সংক্ষিপ্ত
কোভিড পরিস্থিতি এক নতুন কর্মসংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে। আর এই কর্মসংস্কৃতি থেকে শিক্ষাও নিচ্ছে সরকারি সংস্থা থেকে বেসরকারি সংস্থাও। যারা পেশাদারিত্বের মোড়কে সংস্থা পরিচালনা করেন এবং কর্মীদের কর্মক্ষমতা ও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর উপরে জোর দেন- তাঁরাও এখন নানাভাবে কর্মসংস্কৃতিকে ঢেলে সাজাতে চাইছেন। আর এখানে একটা যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিসিএস।
এক নতুন উদ্যোগ নিতে চলেছে টাটা টেলিকম সার্ভিস(TCS)। অতিমারি করোনা পরিস্থিতিতেও টাটা সংস্থা তার বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এবং সেখানের কর্মীদের ওপর বিশেষ কোনও প্রভাব পরতে দেয়নি। না মাস মাইনেতে কাঁচি চালিয়েছে না কর্মী ছাঁটাই করেছে। ওয়ার্ক ফ্রম হোম বা বাড়ি থেকে কাজের সুবিধা দিয়েছে। টাটা কোম্পানির অধীনস্থ সংস্থা টাটা টেলিকম সংস্থার কর্মীদর জন্য আসতে চলেছে দুর্দান্ত একটা খবর(Good News)। কারণ টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসে ২০২৫ সালের মধ্যে এক নতুন কর্মসংস্কৃতিকে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর এই নতুন কর্মসংস্কৃতিতে দেখা যাচ্ছে টিসিএস-এর কর্মীদের কাজের সময়ের ২৫ শতাংশের বেশি অফিসে বসে থাকার দরকার নেই। প্রতিদিন মোট কাজের সময়ের ২৫ শতাংশ অফিসে ব্যয় করলেই হবে। এর মানে অফিসে বসে কাজ করার সময়সীমা কমতে চলেছে টিসিএস-এ।
এই মর্মে টিসিএস একটি প্রেসবিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। যাতে একে ২৫ বাই ২৫ মডেল বলে অ্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সংস্থার মতে, অফিসে বসে মোট কাজ করার সময়ের ২৫ শতাংশের বেশি একজন কর্মীকে ব্যয় না করলেও হবে। বাড়তি কাজের চাপ সামলাতেই কর্মীদের অতিরিক্ত সময় অফিসে কাটানোর প্রয়োজন হয়ে পরে। অনেক সময় পরিবার-পরিজনদের বা নিজের প্রয়োজনকেও বিসর্জন দিয়ে অফিস সামলাতে হয়। এই ধরনের কাজের পরিবেশে হয়তো এবার ইতি পড়তে চলেছে। আর এক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টিসিএস(TCS)। যার ফলে অফিসে বসে দৈনিক কাজের সময়ের পুরনো ধারণাও বদলে ফেলতে চলেছে তারা।
বাড়তি কাজের চাপ সামলাতে আগেভাগেই পৌঁছে যেতে হয়। এবার থেকে যাতে কর্মীদের এই ধরনের কঠিন পরিস্থিতির শিকার না হতে হয় সেই পথেই হাঁটছে টিসিএস। রতন টাটার সংস্থা চায়, ৫ বছরের মধ্যে অফিসে বসে কাজের সময়সীমা ২৫ শতাংশের বেশি হওয়ার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এক চতুর্থাংশ সময় অফিস বসে ব্যয় করতে হবে কর্মীদের। অতিমারি পরিস্থিতির কারণে টিসিএস কর্তৃপক্ষ আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী ৫ বছর মাত্র ২৫ শতাংশ কর্মী অফিসে এসে কাজ করবেন। বাকি ৭৫ শতাংশ কাজ করবেন বাড়ি থেকেই। ২০২৫ সাল পর্যন্ত ২৫ শতাংশ কর্মী দিয়েই অফিস চালানো হবে। বাকিরা বাড়ি থেকে কাজ করলেই হবে। কারণ, উৎপাদনশীলতা ১০০ শতাংশ সচল রাখতে এর বেশি সংখ্যক কর্মীকে অফিসে আনানোর প্রয়োজন আছে বলে মনে করে না টিসিএস। তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার দাবি অফিসে বসে কাজের সময়সীমা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্তও ২৫/২৫ মডেলেরই অংশ। তবে এখনই এই নিয়ম কার্যকর হবে না। আরেকটু বেশি সংখ্যক কর্মী অফিসে এসে কাজ করার পরই চালু হবে ২৫/২৫ মডেল।
আরও পড়ুন-Air India Sale: ৬৮ বছর পর এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্বে টাটা গ্রুপ
মঙ্গলবার, টিসিএস মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন,এখন ৫ শতাংশ সহকর্মী অফিসে বসে কাজ করছেন। চলতি বছরের শেষে আরও বেশি সংখ্যক কর্মীদের অফিসে এসে কাজ করার বিষয়ে উৎসাহিত করা হবে। তার পরই ২৫/২৫ মডেল কার্যকর করা হবে। প্রসঙ্গত, অতিরিক্ত সময় অফিসে থাকার ফলে কর্মীদের মানসিক অবসাদ, স্বাস্থ্যহানি, কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলার মতো অনেক সমস্যা ঘটতে পারে বলে নানা সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই টিসিএস কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।