এবার অন্যতম উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র বেহালা পূর্ব এখানে টিএমসির প্রার্থী শোভনপত্নী রত্না চ্যাট্টোপাধ্যায় অপরদিকে বিজেপির প্রার্থী তারকা  অভিনেত্রী পায়েল সরকার হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের  

তাপস দাসঃ কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ১৫৩ নং বিধানসভা কেন্দ্র বেহালা পূর্ব। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত এখানে ছিল সিপিএম রাজ। প্রথমে নিরঞ্জন মুখার্জী, পরে কুমকুম চক্রবর্তী। ২০০১ সালে অবশ্য এখান থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন পরশ দত্ত। ২০১১ সালে পট পরিবর্তনের বছরে এখানে জেতেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। যাঁকে নিয়ে এখন মাঝেমাঝেই সংবাদমাধ্যম আলোচনায় মেতে ওঠে। সে আলোচনা কখনও রাজনীতির কারণে, কখনও বৈশাখীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কারণে। শোভন তৃণমূল ছাড়েন স্ত্রী রত্না ও প্রেমিকা বৈশাখীর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে। কলকাতা পুরসভার মেয়র পদ ছাড়েন, ছাড়েন তৃণমূল কংগ্রেসও। বিজেপিতে যোগদান করার পরও, বৈশাখীর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে তিনি সেখানেও তেমন কল্কে পাননি। শোভনের প্রত্যাশা ছিল, দাবিও ছিল বিজেপি তাঁকে বেহালা পূর্ব বিধানসভার টিকিট দিক। কিন্তু তার আগেই তৃণমূল কংগ্রেস তাদের প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল শোভনপত্নী রত্না চ্যাটার্জিকে। স্বামী পরিত্যক্ত হিসেবে তিনি যদি অতিরিক্ত সুবিধা পান, সম্ভবত সেই বিবেচনাতেই শোভনকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। তারা অন্যভাবে মাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে বিধানসভার টিকিট দেবার ব্যাপারে। বেহালা পশ্চিমে যেমন তারা অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চ্যাটার্জিকে টিকিট দিয়েছে, তেমনই বেহালা পূর্ব বিধানসভায় টিকিট দিয়েছে আরেক অভিনেত্রী পায়েল সরকারকে। দুই মহিলার লড়াইয়েই অবশ্য সীমাবদ্ধ থাকছে না বেহালা পূর্বের লড়াই। সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থী এখানে সিপিএমের শমিতা হাড়া চৌধুরী। 

২০১১ সালের ভোটে এখানে শোভন সিপিএমের কুমকুমকে হারিয়েছিলেন ৪৮ হাজারের মত ভোটে। ২০১৬ সালে এখান থেকে শোভনের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হিসেবে সিপিএমের সমর্থনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। অম্বিকেশ মহাপাত্র কার্টুন কাণ্ডে জেলে গিয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কার্টুন শেয়ার করায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করেছিল সরকার। ব্যঙ্গচিত্র সম্পর্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসহিষ্ণুতা প্রকাশ্যে আসে সেই সময়ে। অম্বিকেশের বিরুদ্ধে সরকারি পদক্ষেপের সমালোচনায় মুখর হয় সোশাল মিডিয়াও। তিনি সেই অ্যাডভান্টেজ সঙ্গে নিয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। শোভনকে হারাতে না পারলেও জয়ের ব্যবধান কমিয়ে দিয়েছিলেন অনেকটাই। শোভন জেতেন ২৪ হাজারের মত ভোটে। 

আরও পড়ুনঃমাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ এবার সিঙ্গুরে শিল্প চান, টাটা এলেও আপত্তি নেই

আরও পড়ুনঃওজনদার প্রার্থী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তিনি কি টানা ২৫ বছর রাজ করবেন বেহালা পশ্চিমে

২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বেহালা পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন এ বিশ্বজিৎ নাইডু। তিনি ৩৬৯২ ভোট পান। ২০১৬-র নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন চন্দ্রভান সিং। তিনি পেয়েছিলেন ২১৮৫৪ ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বেহালা পূর্ব বিধানসভা ক্ষেত্রে তৃণমূলের মালা রায় ৮৯ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিলেন। বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী চন্দ্রকুমার বোস পেয়েছিলেন ৭৩ হাজারের বেশি ভোট। সিপিএমের নন্দিনী মুখার্জি পেয়েছিলেন ৩৩ হাজারেরও কম ভোট। এই কেন্দ্রের ভোট হবে চতুর্থ দফায়, ১০ এপ্রিল। শেষ হাসি কে হাসবে তার উত্তর মিলবে ২ মে।

আরও পড়ুনঃ'CRPFকে ঘেরাওয়ের কথা কেন বলছেন দিদি', শহরে এসে ক্ষোভ উগরে জবাব চাইলেন শাহ


YouTube video player