বদলাতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার নিয়ম। বিগত ৫০ বছরের পুরনো নিয়ম ভেঙে সেমিস্টারভিত্তিক পরীক্ষায় বসবে পড়ুয়ারা। আরও কী কী নিয়ম এলো জেনে রাখুক উচ্চমাধ্যমিক পড়ুয়ারা।

পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় বড় রকমের পরিবর্তন আসছে। প্রায় ৫০ বছরের পুরনো নিয়ম ভেঙে, এবার থেকে সেমেস্টার ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করছে পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ (WBCHSE)।

এই বছর অর্থাৎ ২০২৪-২৫ সেশন থেকেই একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা নতুন পদ্ধতিতে পরীক্ষা দিচ্ছে। বদল আনা হচ্ছে পরীক্ষার নিয়মেও। সংসদের দাবি, এই পরিবর্তনের ফলে স্বচ্ছতা ও মানসম্পন্ন মূল্যায়ন সম্ভব হবে, ঠিক যেমন জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় হয়।

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার এই নতুন নিয়ম সংক্রান্ত ঘোষণায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মতোই আমরা চাই ছাত্রদের নাম প্রকাশ্যে না আসুক। পরীক্ষার স্বচ্ছতার জন্যেই এই সিদ্ধান্ত।”

কী কী বদল আসছে?

১। সেমিস্টার ভিত্তিক পরীক্ষা

এই বছর প্রথমবার সেমেস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা দেবে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা। চারটে সেমিস্টারে হবে পুরো পরীক্ষা। ২০২৪-২৫ সেশনের প্রথম আর দ্বিতীয় সেমেস্টার ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। তৃতীয় সেমেস্টার হবে ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫। এবং চতুর্থ সেমেস্টার হবে ফেব্রুয়ারি ২০২৬।

২। ওএমআর শিটে নাম লেখা যাবে না

সংসদের ব্যাখ্যা, ওএমআর শিটে নাম লেখার জন্য অনেক ঘর তৈরি করতে হয়। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি নামের জন্য প্রয়োজন পড়ে ২৫-২৬টি ঘরের, যা ওএমআর ফর্মে প্রায় অসম্ভব। তাই এবার থেকে শুধু রেজিস্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর ও সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে পরীক্ষার্থীদের। নাম না থাকলে পরীক্ষকরা পক্ষপাতিত্ব করতে পারবেন না, এমনটাই বিশ্বাস সংসদের।

৩। ভুল করলেই বাতিল উত্তরপত্র

ওএমআর শিটে কোনও তথ্য ভুল লিখলে পুরো উত্তরপত্র বাতিল হয়ে যেতে পারে বলে জানানো হয়েছে। তাই ওএমআর শিটে যদি ভুলভাবে রোল নম্বর বা তথ্য পূরণ করা হয়, তবে পুরো উত্তরপত্র বাতিল হতে পারে।

ছাত্রছাত্রীদের জন্য সংসদের ওয়েবসাইটে ওএমআর ফর্মের অনুশীলন কপি আপলোড করা হয়েছে।

শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রতিক্রিয়া

এ বিষয়ে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য জানান, “উচ্চমাধ্যমিকের ইতিহাসে এই প্রথম নাম না লিখেই পরীক্ষা দিতে চলেছে ছাত্রছাত্রীরা। এতে ওদের জন্য অনেকটাই চাপ কমবে। এমন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত একেবারে সময়োপযোগী”। এই পদ্ধতির ফলে ফলাফল নির্ধারণ আরও কার্যকরী হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।