সংক্ষিপ্ত
করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় তরঙ্গে ভাটার টান
কিন্তু ক্রমে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস
তবে ধুসরতার মধ্যেও সোনালি আলো দেখা গেল পাটনায়
সাফল্যের সঙ্গে ক্রিকেট বলের মাপের কালো ছত্রাক বের করা হল মস্তিষ্ক থেকে
গত ২০ মে তারিখেই মিউকরমাইকোসিস বা কালো ছত্রাক সংক্রমণকে মহামারি রোগ বলে ঘোষণা করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তারপর থেকে গত তিন সপ্তাহে প্রায় ১৫০ শতাংশ বেড়েছে এই ছত্রাক ঘটিত সংক্রমণের ঘটনা। আর এই সংক্রমণে ৫০ শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে থাকে মৃত্যুর ঝুঁকি। তবে এই ধুসরতার মধ্যেই কিছুটা হলেও সোনালি আভা দেখালেন বিহারের পাটনার ইন্দিরা গান্ধী ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (IGIMS) -এর চিকিত্সকরা। শুক্রবার এক ৬০ বছর বয়সী আক্রান্ত রোগীর মস্তিষ্ক থেকে প্রায় ক্রিকেট বলের মতো বড় আকারের কালো ছত্রাকের কলোনি বের করে আনেন তাঁরা। আর সেই রোগীও আপাতত স্থিতিশীল।
জানা গিয়েছে ওই আক্রান্ত ব্যক্তি পাটনার যামুই এলাকার বাসিন্দা, নাম অনিল কুমার। সম্প্রতি তিনি কোভিড আক্রান্ত হয়েছিলেন, সুস্খও হয়ে যান। কিন্তু, করোনা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও, গত কয়েকদিন ধরে তাঁর ঘন ঘন মাথা ঘুরছিল, দু-তিন বার সংজ্ঞাও হারান। এরপরই তিনি স্থানীয় এক ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি তাঁকে আইজিআইএমএস হাসপাতালে যেতে বলেছিলেন। হাসপাতালেই ধরা পড়েছিল তিনি মিউকরমাইকোসিসে ভুগছিলেন, তাঁর মস্তিষ্কে বাসা বেঁধেছে কালো ছত্রাক। এরপর গত শুক্রবার, ডা. ব্রজেশ কুমারের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন ডাক্তার মিলে ওই অস্ত্রোপচার করেছেন। প্রায় তিন ঘন্টা সময় লেগেছিল।
হিন্দুস্তান টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডাক্তাররা জানিয়েছেন, কালো ছত্রাকের বীজ, অনিল কুমারে নাক দিয়ে প্রবেশ করে সোজা মস্তিষ্কে চলে গিয়েছিল। তারপর, সেখানেই কলোনি তৈরি করা শুরু করেছিল। অনিল কুমার ভাগ্যবান, যে ছত্রাকটি তাঁর চোখে ছড়িয়ে যায়নি। এই কারণেই অস্ত্রোপচারের পরও তাঁর চোখদুটি অক্ষত রয়েছে। সাধারণত মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণের ক্ষেত্রে মস্তিষ্ক থেকে ছত্রাকটি চোখে ছড়িয়ে পড়ে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রোগীর প্রাণ বাঁচাতে ডাক্তারদের তাঁর চোখ বাদ দিতে হয়।
আরও পড়ুন - আকাশ থেকে হাতে আসবে করোনা ভ্যাকসিন, টিকাকরণের অনন্য কৌশল নিচ্ছে মোদী সরকার
আরও পড়ুন - করোনার টিকা নিয়ে শরীর হয়ে গেল 'চুম্বক' - এমনটাও কি হতে পারে, দেখুন
কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ আসার পর, গত ২২ মে বিহারে এই রোগকে মহামারি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত এই রাজ্যে ৫০০-রও বেশি মিউকরমাইকোসিসের ঘটনা ধরা পড়েছে। এরমধ্যে ১০০ টিরও বেশি ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছে আইজিআইএমএস-এই। এই হাসপাতালে মিউককরমাইকোসিস চিকিৎসার জন্য একটি পৃথক গঠন করা হয়েছে। অনাক্রম্যতা কম থাকলেই ছত্রাকঘটিত সংক্রমণ ঘটে। এই কারণেই কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়া এবং ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের অনাক্রম্যতা কম থাকে বলেই, বর্তমানে মিউকরমাইকোসিস সংক্রমণ এত বেশি দেখা যাচ্ছে। গত তিন সপ্তাহে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মোট ৩১ হাজারেরও বেশি কালো ছত্রাক সংক্রমণের ঘটনা নথিবদ্ধ হয়েছে। আর মৃত্যু হয়েছে ২,১০০-রও বেশি মানুষের।