সংক্ষিপ্ত

দেশে রেমডিসিভির-এর আকাল

তারমধ্য়েই ধরা পড়ল বড়সড় জালিয়াতি চক্র

গ্রেফতার করা হল সাতজনকে

গ্লুকোজ পাউডার থেকে তৈরি করা হচ্ছিল নকল রেমডিসিভির

করোনার গুরুতর উপসর্গ থাকা রোগীদের সংক্রমণ মুক্ত করতে অনেক ক্ষেত্রেই অ্যান্টি-ভাইরাল ড্রাগ, রেমডিসিভির ব্যবহার করা হচ্ছে। কোভিডের দ্বিতীয় তরঙ্গের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে এই ওষুধ না মেলায় কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে মোদী সরকারকে। দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে কালোবাজারি। এমনিতে যে ইনজেকশনটির দাম ৮৯৯ টাকা, সেটিই এখন কালোবাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০,০০০ টাকায়! এই অবস্থায় আবার মোদীরাজ্য থেকেই ধরা পড়ল নকল রেমডেসিভিয়ার উত্পাদনের একটি বড়সড় চক্র। এই কাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

জানা গিয়েছে, মোরবি শহরে দুই সন্দেহভাজন চড়া দামে কালোবাজারে নকল রেমডেসিভিয়ার ইঞ্জেকশন বিক্রি করছে বলে, খবর পেয়েছিল পুলিশ। আর সেই ঘটনার তদন্তে নেমেই সামনে আসে এ চক্রের কীর্তি। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, প্রথমে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মোরবি শহরের ওই দুই বাসিন্দা - রাহুল কোটিয়া ও রবিরাজ হিরানীকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ওই ধরণের ৪১ টি জাল রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন উদ্ধার হয়। সেইসঙ্গে পুলিশ গত কয়েকদিনে ওই জাল ইঞ্জেকশনগুলি বিক্রি করে অর্জিত ২.১৫ লক্ষ টাকার নগদ অর্থও বাজেয়াপ্ত করে তাদের কাছ থেকে।

ওই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, তাদের ওই নকল রেমডিসিভিরগুলি সরবরাহ করেছিল আহমেদাবাদের জুহাপুরা এলাকা থেকে। আর এই তথ্য থেকেই মোরবি পুলিশের জালে আসে মহাম্মদ আশিম ওরফে আশিফ এবং রামিজ কাদরি নামে আরও দুই ব্যক্তি। আহমেদাবাদ পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের সহায়তায় এই দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় ১,১৭০ টি নকল ইনজেকশন এবং ১.৩৭ লক্ষ টাকার নগদ।

এই দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে মোরবি পুলিশ জানতে পারে এই চক্রের মাথা কৈশল ভোরা নামে সুরাতের এক বাসিন্দা। সে আর তার ডানহাত মুম্বইয়ের বাসিন্দা পুনিত তালাল শাহ-ই এই পুরো জালিয়াতির ছক কষেছিল বলে জানা যায়। আর এরপরই ধৃতদের সঙ্গে নিয়ে, সুরাত গ্রামীণ পুলিশকে নিয়ে সুরাতের একটি ফার্মহাউসে হানা দিয়েছিল মোরবি পুলিশ। সেখানে গিয়ে পুলিশের চক্ষু চড়কগাছে। দেখা যায় ওই ফার্মহাউসটি ভাড়া নিয়ে, সেখানে প্রায় নকল রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন তৈরির কারখানা বানিয়ে ফেলেছিল এই চক্র।

কৈশল ভোরা এবং পুনিত তালাল শাহকে তো গ্রেফতার করা হয়েইছে। সেইসঙ্গে ওই মিনি কারখানা থেকে মিলেছে ৩০ হাজার রেমডিসিভির-এর স্টিকার এবং ৬০,০০০ এরও বেশি খালি শিশি এবং ৯০ লক্ষ টাকারও বেশি নগদ অর্থ।

জানা গিয়েছে জালিয়াতি চক্রটি রেমডিসিভির-এর বদলে ইনজেকশনের খালি শিশিতে ওজন মেপে ভরে দিত গ্লুকোজ পাউডার। তারপর তার মুখ সিল করে গায়ে সেঁটে দিত রেমডিসিভির-এর নকল স্টিকার। ফলে বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকত না, ভিতরে রেমডিসিভির না গ্লুকোজ পাউডার, কী রয়েছে। গত শনিবার এই চক্র ধরা পড়ে গুজরাত পুলিশের হাতে। কিন্তু, তার আগে গত ১০-২৫ দিন ধরে সমানে কাজ চালিয়েছে তারা। ফলে বহু মানুষই কালোবাজারে অতিরিক্ত দাম দিয়ে রেমডিসিভির-এর বদলে ওই শিশিতে ভরা গ্লুকোজ পাউডার কিনেছেন।