সংক্ষিপ্ত

প্রান্তিক গরিব জেলা পুরুলিয়া। লকডাউনের মতো বিধিনিষেধে কর্মহীন বহু মানুষ। সকলকে টিকা দেওয়া এবং কাজ দেওযার লক্ষে অভিনব কর্মসূচি। ফের জেলার জনগণের পাশে দাঁড়ালেন জেলাশাসক।

 

করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গকে রুখতে রাজ্যে লকডাউনের মতো বিধি নিষেধ চলার মধ্যেই শনিবার, পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সূচনা হল 'সহজে টিকা' এবং 'সবার জন্য ১০০' নামে দুটি অভিনব প্রকল্পের। বলরামপুর ব্লকের কুড়নি গ্রামে এদিন আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুটি প্রকল্পের সূচনা করেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার।

 

পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা ছোট্ট গ্রাম কুড়নি। একসময় এই গ্রামে মাওবাদীদের অবাধ বিচরণ ছিল। তবে এখন আর সেসব নেই। তবে, গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ১০০ দিনের কাজের উপর নির্ভরশীল। করোনার প্রথম তরঙ্গের সময়, লকডাউন চলাকালীন, এই গ্রামেই শুরু হয়েছিল 'মাটির সৃষ্টি' কর্মসূচি। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতাধীন এই কর্মসূচিতে গ্রামীন মানুষ আম গাছের চারা লাগানো, পুকুর কাটা, পোল্ট্রি শেড তৈরি করার মতো বিবিধ কাজ পেয়েছেন।

করোনার দ্বিতীয় তরঙ্গের প্রকোপে টিকাকরণ কর্মসূচির সঙ্গেই রাজ্যে চলছে একটানা লকডাউনের মতো বিধিনিষেধ। যার জেরে বন্ধ ১০০ দিনের কাজ। গরীব জেলা পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষ কাজের অভাবে একেবারে দিশাহারা। এই পরিস্থিতিতে, যাতে সকলে করোনার টিকাও পান এবং একইসঙ্গে মহামারির মধ্য়েই ১০০ দিনের কাজ করে উপার্জনও করতে পারেন - সেই কথা বিবেচনা করেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা জুড়ে 'সহজে টিকা' এবং 'সবার জন্য ১০০'-র মতো কর্মসূচি চালু করা হল।

এদিন এই দুই কর্মসূচির শুভসূচনার জন্য  মহকুমা শাসক, বলরামপুরের বিডিও এবং অন্যান্য আধিকারিক-সহ পুরো টিম নিয়ে প্রত্যন্ত কুড়নি গ্রামে গিয়েছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। তিনি জানান, 'সহজে টিকা' কর্মসূচিতে বয়স্ক এবং বিশেষভাবে সক্ষম মানুষ, যারা টিকাকেন্দ্রে গিয়ে টিকা নিতে পারছেন না, তারা বাড়ির পাশেই টিকা নিতে পারবেন। আর 'সবার জন্য ১০০' প্রকল্পে, যাদের ১০০ দিনের অ্যাক্টিভ জব কার্ড রয়েছে, তারা লকডাউনের মধ্যেই কোভিড বিধি মেনে, বাড়ির সংলগ্ন এলাকাতেই ১০০ দিনের কাজ করার সুযোগ পাবেন। তিনি আরও বলেন, পুরুলিয়ার মানুষের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নের লড়াইটা যাতে থেমে  না থাকে, সেটাই এই দুটি কর্মসূচির লক্ষ্য।

২০২০ সালে প্রথম তরঙ্গ যখন বাংলায় আছড়ে পড়ছে, ঠিক সেই সময়ই জেলাশাসক রাহুল মজুমদারকে পেয়েছিল পুরুলিয়া। 'মাটির সৃষ্টি' প্রকল্প তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত, যা পরে সারা রাজ্যে মডেল হয়েছিল। এই প্রকল্পের জোরে, এখন দরিদ্র জেলা পুরুলিয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের বহু মানুষ স্বনির্ভর হতে পেরেছেন। এবার দ্বিতীয় তরঙ্গের সময়, আবারও সেই জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কাছ থেকেই 'সহজে টিকা' এবং 'সবার জন্য ১০০'র মতো কর্মসূচি উপহার পেয়ে দারুণ খুশি জঙ্গলমহল। সবাই একযোগে জেলাশাসকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।