সংক্ষিপ্ত
নভেল করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন (Omicron) নিয়ে সত্যিই কি আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে? কী বললেন কর্নাটকের (Karnataka) ওমিক্রন আক্রান্ত ডাক্তার?
নভেল করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ওমিক্রন (Omicron), সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ইতিমধ্যেই ভারতেও এসে পড়েছে ওমিক্রন। রবিবার সকালে দিল্লিতে মিলেছে ভারতের পঞ্চম ওমিক্রন আক্রান্ত। আর এই নিয়ে গোটা ভারতেই আতঙ্ক বাড়ছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) পাওয়া এই নতুন রূপটি খুব বিপজ্জনক এবং খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে। তাহলে কি এই ভেরিয়েন্টের উপসর্গ অন্যরকমের? চলুন দেখে নেওয়া যাক, এ বিষয়ে কী বললেন খোদ ভারতের প্রথম ওমিক্রন রোগী? সত্যিই কি ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ আছে?
ভারতের প্রথম ওমিক্রন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল কর্ণাটকে (Karnataka)। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন বিদেশি, অপরজন কর্নাটকেরই একজন ৪৬ বছর বয়সী ডাক্তার। সেই আক্রান্ত চিকিৎসক এখন একদম সুস্থ আছেন। তিনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভেরিয়েন্টে আক্রান্ত হলেও, তাঁর গুরুতর কোনও সমস্যা হয়নি। টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, অসুস্থতার থেকেও কোয়ারেন্টাইনে বন্দি থাকাটা বেশি বেদনাদায়ক।
ওই চিকিত্সক জানিয়েছেন, তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথমেই নিজেকে স্ববিচ্ছিন্ন করেছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তানরাও নিজেদের কোয়ারেন্টাইন করেছিল। তিনি আরও জানিয়েছেন, ওমিক্রনের লক্ষণগুলি, এর আগের করোনাভাইরাস সংক্রমণের থেকে কিছুটা হলেও আলাদা। শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেছিলেন তিনি। হালকা জ্বরও ছিল। কিন্তু, তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছেন, শ্বাস নিতে কোনও অসুবিধা হয়নি। তাঁর অক্সিজেনের মাত্রাও ধারাবাহিকভাবে স্বাভাবিকই ছিল।
গত ২১ নভেম্বর তাঁর প্রথম জ্বর এসেছিল, সেইসঙ্গে শুরু হয়েছিল গায়ে ব্যথা। পরের দিনই তিনি আরটি-পিসিআর পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা দিয়েছিলেন। আক্রান্ত ডাক্তার জানিয়েছেন, তাঁর ঠান্ডা লাগেনি। সর্দিও ছিল না। জ্বর ছিল খুবই সামান্য। তিনি জানিয়েছেন, সর্বোচ্চ ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর উঠেছিল তাঁর। তা থেকেই তাঁর প্রথম করোনা সংক্রমণের সন্দেহ হয়েছিল।
আক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম তিনদিন বাড়িতেই ছিলেন চিকিৎসক। তারপর, পরিবারের উদ্বেগ বাড়ায়, তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, ২৫ নভেম্বর তাঁকে মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডির (Monoclonal Antibodies) ডোজ দেওয়া হয়েছিল। সেই চিকিৎসা তাঁর অনেক উপকার করেছিল। পরের দিনই তিনি করোনার উপসর্গ মুক্ত হন। কয়েকদিন আগে এক ভাইরোলজিস্ট অবশ্য বলেছিলেন, মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি বা কোভিড অ্যান্ডিবডির ককটেল চিকিত্সায় (Cocktail Treatment) ওমিক্রনের ক্ষেত্রে বিশেষ লাভ না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
ওমিক্রন আক্রান্ত চিকিৎসকের স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। আক্রান্ত চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর, বাড়িতে তাঁর স্ত্রীর শরীরেও করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। ২৬ নভেম্বর তিনিও আরটি-পিসিআর পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরও পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসে। তাঁদের বড় মেয়েও করোনা আক্রান্ত বলে সনাক্ত হয়। পরে অবশ্য সে ও তার বোন দুজনেরই আরটি-পিসিআর পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
গত ২৯ তারিখ ডাক্তারকেও হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে, বৃহস্পতিবার, তিনি ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন জানার পর, তাঁকে বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru) একটি ওমিক্রন আক্রান্তদের জন্য নির্দিষ্ট হাসপাতালে বিচ্ছিন্নতায় রাখা হয়েছে। তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়েও ওই হাসপাতালেই অন্য ওয়ার্ডে আছে। ডাক্তার জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তাঁদের যখন ওমিক্রন হাসপাতালে আনা হচ্ছিল, সেই সময় তাঁর ছোট মেয়ে ভেবেছিল তারা পিকনিকে যাচ্ছে। ৫ বছরের পুচকে মজা করেই বই-ব্যাগ গুছিয়ে চলে এসেছিল। ডাক্তারের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা ৫ জনের জিনোম সিকোয়েন্সিং রিপোর্ট এখনও আসেনি।