সংক্ষিপ্ত

কোভিড-১৯ মহামারির (COVID-19 Pandemic) তৃতীয় তরঙ্গের আশঙ্কার মধ্যেই শুরু হল ১৫-১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ (Covid vaccination for 15-18 year)। কোউইন (CoWIN) অ্যাপে আট লক্ষেরও বেশি কিশোর-কিশোরীর নাম নিবন্ধিত করেছে। 

ওমিক্রন (Omicron) বিকল্পের প্রভাবে দেশে কোভিড-১৯ (COVID-19) সংক্রমণের তীব্র বৃদ্ধি ঘটেছে। তার মধ্যেই সোমবার, ৩ জানুয়ারি থেকে ১৫-১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের টিকা দেওয়া শুরু হচ্ছে (Covid vaccination for 15-18 year)। রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোউইন (CoWIN) অ্যাপে আট লক্ষেরও বেশি কিশোর-কিশোরীর নাম নিবন্ধিত করা হয়েছে। এই বয়স গোষ্ঠীকে দেশীয়ভাবে তৈরি ভারত বায়োটেকের (Bharat Biotech) কোভ্যাক্সিন (Covaxin) টিকা দেওয়া হবে। 

কিশোর কিশোরীদের টিকাদানের বিষয়ে গত বছর ২৭ ডিসেম্বর, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিশেষ নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। সকল টিকাদান কেন্দ্রকে সেই নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে। যাতে করে কিশোরকিশোরীদের টিকাদান এবং নিয়মিত টিকাদান প্রক্রিয়া মিলে মিশে না যায়, কোনও ভাবে ভুল করে কিশোর-কিশোরীদের কোভিশিল্ড বা অন্য কোনও অপরিক্ষীত করোনাভাইরাস টিকা দিয়ে দেওয়া না হয়, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য (Mansukh Mandaviya), রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে এর জন্য় ১৫-১৮ বছর বয়স গোষ্ঠীর জন্য পৃথক টিকাদান কেন্দ্র, সেশন সাইট, লাইন এবং পৃথক টিকাদান দল সরবরাহ করার উপদেশ দিয়েছেন। গত ২৪ ডিসেম্বর, ভারতের ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অথোরিটি (DCGA) শর্ত সাপেক্ষে ১২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য কোভ্যাক্সিন টিকাকে জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল। তারপরই প্রধানমন্ত্রী শিশুদের জন্য টিকাদান অভিযান শুরুর ঘোষণা করেছিলেন। 

রাজধানী দিল্লিতে (Delhi) ১৫-১৮ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার জন্য সরকারী হাসপাতাল, ডিসপেনসারি, পলিক্লিনিক এবং দিল্লি সরকারি ও পৌরসভার বিদ্যালয়গুলি মিলিয়ে মোট ১৫৯ টি টিকাদান কেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে স্থাপিত টিকাদান কেন্দ্রগুলির জন্য বিশেষ প্রোটোকল তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে একজন করে নোডাল ইনচার্জ নিয়োগ করতে হবে। স্কুল আইডি কার্ডই টিকাকরণের জন্য বৈধ পরিচয়পত্র হিসাবে গ্রহণ করা হবে। টিকাদান কেন্দ্রগুলিতে ওয়াক-ইন রেজিস্ট্রেশন করার সুবিধাও থাকছে। 

পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের জনসংখ্যা প্রায় ৪৮ লক্ষ। বাংলায় টিকা নেওযার জন্য শিশুরা নাম নথিবুক্ত করতে পারবে, স্কুলের পরিচয় পত্র দিয়েই। বেশ কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি স্কুলে টিকাদান করা হবে। তবে, সেইসঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও শিশুদের টিকাকরণ কেন্দ্র রাখা হচ্ছে। অনেক বেসরকারি স্কুল, নিজেদের উদ্যোগে শিশুদের টিকাদানের জন্য, বেসরকারি হাসপাকালগুলির সঙ্গে গাটছড়া বাঁধছে। 

হরিয়ানায় (Haryana) ১৫ থেকে ১৮ বছরের ১৫ লক্ষেরও বেশি শিশু করোনভাইরাস ভ্যাকসিন পাওয়ার যোগ্য। এই রাজ্যে পৃথক টিকাদান কেন্দ্র স্থাপিত না হলেও, তাদের জন্য আলাদা লাইন রাখা হবে এবং তাদের টিকা দেওয়ার জন্য পৃথক কর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হবে। যেখানে যেখানে সম্ভব, সেখানে এই বয়স গোষ্ঠীর জন্য আলাদা টিকা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। ১ জানুয়ারি থেকে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শুরু করা হয়েছিল। অন-সাইট রেজিস্ট্রেশনের বিকল্পও রাখা হয়েছে।

কেরলে (Kerala) কিশোর-কিশোরীদের টিকাদানের জন্য বিশেষ টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। যারা কোউইন পোর্টালে নাম নিবন্ধন করবে, তাদের টিকাদানে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। যারা কোউইন-এ নাম নিবন্ধন করতে অক্ষম তাদের শিক্ষা বিভাগ থেকে সহায়তা করা হবে। টিকা দেওয়ার জন্য স্পট রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ১৫-১৮ বছর বয়সী এবং প্রাপ্তবয়স্কদের টিকাদান কেন্দ্র আলাদা করে চেনার জন্য দুটি পৃথক রঙের বোর্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে জন্য কেন্দ্রগুলির গোলাপী বোর্ড থাকলে, তা হবে শিশুদের টিকাদান কেন্দ্র। প্রাপ্ত বয়স্কদের টিকাদান কেন্দ্রের বাইরে নীল রঙের বোর্ড ব্যবহার করা হবে।

রাজস্থানেও (Rajasthan) ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য রাজ্য জুড়ে ৩,৪৫৬ টি সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে টিকাদান কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।

অসমে (Assam) শিশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছএ ৫০০ টি স্কুলে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে জেলার এর জন্য ডেপুটি কমিশনারদের ছোট জেলার ক্ষেত্রে কমপক্ষে ১০ টি করে এবং বড় জেলাগুলিতে ১৫ থেকে ২০ টি করে স্কুল নির্বাচন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। প্রতিটি স্কুলে একটি করে স্বাস্থ্যকর্মীদের দল মোতায়েন করা হবে। প্রতিটি দলে একজন ভ্যাক্সিনেটর, একজন যাচাইকারী, সিস্টেম সাপোর্ট দেওয়ার জন্য একজন ব্যক্তি - ন্যূনতম ৩ থেকে ৪ জন থাকবেন। 

তামিলনাড়ুতে (Tamil Nadu) ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের সংখ্যা ৩৩ লক্ষেরও বেশি। তাদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই টিকা দেওয়া হবে। প্রতিটি স্কুলে একটি করে মেডিকেল টিম নিয়োগ করা হয়েছে।