সংক্ষিপ্ত

করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ রয়েছে

কিন্তু, তার জেরে অযথা হেনস্থার ঘটনাও বাড়ছে ভারতে

উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যের বাসিন্দারা ছিলেনই

এবার মা-সহ প্রতিবেশীদের হাতে নাকাল হলেন বিমানকর্মীও

 

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে ভারতে। এই নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কিন্তু, অযথা আতঙ্কিত হয়ে বিশৃঙ্খল হয়ে পড়াটা কোনও কাজের কথা নয়। বরং, তার চেয়ে নির্ভরযোগ্য জায়গা থেকে রোগটি সম্পর্কে ভালো করে জেনে বুঝে নিয়ে নিজে সাবধানে থাকাই সবচেয়ে ভালো উপায়। কিন্তু, বিপর্যয়ের মুখে ভারতের কোভিড-১৯ রোগ নিয়ে একদিকে যেমন রয়েছে জাতিবিদ্বেষ, তেমনই শুধুমাত্র সন্দেহের ভিত্তিতেই অন্যায় আচরণের মুখে পড়তে হচ্ছে বহু নাগরিককে। সম্প্রতি এমনই এক ভয়াবহ অবস্থার মুখে পড়তে হয়েছে  করা হয়েছে।

ওই মহিলা বিমান কর্মী অশ্রুসিক্ত চোখে একটি ভিডিও পোস্টে তাঁকে কীভাবে প্রতিবেশীদের হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে তা বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন যেহেতু তিনি এক বিমান সংস্থায় কাজ করেন, তাই তাঁর এলাকায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে তিনি করোনভাইরাস সংক্রমণের শিকার। তিনি জানিয়েছেন মা-কে নিয়ে তিনি একাই থাকেন। যে সময় তিনি কাজের জন্য বাড়ি থাকছেন না, তখন প্রতিবেশীরা তাঁর বাড়িতে গিয়ে তার মা-কে হেনস্থা করা হচ্ছে। মুদি দোকানে, বাজারে তাঁর মা-কে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দোকানিদের প্রতিবেশীরা ভয় দেখাচ্ছেন তাঁর মায়ের থেকেও করোনাভাইরাস অন্য লোকের দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

ওই মহিলা ও তাঁর মা কোন শহরের বাসিন্দা তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ভিডিওটি করোনাভাইরাস মহামারীতে লকডাউনে থাকা ভারতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। অনেকেই ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। সেই সঙ্গে অনেকেই ওই তরুমীর প্রতিবেশীদের এমন নির্মম আচরণের তীব্র নিন্দা করেছে। অনেকেই বলছেন, বিদেশ থেকে ফিরে এলে বা অসুস্থ বোধ করলে যেমন নিজে থেকেই করোনাভাইরাস পরীক্ষা করানোটা সচেতন নাগরিকের দায়িত্ব, তেমনই সন্দেহের বশে বিশৃঙ্খল না হয়ে পড়াটাও তার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। এশিয়ানেট নিউজ বাংলার তরফ থেকেও অনুরোধ করা হচ্ছে গুজব ছড়াবেন না, বা গুজবে বিশ্বাসও করবেন না। শুধুমাত্র সরকারি তথ্যের উপরই ভরসা রাখুন।  

ভারতের প্রথম কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীও দাবি করেছেন যে তাঁর কাছেও অজস্র বিদ্বেষমূলক বার্তা পাছানো হয়েছিল। এমনকী পরামর্শের আড়ালেও ঘৃণা প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন গত ১ মার্চ তাঁর ছবি এবং ফোন নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকেই এই ধরণের বার্তা আসতে থাকে। হাসপাতাল থেকে তাঁকে সুস্থ ঘোষণা করে মুক্তি দেওয়ার পরও সোশ্য়াল মিডিয়ায় কেউ কেউ তাঁকে বলেন, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে গেলে তাঁর ফুসফুসের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কেটে বাদ দেওয়া উচিত।

এছাড়া দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বাস করা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির বাসিন্দাদের উপর বর্ণবিদ্বেষী হামলা হয়েছে। তাদের মুখে চিনাদের মতো মঙ্গোলিয় ছাপ থাকার কারণে ধরে নেওয়া হচ্ছে তাদের থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে। করোনাভাইরাস বলে সম্বোধন করা, বাড়ি বাড়া দিতে না চাওয়া তো ছিলই, সেই সঙ্গে সোমবারই দিল্লির বিজয়নগরে একজন মধ্যবয়স্ক ব্যক্তি এক উত্তর-পূর্বের ছাত্রীকে দেখে 'করোনা' বলে চিৎকার করে তার গায়ে থুতু ছিটিয়ে স্কুটারে করে চম্পট দিয়েছে বলে অভিযোগ।