতার থেকে টাকা উদ্ধারের জন্য ব্যাঙ্ক যে পরিমান টাকা খরচ করবে ঋণ গ্রোহিতার ওপর সেই টাকার ভার চাপিয়ে দেওয়া হয়।
অনেক সময়ই মানুষের আর্থিক অবস্থার অবনিত ঘটে। সেই সময় অনেক ক্ষেত্রেই ঋণগ্রোহিতা তাঁর ঋমের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানায়। অনেকে আবার একবারে সম্পূর্ণ ঋণ সুদ সহ মিটিয়ে দিতে চান, সেই জন্যও অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়।