সংক্ষিপ্ত
গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে যে বিপুল আয়োজন করা হচ্ছে, তা রাজ্যকে এক অতি মহামারির দিকে ঠেলে দেবেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিরোধীদের দাবি সস্তা রাজনীতি করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণের দামটুকু দিতে রাজি নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন।
হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ (coronavirus cases)। রাজ্য ছাড়িয়েছে অতীতের সব রেকর্ড( Record)। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার গঙ্গাসাগর মেলার আয়োজন করেছে(state Govt organizing the Gangasagar Mela)। এমনকি বন্ধ করা হচ্ছে না বীরভূমের জয়দেবের কেন্দুলি মেলাও। ভয় বাড়ছে এখানেই। করোনা সংক্রমণের সুনামির মধ্যে দাঁড়িয়েও কোন রাজনৈতিক সমীকরণে এইসব মেলা বন্ধ করতে পারছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। প্রশ্ন উঠছে। প্রশ্ন তুলছেন বিরোধী থেকে রাজ্যের চিকিৎসকরা।
ইতিমধ্যেই উত্তরাখন্ডের হরিদ্বারে বাতিল করা হয়েছে মকর সংক্রান্তের স্নান। পূণ্যার্থীদের প্রবেশ নিষেধ করা হয়েছে হর কি পৌরিতে। কড়া করোনা বিধি জারি করে ইতিমধ্যে নাইট কার্ফুর ঘোষণা করেছে হরিদ্বার প্রশাসন। একই পদক্ষেপ নিয়েছে ওডিশা সরকার। বাতিল করা হয়েছে পোঙ্গল ও ঘাটে ঘাটে সংক্রান্তির স্নান-জমায়েতের ওপর আনা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এই রাজ্যগুলির উদাহরণ তুলে ধরে রাজ্যের চিকিৎসকদের দাবি দেশের অন্যান্য রাজ্য পারলেও, এই রাস্তায় কেন হাঁটতে পারল না পশ্চিমবঙ্গ।
গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে যে বিপুল আয়োজন করা হচ্ছে, তা রাজ্যকে এক অতি মহামারির দিকে ঠেলে দেবেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিরোধীদের দাবি সস্তা রাজনীতি করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণের দামটুকু দিতে রাজি নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির দাবি যখন সব সীমা অতিক্রম করেছে করোনা সংক্রমণ, যখন সবরকম অনুমানের বাইরে গিয়ে করোনা ছড়াচ্ছে, তখন অত্যন্ত অবিবেচকের মত মেলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই সরকার তো চাইবেই খেলা হোক, মেলা হোক। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের দাবি পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাইছে তাই মেলা হচ্ছে। গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রাজনীতি হতে পারে, কিন্তু মানুষের স্বাস্থরক্ষার কথা ভাবল না রাজ্য।
তবে চিকিৎসকদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন এই পরিস্থিতিতে কি গঙ্গাসাগর মেলা সত্যিই খুব প্রয়োজন ছিল। চিকিৎসক কুণাল সরকার বলছেন রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ সফল হবে যদি গঙ্গাসাগর মেলা করা যায়। কিন্তু যে অঙ্কটা মেলাতে কালঘাম ছুটে যাবে, তা হল রাবার ব্যান্ডের মত ভোগান্তির পিরিয়ডটা টেনে লম্বা করে দেওয়া হল ইচ্ছাকৃত। চিকিৎসক শিবব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন আগে জীবন, তারপরে সমাগম-মেলা সবকিছু। আগে তো মানুষকে প্রাণে বাঁচতে হবে। এই সিদ্ধান্তের বিচার আজ হবে না। আজ থেকে ৫০-১০০ বছর পরে এর বিচার হবে। মহামারী কাকে বলে সেটা বোঝা যাবে।