সংক্ষিপ্ত

 

  • রাজারহাট গোপালপুর ছিল একদা সিপিএমের এলাকা 
  •  ২০০১ সালে অবশ্য এখানে জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস 
  • ২০২১ সালে তৃণমূল এখানে প্রার্থী করেছে  অদিতি মুন্সীকে 
  • একুশের ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বী- অদিতি মুন্সী আর শমীক ভট্টাচার্য 


তাপস দাশঃ- এ এক আশ্চর্য রণক্ষেত্র। মূল প্রতিদ্বন্দ্বী যে দুজন, তাঁদের মধ্যে কোনও মিল নেই। একজন নবাগত, আরেকজন পোড় খাওয়া। একজন রাজনীতি জগতেরই মানুষ, অন্যজন সংস্কৃতি জগতের। একজন সদ্য দলে যোগ দিয়েছেন, অন্যজন দীর্ঘদিন ধরে দলে রয়েছেন। ক্ষেত্র- রাজারহাট-গোপালপুর। প্রতিদ্বন্দ্বী- অদিতি মুন্সী আর শমীক ভট্টাচার্য। 

আরও পড়ুন, বারবার দফতর বদল, কেন্দ্র ও আত্মবিশ্বাস বদলায়নি ব্রাত্য বসুর 

 

রাজারহাট গোপালপুর ছিল একদা সিপিএমের এলাকা। ৭৭ থেকে ৯৬, এখানে সিপিএম হারেনি। একই পার্টি, একই বিধায়ক। তিনি রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল, যিনি রবীন মণ্ডল নামে অধিক পরিচিত। ২০০১ সালে অবশ্য এখানে জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০০৬ সালে ফের জেতে সিপিএম। ফের বিধায়ক হন রবীন মণ্ডল। ২০১১ সালে, পটপরিবর্তনের সূচনাযুগে এখানে জিতেছিলেন শ্রমিক নেতা, একদা নকশালপন্থী, পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পূর্ণেন্দু বোস। ২০১৬ সালেও তিনিই জয়লাভ করেন। ২০১১ সালে পূর্ণেন্দু বোসের কাছে পরাজিত হন সেই দাপুটে নেতা রবীন মণ্ডল। তিনি হেরেছিলেন ৩৫ হাজার সাতশোরও বেশি ভোটে। ২০১৬ সালে পূর্ণেন্দুর বিরুদ্ধে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন নেপালদেব ভট্টাচার্য। পূর্ণেন্দুর জয়ের ব্যবধান কমে অনেকটাই। তিনি জিতেছিলেন ৭ হাজারেরও কম ভোটের ব্যবধানে। 

 

আরও পড়ুন, রাসবিহারী কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বালাকোট হামলার নেপথ্য নায়ক সুব্রত সাহা 

 

এগারোর নির্বাচনে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মনোরঞ্জন দাস পেয়েছিলেন ৩৮৩৭ ভোট। আর ২০১৬ সালের নির্বাচনে তার চেয়ে পাঁচ গুণেরও বেশি ভোট গিয়েছিল পদ্মে। বিজেপি প্রার্থী দিলীপ মিত্র পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৬৮৩ ভোট। এবারে বিজেপি এই কেন্দ্রে দাঁড় করিয়েছে তাদের রাজ্য নেতা শমীক ভট্টাচার্যকে। শমীকের কেন্দ্র ছিল বসিরহাট দক্ষিণ। সেখান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে তাঁকে। ২০১৪ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি প্রথমবার বিধানসভায় যান। ২০১৬ সালে ওই কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান  তিনি। 

আরও পড়ুন, পয়লা বৈশাখের সকালে বর্ণাঢ্য 'মঙ্গল শোভা যাত্রা', শহরবাসীর সঙ্গে সামিল টালিগঞ্জের অভিনেতারাও 

 

২০২১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস এখান থেকে প্রার্থী করেছে সংগীত শিল্পী অদিতি মুন্সীকে। অদিতি তৃণমূলে সদ্য যোগ দিয়ে টিকিট পাওয়া প্রার্থীদের একজন। সারেগামাপা রিয়েলিটি শো থেকে উঠে আসা এই কীর্তনশিল্পী নিঃসন্দেহে জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখেই পড়েছেন। আবার উল্টোদিকে, সংগীতশিল্পী হিসেবে জনপ্রিয় অদিতিকে প্রার্থী হিসেবে পেয়ে শমীকের লড়াইও তত সহজ নয়। এই দ্বৈরথের মধ্যে সিপিএম এই কেন্দ্রে আর রবীন মণ্ডল বা নেপালদেব ভট্টাচার্যের মত নেতা দাঁড় করায়নি। তাদের প্রার্থী শুভজিৎ দাশগুপ্ত। সব মিলিয়ে ১৭ এপ্রিল, পঞ্চম দফায় রাজারহাট গোপালপুর বিধানসভা কেন্দ্রের লড়াই দুই সেয়ানেই সীমাবদ্ধ থাকবে বলে মনে হচ্ছে।