সংক্ষিপ্ত
গত ২১ জুন ভারতে রেকর্ড পরিমাণ করোনা টিকা দেওয়া হয়েছিল
সবচেয়ে বেশি টিকাকরণ হয়েছিল মধ্যপ্রদেশে
কিন্তু, সেখানে টিকা প্রাপকদের তালিকায় রয়েছে ১৩ বছরের কিশোরের নামও
সত্য়িই কী অনূর্ধ্ব ১৮দেরও টিকা দেওয়া হল মধ্যপ্রদেশে
গত সোমবার, ২১ জুন সন্ধ্যায় একটি মেসেজ পেয়ে চমকে উঠেছিলেন ভোপালের টিলা জামালপুরার বাসিন্দা রজত ডাঙ্গরে। সরকারের পাঠানো ওই বার্তায় বলা হয়েছিল, তাঁর পুত্র বেদান্ত ডাঙ্গরে করোনা টিকা পেয়েছে। অথচ বেদান্ততর বয়স মাত্র ১৩। ভারতে তো ১৮ বছরের নিচে কাউকে টিকা দেওয়া শুরুই হয়নি। তবে কীকরে তাঁর প্রতিবন্ধী ছেলে টিকা পেল? আসলে, শুধু বেদান্ত ডাঙ্গরেই নয়, একে একে এমন অনেক ব্যক্তির কথা জানা যাচ্ছে, যাঁরা টিকা না পেলেও, ২১ জুন তারিখে টিকা পাওয়ার শংসাপত্র হাতে পেয়ে গিয়েছেন।
২১ জুন, সারা দেশে ৮৫ লক্ষেরও বেশি ডোজ করোনা টিকা দিয়ে রেকর্ড করেছিল ভারত। সেই রেকর্ডে নিয়ে শুরু হয়েছিল কংগ্রেস-বিজেপি রাজনৈতিক তরজা। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল পাবলিসিটি স্টান্ট-এর জন্য আগে থেকে টিকা মজুত করে রেখে রেখে ওই দিন রেকর্ড করা হয়েছিল। যা নিয়ে কড়া জবাব দিয়েছিলেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। সেই বিতর্ক এখনও চলছে। ওইদিন, দেশের মধ্যে সবথেকে বেশি টিকা দিয়েছিল মধ্যপ্রদেশ, ১৭ কোটিরও বেশি ডোজ। তবে সেই ১৭ কোটি টিকাকরণে বেশ কিছু 'জল মেশানো'র কাহিনি সামনে উঠে আসছে।
টিকা না পেলেও, ২১ জুন তারিখে টিকা পাওয়ার শংসাপত্র হাতে পেয়ে গিয়েছেন অনেকেই
১৩ বছরের বেদান্তর বাবা এই নিয়ে অভিযোগ জানানোর চেষ্টা করেও পারেননি। টিকাদানের শংসাপত্রটি ডাউনলোড করে তিনি দেখেছিলেন, বেদান্তর যেসব নথি সেখানে দেওয়া রয়েছে, তা বস্তুত বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি হিসাবে তাঁর পুত্রের প্রাপ্য পেনশনের জন্য কিছু দিন আগে পৌরসভায় তাঁরই জমা দেওয়া নথিপত্র। তবে বেদান্ত একা নয়, মধ্যপ্রদেশে তার মতো এরকম টিকা না পেয়েও টিকার শংসাপত্র পেয়ে যাওয়া ব্যাক্তিদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে।
কারোর মোবাইলে আচমকা এমন তিন ব্যক্তির টিকা নেওয়ার শংসাপত্র এসেছে, যাঁদের তিনি চেনেনই না। কেউ আবার টিকা নিতে চেয়ে নাম নথিভুক্ত করে স্লট পাচ্ছিলেন না। কিন্তু, ওই দিন আচমকা তাঁর টিকা নেওয়ার শংসাপত্রের লিঙ্ক দেওয়া মেসেজ পেয়ে গিয়েছেন তিনি। আবার কেউ নাম নথিভুক্ত করেননি, কিন্তু পেনশন বা অন্যান্য কাজে সরকারি দফতরে ব্য়ক্তিগত নথি জমা দিয়েছিলেন। তাঁরও মোবাইলে বার্তা এসে গিয়েছে যে তিনি টিকা পেয়ে গিয়েছেন।
এই সকল ব্যক্তিবর্গ এখন খুবই সমস্যায় পড়েছেন। একবার টিকাগ্রহণকারী হিসাবে তাঁদের নাম কোউইন অ্যাপে উঠে যাওয়ার পর, তাঁরা এখন কীভাবে সত্যিকারের করোনা টিকা নেবেন, তাই বুঝে পাচ্ছেন না। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই নিয়ে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। মধ্যপ্রদেশের সরকার অবশ্য এখনও এইসব অভিযোগ মানছে না, এমনটাই বলা হয়েছে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে।