সংক্ষিপ্ত

গত রবিবার ভারতে হয়েছে প্রথম ড্রোন হামলা

তবে আগে থেকেই সীমান্তে ছিল ড্রোনের উৎপাত

এবার নিরাপত্তা দিতে ভাবা হচ্ছে ইসরাইলি ড্রোন বিরোধী ব্যবস্থার কথা

কীভাবে কাজ করে স্ম্যাশ ২০০০ প্লাস

 

স্বাভাবিকভাবেই ভারত-পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ব়্যাডার বসানো রয়েছে। আকাশপথে পাকিস্তানের দিক থেকে ভারতে প্রবেশ করতে গেলেই ধরা পড়ে যেতে হবে। তাহলে গত রবিবার, অর্থাৎ ২৭ জুন ভোরে কীভাবে জম্মুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলা চালালো দু-দুটি ড্রোন? আসলে, সেগুলির আকার এতই ছোট, যে সেগুলি প্রচলিত ব়্যাডারে ধরা পড়ে না। আর তাই, দীর্ঘদিন ধরেই ইসরাইল-এর তৈরি বিশেষ ড্রোন-রোধী প্রযুক্তি আমদানির বিষয়ে কথা চলছিল। ভারতে পাক-জঙ্গিদের পরিচালিত প্রথম ড্রোন হামলা, এই বিষয়ে যাবতীয় দ্বিধা কাটিয়ে দিয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে এবং এই বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

জানা গিয়েছে, ভারতীয় বাহিনী ইতিমধ্যেই ইসরাইলি 'অ্যান্টি-ড্রোন স্ম্যাশ ২০০০ প্লাস' (Anti Drone SMASH 2000 Plus) নিয়ে মহড়া চালাচ্ছে। এই স্ম্যাশ ২০০০ প্লাস সিস্টেমগুলি অতি দ্রুত সংগ্রহ করাও সম্ভব বলে জানা যাচ্ছে ভারতীয় সেনার সূত্রে। তবে শুধু পাক বা চিন সীমান্ত বরাবরই নয়, সারা দেশের সমস্ত সামরিক স্থাপনাতেই এই ড্রোন-রোধী ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে, বলে শোনা যাচ্ছে।

হিন্দুস্তান টাইমস-এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী এই ইস্রায়েলি অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থা, স্ম্যাশ ২০০০ প্লাস সিস্টেমগুলি একে ৪৭ বা সমতূল্য অন্য কোনও রাইফেলে লাগানো যায়। তারপর সেই রাইফেল দিয়ে উচ্চ গতিতে উড়ন্ত ড্রোনকে সহজেই নিশানা করা যায়। এই যন্ত্র শুদু দিনের নয়, রাতের নিকষ অন্ধকারেও ড্রোন এবং অন্যান্য ছোট আকারের উড়ন্ত বস্তুকে সনাক্ত করতে পারে।

ভারতীয় নৌসেনা ইতিমধ্যে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তাছাড়া, দেশের বড় বড় সামরিক ঘাঁটিগুলিতে এই অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম স্থাপনের বিষয়ে ইতিমধ্য়েই আলোচনা করছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। তবে জম্মু হামলার পর এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেই শোনা যাচ্ছে। তবে, তাত্ক্ষণিক প্রয়োজনে সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য তিন বাহিনীর সেনা প্রধানদের পৃথকভাবে ক্ষমতা দিয়েছে কেন্দ্র। তাই মন্ত্রকের সিদ্ধান্তের আগেই ভারতীয় সেনা এবং ভারতীয় বায়ুসেনাও এই ড্রোন বিরোধী ব্যবস্থাগুলি সংগ্রহের কাজ শুরু করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

রবিবারের হামলা দেশে, পাক জঙ্গিদের পক্ষ থেকে প্রথম ড্রোন হামলা হলেও কেন্দ্রীয় সুরক্ষা সংস্থাগুলি জানিয়েছে, ২০১৯ সালের ৫ অগাস্ট, সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই পাক সীমান্ত বরাবর ড্রোনের উৎপাত শুরু হয়েছিল। সেই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে ৩০০ টিরও বেশি ড্রোন ধরা পড়েছে। আরও বেশ কয়েকটি ড্রোন নিরাপত্তা বাহিনীর নজরে এলেও সেগুলিকে ধরা যায়নি। কিন্তু, আকাশপথে উড়ে আসা এই নতুন এবং মারাত্মক ধরণের হামলা সামলাতে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীগুলি প্রযুক্তিগতভাবে এখনও তৈরি নয়। তাদের হাতে নেই উপযুক্ত সাজ-সরঞ্জাম - অনেক আগে থেকেই এই বিষয়ে সতর্ক করেছিল গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

ড্রোনের ক্ষেত্রে সমস্যা হল একে আকারে ছোট, তার উপর এগুলি ওড়ে অনেক কম উচ্চতায়। ফলে এগুলিকে ব়্যাডারে ধরা মুশকিল। এখনও পর্যন্ত ড্রোনগুলি কাছাকাছি এলে এলে নিরাপত্তা কর্মীদের সেগুলিকে চোখে দেখে গুলি করে নামানোর ম্যানুয়াল পদ্ধতির উপরই নির্ভর করতে হয়। রবিবারই শুধু নয়, তারপর সোম এবং মঙ্গলবারেও জম্মুর বিভিন্ন জায়গায় সন্দেহভাজন ড্রোন তৎপরতা দেখা গিয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা।