সংক্ষিপ্ত
সাকে ভারতী আরও পাঁচটা ভারতীয় কৃষিজীবি পরিবের মেয়ের মতই পড়াশুনার জন্য তেমন সুযোগ পান না। কিন্তু সীমিত যে সুযোগ পেয়েছিলেন সেটাকেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি।
দৃঢ়তা আর সংকল্পের জয় বলা যেতেই পারে। কঠোর অধ্যাবসায় আর মনের জোরেই কঠিন বাধা পার করলেন এক মহিলা। অসংখ্য চ্যালেঞ্জ পার করে রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করলেন। তিনি অন্ধ্র প্রদেশের অনন্তপুর জেলার নাগুলাগুদ্দাম গ্রামের বাসিন্দা। নাম সাকে ভারতী । তাঁর কঠোর অধ্যাবসায় আর দৃঢ়় সংকল্পের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েচে।
সাকে ভারতী আরও পাঁচটা ভারতীয় কৃষিজীবি পরিবের মেয়ের মতই পড়াশুনার জন্য তেমন সুযোগ পান না। কিন্তু সীমিত যে সুযোগ পেয়েছিলেন সেটাকেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। তিন ভাইবোনের মধ্যে সাকে ভারতী বড় সন্তান ছিলেন।। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি স্কুলে পড়াশুনা করেছেন তিনি। আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে বাবা-মা মেয়ের পড়াশুনা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ১২ ক্লাস পাস করার পরেই তাঁর মামার সঙ্গে তার বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু পড়াশুনায় আগ্রহী সাকে ভারতী নিজের চেষ্টায় তারপরইতৈরি করেন ইতিহাস।
অদম্য সাকে ভারতী থামতে নারাজ। তিনি অনন্তপুর এসএসবিএন ডিগ্রি ও পিজি কলেজ থেকে রসায়ন নিয়ে পড়াশুনা করেন। পড়াশুনার সেই দিন গুলি ছিল কঠোর পরিশ্রমের। কিনি সূর্য ওঠার আগেই ঘুম থেকে উঠে পড়তেন। তার ঘর গৃহস্থালীর কাজ শেষ করে কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা দিতেন। কয়েক মাইল পথ হেঁটে এসে তবেই কলেজে যাোয়ার বাস পেতেন। তবে ছাত্রীর এই হার না মানা মনোভাব থেকে শিক্ষকরা এগিয়ে এসেছিল। পড়াশুনার জন্য বিনা পয়সাতেই শিক্ষকরা সহযোগিতা করত। তিনি শ্রীকৃষ্ণ দেবরাজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
সাকে ভারতী জানিয়েছেন তাঁর স্বামী শিবপ্রসাদ তাঁকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন। স্বামীর সাহায্য না পেলে এই কঠিন লড়াইয়ে জয়ী হতে পারতেন না। সাকে ভারতী আরও বলেছেন, স্বামীকে কিছু বলার আগেই তাঁর স্বামী বুঝতে পেরেছিল তাঁর পড়াশুনার ইচ্ছের কথায়। তারপর থেকেই স্বামী এগিয়ে এসেছিল।
আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে সাকে ভারতীর। তিনি আরও বলেন শিক্ষাই সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এটা তিনি প্রথম থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন। আর্থিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও তিনি উচ্চ শিক্ষা অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন স্কলারশিপ তাঁকে অর্থিক দিন দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে দিয়েছে।
শিবপ্রসাদ একজন ভূমিহীন কৃষক হিসেবে কাজ করেন। স্ত্রীর সাফল্যে তিনি খুশি। তিনি বলেছেন, তাঁর স্ত্রী জীবনে একটি স্বপ্ন দেখেছিলেন, আজ স্ত্রীর স্বপ্ন পুরণ হয়েছে। যা তাঁকে গর্বিত করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।